আষাঢ়ে গল্প

অলংকরণ: রাকিব

আষাঢ় মাসে গল্প শোনো বাড়িয়ে দিয়ে কান?
খুব সিরিয়াস গল্প এটা, কেউ ভেবো না ফান।
শান্ত হয়ে সবাই বসো, নড়বে না একচুল
দাদার কালের গল্প খাঁটি, একটুও নয় গুল।

গল্প শুনে হাসবে না কেউ করবে না কেউ রাগ
আমার দাদার দাদার দাদার এক যে ছিল বাঘ
বাঘের ছিল বিরাট বিরাট বিরাট বড় লেজ
লেজ দিয়ে কান চুলকে দাদা দেখাত খুব তেজ
বাঘটা শুধু পেটের পীড়ায় ভুগত বারো মাস
দাদা খেত আস্ত গরু, বাঘটা খেত ঘাস।
খিদের জ্বালায় দাদার যখন পাকস্থলী হিম
পটোলভাজির সঙ্গে খেত ডাইনোসরের ডিম।

দাদার ছিল গাধার খামার, ভাবছ অসম্ভব?
দশটা ছিল চাকরবাকর রোবট তারা সব।
মশা মারার কামান ছিল মাছি মারার ট্যাংক
টাকা রাখার জন্য ছিল ব্যক্তিগত ব্যাংক।
দাদার দেহের ওজন ছিল মাত্র আড়াই টন
চারপাশে তার সৈন্য সেপাই ঘুরত যে বনবন।
দাদা যখন খেলত ক্রিকেট তুলত ব্যাটে ঝড়
প্রতি ম্যাচেই সেঞ্চুরি তার, এক শ উনিশ গড়।

দাদার ছিল তিনটা রকেট চারটা বিমান মোট
বাড়ির পাশেই ছিল দাদার বিরাট এয়ারপোর্ট
এয়ারপোর্টে থাকত ট্রলি গরুর গাড়ি ভ্যান
নাসার যত বিজ্ঞানীরা ছিল দাদার ফ্যান
গবেষণার প্রতি ছিল দাদার ভীষণ ঝোঁক
কমোড আবিষ্কারক দাদা, জানে দেশের লোক।
পান্তাভাতে ইলিশ খাওয়ার আইডিয়াটা তার
ইঁদুর ধরার কলটা তারই নিজের আবিষ্কার।

দাদার ছিল ল্যাবরেটরি, ব্যস্ত দাদার ব্রেন
রোজ সেখানে কাজ শিখত দশটা এলিয়ন।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে দাদার ছিল হাত
মঙ্গলে আর চাঁদে যাওয়া তার কাছে দুধভাত।
গল্প শুনে হাসছ নাকি? ভাবছ এসব গুল?
তর্ক করা আহাম্মকি, বিশ্বাসটাই মূল।
অল্প কথায় গল্প শুনে সন্দেহ হয় কার?
তিনি ছিলেন মস্ত কবি তুখোড় ছড়াকার।
অক্সফোর্ডে পাঠ্য আজও দাদার লেখা বই
গল্পে গরু উঠলে গাছে কোথায় পাব মই।

দাদার কালের গল্পগুলোই আজকে ইতিহাস
ঠান্ডা মাথায় বুঝতে হবে এইটা আষাঢ় মাস।