দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের শিশু-কিশোরদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষটির নাম মুহম্মদ জাফর ইকবাল। শিশু-কিশোরদের অনেকেই তাঁর বই ছাড়া নিজেদের কৈশোরের কথা কল্পনাও করতে পারে না। প্রিয় এই মানুষের শৈশব কেটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। বগুড়া জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন থেকে পিএইচডি করে বিজ্ঞানী হিসেবে নিযুক্ত হন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চে। তারপর দেশে ফিরে এসে যোগ দেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর লেখা গল্প দিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ইউরো চাইল্ড লিটারারি অ্যাওয়ার্ডসহ অনেক পুরস্কার। অনেক ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন কিশোর আলোর সাক্ষাৎকার দলের। সেখানে তিনি কথা বলেছেন নানা বিষয়ে। সেই দলে ছিল উদয়ন উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাহাতাব রশীদ, ভিকারুননিসা নূন স্কুলের আনজিলা জেরিন আনজুম, ওয়াইডব্লিউসিএ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তাবাসসুম খান ও বিভা মোশাররফ এবং বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজের আসাদুজ্জামান।
আপনার কৈশোর কেমন ছিল? এখনকার কোন কিশোরের কৈশোরের সঙ্গে সে সময়কার কী পার্থক্য খুঁজে পান?
এটা কোন কিশোরদের সঙ্গে তুলনা করছি তার ওপর নির্ভর করে। ধরা যাক, ঢাকা শহরের কোনো কিশোরের সঙ্গে তুলনা করলাম, তাহলে অবশ্যই অনেক বড় পার্থক্য দেখি। কিন্তু গ্রামের কোনো কিশোরের সঙ্গে যদি তুলনা করি, যে সারা গ্রাম হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়ায়, তাহলে সে রকম পার্থক্য খুঁজে পাই না। আমার বাবা ছিলেন পুলিশ। যার কারণে বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। যেমন রাঙামাটি ও বান্দরবানে যখন ছিলাম, আমার বন্ধুবান্ধব আদিবাসী ছিল। তাদের সঙ্গে খেলেছি, ঘুরে বেড়িয়েছি। সুতরাং আমি বলতে পারি তোমাদের কৈশোরের তুলনায় আমার কৈশোর অনেকাংশে ভিন্ন ছিল, মজার ছিল।
আপনার ইরা নামের একটি হরিণ ছিল। এখনো কি তার কথা মনে পড়ে?
হ্যাঁ, মনে পড়ে। সবাই বলে যে হরিণ নাকি পোষ মানে না। কিন্তু ইরা পোষ মেনেছিল। একটা হরিণ ঘরের মধ্যে হাঁটছে, ব্যাপারটা অনেক সুইট।
কখনো স্কুল পালিয়েছেন?
না, পালাইনি কখনো। আসলে প্রয়োজন হয়নি।
পড়াশোনা করতে ভালো লাগত?
আসলে পড়াশোনা করতে কারোরই ভালো লাগে না। আমারও লাগত না। কিন্তু আমি যেহেতু পড়াশোনায় ভালো ছিলাম, তাই আমার কখনো পড়াশোনার চাপ নিতে হয়নি। স্কুলে যেতাম, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতাম...এই তো।
আপনাকে নিয়ে আপনার মা-বাবার স্বপ্ন কী ছিল? সেই স্বপ্ন কি পূরণ করতে পেরেছেন?
আমাদের মা-বাবা আমাদের এতটাই স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, যা কোনো মা-বাবাই হয়তো তাঁদের সন্তানকে দেন না। তাঁরা আমাকে স্বপ্ন দেখার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। কখনোই তাঁদের আলাদা কোনো স্বপ্ন ছিল না আমাকে নিয়ে, আমি অন্তত তা-ই মনে করি।
আপনি যখন ছোট ছিলেন তখন আপনার জীবনের লক্ষ্য কী ছিল?
আসলে ছোটবেলা থেকে মানুষের জীবনের লক্ষ্য পাল্টাতে থাকে। আমার লক্ষ্য ছিল কখনো ফায়ার ব্রিগেডের সদস্য হওয়া, জলদস্যু হওয়া, ডাক্তার হওয়া, স্থপতি হওয়া। কিন্তু পদার্থবিজ্ঞান বিষয়টা ভালো লাগত। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান বলেছিলেন যে এ বিষয়ে পড়লে চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নাই। কিন্তু নিশ্চয়তা না থাকা সত্ত্বেও যেহেতু আমাদের এসব বিষয়ে কোনো চাপ ছিল না, তাই ঠিক করলাম এ বিষয়েই পড়াশোনা করব।
চশমা পরে থাকলেও আপনি কেন বেশির ভাগ সময় চশমার ওপর দিয়ে তাকিয়ে থাকেন?
