যখন আমি ঘুরতে যাব রাকি বিচের সেই স্যালাভিজ ইয়ার্ডে, তখন তুমিও আমার সফরসঙ্গী হতে পারো। তিন বন্ধু—কিশোর, মুসা, রবিনের সঙ্গে হেডকোয়ার্টারে বসে আড্ডা, সৈকতে সাঁতার কাটতে যাওয়া, আমাজানের মতো দুর্গম জঙ্গল থেকে পশু শিকার কিংবা দুর্ভেদ্য রহস্য সমাধান—সবই হবে একসঙ্গে।
নয়তো চলো ২২১বি, বেকার স্ট্রিট, লন্ডন। এই কাঠের বাড়ির অগোছালো লিভিংরুম, ফাইল কেবিনেটে ধুলা পড়া অজস্র ফাইলের ছড়াছড়ি, রিডিং টেবিলের ওপর আধখাওয়া চুরুট অথবা কাঠের দেয়ালে অসংখ্য বুলেটের ছিদ্র দেখে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে, এটা শার্লক হোমসের রহস্যময় বাড়ি।
অথবা চলো হ্যারি পটারের সেই জাদুর স্কুল হগওয়ার্টসে। তবে তার আগে জাদুর কাঠি কিনতে যাব ডায়াগন অ্যালিতে। যেটাতে কাঠিতে লুমাস বলে ঘোরাতেই সরু আলোর রশ্মি বের হয়, হ্যারি-জাদুর ঝাড়ু নিম্বাস ২০০০ ধার করে কুইডিচ খেলা তো আছেই।
টিনটিনের সেই মার্লিনস্পাইক হালই-বা বাদ যাবে কেন? টিনটিন আর কুকুর কুট্টুসের সঙ্গে আমরাও ভ্রমণ করব সোভিয়েত, মিসর, চীন কিংবা চাঁদেও। আর দুই যমজ ভাই রনসন-জনসন, বিজ্ঞানী ক্যালকুলাস আর হ্যাডকের মজার কাণ্ড-কাহিনি তো আছেই।
নয়তো চলো, ঘুরে আসি বিভূতিভূষণের আরণ্যকে। তারপর যাব অপু ও দুর্গার বাড়িতে। সেখান থেকে না হয় যাব শংকরের সঙ্গে চাঁদের পাহাড়খ্যাত মাউন্ট আলভারেজে।
চলো সেই উৎসব মুখর শহরে, যেখানে ওসি ভার্গিস খুঁজতে ব্যস্ত আকাশলাল নামের দুর্ধর্ষ বিপ্লবীকে অথবা অর্জুনের জলপাইগুড়িতে। সেখানে মাধবীলতা আর অনিমেষ দম্পতিরও দেখা পাবে। তারপর ক্লান্ত হয়ে গেলে যাব টেনিদার কাছে। নয়তো যাব প্রফেসর শঙ্কুর গিরিডির সেই নির্জন বাড়িতে।
হ্যারিসন রোডের ব্যোমকেশ বক্সী, ফেলুদা, জেমস বন্ড, মাসুদ রানা তো বাকিই রয়ে গেল। তবে আজ আর নয়, আমরা আবারও আমাদের ‘হাজারো বই দিয়ে বানানো আশ্চর্য যান’–এ করে ঘুরতে বের হব।
তুমি যাবে আমার সঙ্গে এই আবেগমাখা গল্পের মহাকাশে। যেখানে লাখ লাখ বইয়ের নক্ষত্র, গ্রহ উপগ্রহ, ধূমকেতু ঘোরা শেষে তুমি জানতে পারবে বিশ্বে তোমার না জানা কত কিছু ছিল এবং এখনো কত কিছু বাকি রয়েছে।
লেখক: শিক্ষার্থী, হেফজ বিভাগ, মাদ্রাসা ফাতিমা তুয যাহরা (রা.), ঢাকা