ব্যাঙ ও শেয়াল
আষাঢ় মাসের দুপুরবেলা নামল বাদলধারা
ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর শব্দে জেগে উঠল ব্যাঙের পাড়া
ঘুম ভেঙে যায়, বিগড়ে মাথা ছুটল শেয়াল ধেড়ে
বলল, ‘এসব থামা, নইলে ব্যাঙ তাড়াব মেরে।
বাদলা জলে শক্তি পেয়ে যতই গলা খুলুক
দিনদুপুরে গলাবাজি, দেশ কি মগের মুলুক?
রাতে ডাকিস, আমিই নাহয় মাইক দেব কিনে
আর কখনো দল বেঁধে গোল করবি না তো দিনে!
রাত্রি জেগে কর্ম করি, ঘুমোই দিনের বেলা
সামান্য সে সুখে তোদের এমন অবহেলা!
আমার গলায় শক্তি বেশি তোদের গলার চেয়ে
তাই বলে কি বেড়াই দিনে “হুক্কা হুয়া” গেয়ে?
দেখেও তো বেশ শিখতে পারিস, গোঁয়ার্তুমি ভুলে
দিনের বেলা চিল্লাবি তো আছাড় দেব তুলে!’
একে একে ব্যাঙ সকলে ডোবায় হলো জড়ো
বলল, ‘শেয়াল, তুই যা না, তোর বড়াইটা খুব বড়
রাতের বেলা চাষির ঘরের মুরগি করিস চুরি
দিনে ঘুমাস আড়াল হয়ে, এই তো বাহাদুরি!
“হুক্কা হুয়া” ডাকবি দিনে, আছে বুকের পাটা?
শুনলে লোকে লাঠির গুঁতায় ভাঙবে গিঁটেগাটা।
বনবাদাড়ে, ডোবা, নালায়, জলাবিলের ধারে
বর্ষা আসে ব্যাঙ সকলের ডাকার অধিকারে
তাতে যদি মুরগি চোরের ব্যাঘাত ঘটে ঘুমে
ঢোল বাজিয়ে বাড়তি নাচি টাকঢুমাঢুমঢুমে!
আর শুনে রাখ একটা কথা, বাদলা হাওয়ার বাড়ে
ব্যাঙের গলা কামানগোলা, মাইক লাগে না রে!
তা–ই যদি না হবে, তবে ঘুম টুটে ক্যান চোরের?
ব্যাঙের ডাকে ইঙ্গিত আছে শেয়ালখেদা শোরের!’