আমি তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। আর কয়েক দিন পরই পরীক্ষা। ধুমসে প্রস্তুতি চলছে। ভালো করে রচনা শিখছি, বিশেষ করে গরুর রচনা। ভালোমতো প্রস্তুতি নিয়ে গেলাম পরীক্ষা দিতে। সবই মোটামুটি সহজ ছিল, কিন্তু গরুর রচনার বদলে এল কিনা বাবাকে নিয়ে রচনা। আমার তো মাথায় হাত। আগেই বলেছি, রচনা-টচনা আমি পারি না। বাবাকে নিয়ে কোনো রচনা তো দূরে থাক, কোনো শব্দও বোধ হয় পড়া হয়নি। হঠাৎ একটা বুদ্ধি এল (যদিও এখন বুঝি, কাজটা খুবই হাস্যকর ছিল)। করলাম কী, গরু রচনার সঙ্গে মিলিয়ে বাবা রচনা লিখলাম। আমার বাবা একজন মানুষ। তাঁর দুটি হাত ও দুটি পা আছে। তাঁর লেজ নেই। তাঁর দুটি চোখ, দুটি কান, একটি মুখ ও একটি নাক আছে। তবে তাঁর কোনো শিং নেই। তিনি ফ্ল্যাটে থাকেন, গোয়ালঘরে থাকেন না। তিনি ঘাস খান না, তবে শাক খান। বাবা লেজ নেড়ে মাছি তাড়ান না, গামছা নেড়ে মশা তাড়ান। তিনি দোকান থেকে দুধ কিনে আনেন। বাবা যদি এই রচনা দেখতেন, তাহলে আমাকে নিশ্চয়ই আর আস্ত রাখতেন না।
লেখক: শিক্ষার্থী, ষষ্ঠ শ্রেণি, রামু ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ, কক্সবাজার