(একটু হেসে) খুবই কঠিন প্রশ্ন। আসলে আমার পড়ার জন্য চশমা লাগে। যখন কিছু পড়ি না তখন আসলে চশমার প্রয়োজন হয় না। আমার চশমাটার তিনটা স্তর। একটা বই পড়ার জন্য, একটা কম্পিউটার ব্যবহারের জন্য আর একটা দূরের বস্তু দেখার জন্য। আমি দূরের বস্তু চশমায় যা দেখি, খালি চোখেও তা দেখি। তাই দূরের বস্তু দেখার জন্য চশমার প্রয়োজন হয় না।
আপনি এত চমত্কার লেখা কীভাবে লেখেন? লেখার সময় কোন বিষয়টি মাথায় রাখেন?
আমি ছোট থেকেই অনেক গল্পের বই পড়তাম। খেয়াল করলে দেখবে আমার সব লেখায় গল্প থাকে। সব সময় কোনো না কোনো গল্প বানাই। অনেকে বলেন যে বিশ্বে যা গল্প আছে সব নাকি বলা হয়ে গেছে। গল্পের উপস্থাপনটাই নাকি এখন আসল। এ কথাটায় আমি বিশ্বাস করি না। আমি যখনই বসে থাকি তখন মনে মনে বিভিন্ন গল্প বানাতে থাকি। এটাই আমার কাজ। গল্প লেখা আর এর উপস্থাপনের ব্যাপারটা কিন্তু ভিন্ন। আমি সব সময় সহজ শব্দ, সহজ ভাষা ব্যবহারের চেষ্টা করি। আমি সব সময় পরিশ্রম করি গল্পটাকে কীভাবে আরও মজার করা যায়, সোজা করা যায়। আরও একটা ব্যাপার হচ্ছে, মানুষের জানার আগ্রহ থাকে। সুতরাং গল্পের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে যেন সেই জানার আগ্রহটা সৃষ্টি হয়। আমি রাজনৈতিক কলাম লেখার সময় এমনভাবে লিখি, যেন তারা পড়তে বাধ্য হয়। অর্থাত্ পুরো গল্পটা পড়ার আগ্রহটা যেন থাকে।
প্রায়ই শোনা যায় পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপে বা পরীক্ষায় ব্যর্থতার কারণে কোনো কোনো শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করছে বা আত্মহত্যার চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশে আপনি কী বলবেন?
পড়াশোনার অতিরিক্ত চাপ বা পরীক্ষার ব্যর্থতাই মানুষের সম্পূর্ণ জীবন নয়। তোমরা যারা এ রকম চিন্তাভাবনা করছ, তারা এসব বিষয় উপেক্ষা করে জীবনপথে মনের জোর ও উত্সাহ নিয়ে এগিয়ে যাও। দেখবে, এমন এক দিন আসবে, যখন তোমার এই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে হাসি পাবে।
কারও যদি মনে হয় সে সব পেয়ে গেছে কিংবা জীবনে সে আর কিছুই পাবে না এবং এ জন্য যদি আত্মহত্যা করতে চায়, তাহলে আমরা তাকে কেন বাধা দেব? জীবন তো তার, সিদ্ধান্তও তার।
আত্মহত্যা কখনোই তার নিজস্ব ব্যাপার না। কারণ, তার মা-বাবা, ভাইবোন, বন্ধুবান্ধব আছে। তাদের জন্য হলেও তার আত্মহত্যা করার কথা চিন্তা করা উচিত নয়। আর মানুষ আত্মহত্যার জন্য তৈরি হয়নি। তার পরিবারের প্রতি, সমাজের প্রতি, পরবর্তীকালে দেশের প্রতি কর্তব্য রয়েছে। এগুলো তাকে পালন করতে হবে। আর আমার যা মনে হয়, আত্মহত্যা করার কথা চিন্তা করাটাও স্বাভাবিক ব্যাপার না। এ ক্ষেত্রে নিশ্চয়ই কোনো মানসিক সমস্যা আছে।
যখন মন খারাপ থাকে তখন মন ভালো করার জন্য কী করেন?
