চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে
সবাই বলে ‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে’
কথাটা ভুল—টের পেয়েছি হাড়ে হাড়ে।
এর পেছনে রয়েছে এক বিরাট গল্প—
জানো-ই তো বুদ্ধিটা যে আমার অল্প
এ জন্য হই পদে পদে অপদস্থ
তাই ভেবেছি—জ্ঞানী হব জবরদস্ত।
আর যেহেতু মন্ত্রটাও আছে জানা
যে যা বলুক, শুনব না আর কারও মানা।
‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে’ সত্যি ধরে
প্ল্যানটা করি অনেক ভেবে, সময় করে।
চোর এসে ফের পালিয়ে যাবে কখন, কবে
সেই আশাতে থাকলে বসে আমার হবে!
তাই তো আমি খুঁজতে থাকি চোরের ডেরা
পেতেই হবে চোর পাকা আর কাজে সেরা—
চুরি করে পালিয়ে যাবে খুব গোপনে
কারও যেন সন্দেহ না আসে মনে।
এমন ঘাগু চোর পাওয়া তো আমি জানি
খুব ঝামেলার, ব্যাপারটা নয় চাট্টিখানি।
যাহোক শেষে চোরকে পেলাম অনেক খুঁজে
শর্তেও তার রাজি হলাম মুখটা বুজে—
নগদ টাকা দিতে হবে ঠিক দুহাজার
চুরি করে যা যা পাবে—পুরোটা তার।
অনেক দিনের জমানো দুহাজার টাকা
ছিল মাটির ব্যাংকে অনেক যত্নে রাখা
চোখের জলে তুলে দিলাম চোরের হাতে
ভবিষ্যতে বুদ্ধি হবে—এই আশাতে।
আলোচনায় এল কিছু দিন ও তারিখ
পঞ্জিকাটা ঘেঁটে শেষে হলো তা ঠিক।
ছিটকিনিটা খুলে রাখি চুরির রাতে
চোরের কোনো অসুবিধা না হয় যাতে।
ঝুঁকি নিয়ে ছিঁড়ে তারের সংযোগটাও
বন্ধ করে রাখি সি সি ক্যামেরাও...
ভালোয় ভালোয় চুরি হলো যথাসময়
আর তাতেই কেটে গেল ভাবনা ও ভয়।
ঘুম থেকে খুব ভোরে জাগি তাড়াতাড়ি
ব্যাপার দেখে আমার তো ভাই মাথায় বাড়ি!
পাই না খুঁজে ট্যাব ম্যানিবাগ মোবাইলও
রাতের বেলা টেবিলেই রাখা ছিল।
‘জিনিসগুলো আমার, তা তো জানত চোরে
নিয়ে গেল ওসব তবু কেমন করে!’
দুঃখ রাগে বিস্মৃত হই সতর্কতা
বিলাপ করে বলে ফেলি এসব কথা—
শুনেই বাবা আমার কলার চেপে ধরে
ভীষণ রকম রেগে বলেন চেঁচিয়ে জোরে—
‘এর মানে কী! হতচ্ছাড়া পাজি ইতর
আগে থেকেই চোরটা ছিল জানা কি তোর?’
একের পর এক প্রশ্ন ধমক আর জেরাতে
বলব কী আর! ধরা খেলাম সাথে সাথে।
অনেক খেলাম বকাঝকা সাথে আরও
পড়ল পিঠে বাড়তি কিছু—মানে মারও।
চালাক হওয়ার এমনতর সোজা পথে
কান মলেছি আর যাব না ভবিষ্যতে।