এ ব্যাপারে আমার স্ত্রীর একটি থিওরি আছে। তা হলো, ‘খাওয়া’, যেকোনো ধরনের সমস্যা হলে নাকি খাওয়াদাওয়া করলে তার সমাধান সম্ভব। যদিও আমার খুব একটা মন খারাপ হয় না। জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটাই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা করে। কখনো কোনো গল্প বা কোনো চরিত্র নিয়ে। মন খারাপ থাকলেও চিন্তাই করি।
প্রতিকূল অবস্থায় সবার আগে কার কথা মাথায় আসে? এ পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেন?
প্রতিকূল অবস্থায় সব সময়ই মায়ের কথা মনে আসে। মা যদি না থাকতেন তাহলে আমাদের পরিবার টিকত কি না সন্দেহ। খারাপ পরিস্থিতিতে চিন্তা করি, মা কীভাবে এ পরিস্থিতি সামাল দিতেন। সেটা চিন্তা করে তাঁকে অনুসরণ করার চেষ্টা করি।
মানুষের কোন গুণটি আপনাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে?
উত্সাহ। পৃথিবীতে দুই ধরনের মানুষ আছে। একধরনের মানুষ, যাদের সবকিছুতেই উত্সাহ থাকে এবং আরেক ধরনের মানুষ, যাদের কোনো কিছুতেই উত্সাহ নেই। উত্সাহী মানুষ অনেক সমস্যার সম্মুখীন হলেও দিনশেষে তারাই সব কাজ করতে সফল হয়।
নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়নে আপনিও যুক্ত ছিলেন। অনেকে বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রদের জন্য সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতি অনেক কঠিন হয়ে গেছে। এ নিয়ে আপনার বক্তব্য কী?
এ ধারণা ভুল। আমি মনে করি সম্পূর্ণ বই পড়লেই সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির প্রতিটি প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়া সম্ভব, তা শহরাঞ্চলের ছাত্রদের জন্যই হোক বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্রদের জন্যই হোক।
ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা গল্পে আপনি ব্ল্যাকহোল বানানোর যে রেসিপি দিয়েছেন, সেটা কি আসলেই কাজ করবে?
এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের মাত্র চার ভাগের রহস্য বিজ্ঞানীরা উদ্ধার করতে পেরেছেন। আর আমার ব্ল্যাকহোল বানানোর যে রেসিপি তা বাকি ৯৬ ভাগের বিভিন্ন কাল্পনিক জিনিস দিয়ে তৈরি, যা সম্পর্কে কেউ জানে না। তাই তা আসলেই কাজ করবে কি না কেউ জানে না।
আমি বিজ্ঞানী হতে চাই কিন্তু অঙ্ক দুই চোখে দেখতে পারি না। অঙ্কে পণ্ডিত না হলে কি বিজ্ঞানী হওয়া যাবে না?
অঙ্কে পণ্ডিত না হলেও বিজ্ঞানী হওয়া সম্ভব। অঙ্কের সমাধান করতে হলে পণ্ডিত হওয়ার চেয়ে উত্সাহ থাকা বেশি দরকার। তা ছাড়া বর্তমানে বিজ্ঞানের অনেক বিষয় রয়েছে, যেমন—সাইকোলজি, বায়োলজি ইত্যাদিতে অঙ্কে পণ্ডিত না হয়েও গবেষণা করে বিজ্ঞানী হওয়া সম্ভব।
আপনি নিজে একজন বিজ্ঞানী। বাংলাদেশের যেসব শিশু-কিশোর ভবিষ্যতে বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখে, তাদের জন্য কী বলবেন?
একজন বিজ্ঞানী সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে হঠাত্ করে যখন সমাধান খুঁজে পান, তখন যে আনন্দের অনুভূতি হয়, তা অতুলনীয়। কেউ যদি সত্যিই বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন দেখে, তবে তাকে অবশ্যই আনন্দের সঙ্গে এ পথে এগোতে হবে।
আমাদের নতুন পাঠ্যবইগুলোর পৃষ্ঠাসংখ্যা কমাতে গিয়ে বেশ কিছু বিষয় বাদ দেওয়া হয়েছে, বিষয়বস্তু সম্পর্কে বর্ণনাও কমিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে বিষয়বস্তু পুরোপুরি বোঝার জন্য পুরোনো বইয়ের সাহায্য নিতে হচ্ছে, ছুটতে হচ্ছে প্রাইভেট পড়তে। বইগুলো আরেকটু যত্ন করে তৈরি করলে ভালো হতো না?
বিষয়বস্তু পুরোপুরি বোঝার জন্য পুরোনো বইয়ের সাহায্য নিতে হচ্ছে এ বিষয়ের সঙ্গে আমি একমত নই। আর এটা যদি কেউ প্রাইভেট পড়ার অজুহাত হিসেবে দেয়, সেটা ভারি অন্যায়। তবে এটা অবশ্যই ঠিক যে আমাদের পাঠ্যবইগুলো আরও উন্নত করা প্রয়োজন। আমি এনসিটিবিকে (জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড) বলেছি যে তারা যদি পাঠ্যবইগুলো সুন্দর করে না লেখে আমি এ দেশের তরুণ প্রজন্মকে দিয়ে সবগুলো পাঠ্যবই লিখিয়ে বাজারে ছেড়ে দেব। তারা উল্টো আমাকে বলেছে, হ্যাঁ হ্যাঁ, আপনি প্লিজ এটা করেন। ভালো শিক্ষাব্যবস্থার জন্য তিনটি জিনিস দরকার—ভালো বই, ভালো শিক্ষক ও ভালো পরীক্ষাপদ্ধতি। দুর্ভাগ্যক্রমে কোনোটাই আমাদের পুরোপুরি নেই।
মা-বাবা আমাকে জোর করে ডাক্তারি পড়াতে চান, কিন্তু আমি ডাক্তার হতে চাই না। এদিকে আমি কারাতেও শিখি। জাতীয় ও আন্তস্কুল পর্যায়ে দুবার রৌপ্যপদক পেয়েছি। আমার স্বপ্ন একদিন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক অর্জন করব। কিন্তু মা-বাবা আমাকে কারাতে শেখা বন্ধ করে দিচ্ছেন। তাঁদের ধারণা, এতে পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে এবং এটি মেয়েদের জন্য উপযুক্ত নয়। এখন আমি কী করব?
এটি আসলেই অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। প্রথমত, আমি ও আমার স্ত্রী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের কারাতে শেখা চালু করেছিলাম। একটা মেয়েকে যখন টিজ করা হয় তখন মেয়েটা অপমানিত বোধ করে, কিন্তু কারাতে শিখলে মেয়েটার মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়। ব্যাপারটা এমন না যে কারাতে শিখে মেয়েরা ইভ টিজারদের পেটাবে। তবে মেয়েটা তখন জানবে যে সে চাইলেই ইভ টিজারদের শায়েস্তা করতে পারবে, তখন আর সে অপমানিত বোধ করবে না। আমি একটা মেয়েকে চিনতাম, সেও পড়াশোনার বাইরে অনেক কিছু করত, পরিবার হঠাত্ তার পড়াশোনা বন্ধ করে দিল। মেয়েটা তার এক বান্ধবীর মাধ্যমে চিঠি লিখে আমাকে ঘটনাটা জানায়। আমি তখন মেয়েটাকে উপদেশ দিলাম যে তুমি মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করো, আর এত ভালো রেজাল্ট করো যাতে তোমার মা-বাবার মনে হয় আমার মেয়ে পড়াশোনায় এত ভালো—আমি কেন তাকে কোনো কিছু করতে বাধা দেব? এবং আসলেই তা-ই হয়েছিল, মেয়েটা এখন ডিগ্রি শেষ করে গ্র্যাজুয়েট করবে, সে আমাকে কিছুদিন আগে বিরাট এক ই-মেইল পাঠিয়েছে!
আমি তাই তোমাকে বলব, আপাতত তুমি দাঁতে দাঁত চেপে সব সহ্য করো, আর মন দিয়ে পড়ালেখা করে ভালো রেজাল্ট করো। তুমি যখন এইচএসসি পাস করবে তারপর তোমার মতামতের গুরুত্বটা বেশি থাকবে, তখন নিশ্চয়ই তুমি তোমার সব স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।
যেসব মা-বাবা নিজেদের স্বপ্ন তাঁদের সন্তানদের ওপর একরকম চাপিয়ে দেন, তাঁদের উদ্দেশে আপনি কী বলবেন?
প্রত্যেক মানুষেরই একান্ত কিছু স্বপ্ন থাকে। তাকে তার স্বপ্ন অনুযায়ী নিজের জীবন গড়তে দেওয়া উচিত। এতে করে যদি তার ক্ষতিও হয়, তবু তার এতটা আফসোস থাকবে না, যতটা থাকবে তার ওপর একরকম চাপিয়ে দেওয়া কোনো কাজ করতে। তাই মা-বাবাদের এটা কখনোই করা উচিত নয়।
একজন বাবা হিসেবে ছেলেমেয়েদের চাহিদা কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন বলে মনে হয়? সব বাবার জন্য যদি কিছু বলার থাকে...
আমি আমার ছেলেমেয়েদের নিয়ে অনেক বড় একটা ঝুঁকি নিয়েছিলাম। দেশের জন্য আমার প্রাণ আনচান করত। তাই বাচ্চাদের সঙ্গে নিয়ে একসময় দেশে ফিরে এলাম। কিন্তু তারা জন্মেছে, বড় হয়েছে আমেরিকায়, তাই আমার মতো তাদের তো আর এ দেশের জন্য প্রাণ আনচান করে না। তার ওপর ১৯৯৫ সালে এ দেশের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। সিলেটে তখন কোনো ভালো স্কুল ছিল না। তাদের এ দেশে অভ্যস্ত হতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল আর সময় লেগেছিল। তবে আমি প্রতি গরমের ছুটিতে তাদের নিয়ে আমেরিকায় যেতাম। একসময় তারাই বলতে শুরু করল, চলো বাংলাদেশে ফিরে যাই।
আমার ধারণা, ছোটবেলায় তাদের যে কষ্ট দিয়েছি, তার জন্য তারা এখন আমাকে মাফ করে দিয়েছে।
সব বাবাদের বলতে চাই, আপনার সন্তানদের বিশ্বাস করেন, তাদের স্বাধীনতা দেন। তারা আপনাদের নিরাশ করবে না।
টুনটুনি ও ছোটাচ্চুর মার্চ সংখ্যা পড়ে আমার এক বন্ধুর মন ভারি খারাপ হয়েছে। সে মৌটুসির মতো নাচ-গান, অভিনয়, আবৃত্তি অনেক কিছুতে অংশ নিয়ে পুরস্কার পায়। কিন্তু সে মোটেও অহংকারী নয়। আপনি আপনার অনেক বইয়েই যারা বেশি পুরস্কার পায়, তাদের তেমন ভালো চরিত্রে রাখেন না। কোনো প্রতিযোগিতায় গেলেও যারা পুরস্কার পায়নি, তাদের উত্সাহ দিতেই বেশি ব্যস্ত থাকেন। যারা পুরস্কার পেয়েছে, তারাও তো আপনার ভক্ত। এ কথাটা কি মাথায় রাখা উচিত নয়?
তোমার বন্ধুর অভিযোগটি হলো যারা এই বয়সে অনেক সফল, অনেক পুরস্কার পায়, তাদের আমার বইতে খারাপভাবে দেখানো হয়েছে। অভিযোগটি খানিকটা সত্যি, তবে সেটি শুধু ওই নির্দিষ্ট চরিত্রের জন্য—যারা পুরস্কার পায়নি তাদের মন খারাপ থাকে তাই আমি তাদের উত্সাহ দিই। তা ছাড়া পুরস্কার তো দেওয়া হয় উত্সাহ দেওয়ার জন্যই।
কিশোরদের কেমন হওয়া উচিত—ভদ্র-শান্ত, না দুষ্ট-চটপটে?
আসলে শান্ত বা চটপটে হওয়ার কোনো আদর্শ নিয়ম নেই। আমি অনেক কিশোর-কিশোরীকে দেখেছি যারা খুবই শান্ত, আবার অনেককে দেখেছি যারা ভীষণ চটপটে—দুটোই তাদের চমত্কার মানিয়ে গেছে।
আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া কী?
তোমাদের ভালোবাসা।
আপনি যখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগ করতে গিয়েছিলেন, তখন শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার কারণে আপনাকে ফিরে আসতে হয়েছে। আপনার মতো এ রকম ভালোবাসা পেতে আমাদের কী করতে হবে?
আসলে আমি প্রায়ই চিন্তা করি, আমি কী এমন করেছি যে সবাই এত ভালোবাসে? তখন আমি নিজেকে বোঝাই যে কোনো না-কোনোভাবে এই ভালোবাসা ফেরত দিতে হবে। আমি মাঝেমধ্যেই ঘোষণা দিয়ে বলি যে আমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। আসলে আমি নিজেই জানি না এত ভালোবাসা কীভাবে পেয়েছি।
আপনার লেখা শ্রেষ্ঠ বই কি আপনি লিখে ফেলেছেন বলে মনে করেন, নাকি এখনো লেখা বাকি?
আসলে এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায় না। কারণ একেকজনের কাছে একেক বই ভালো লাগে। এই যেমন সেদিন একজন ই-মেইল করে বলল, ‘স্যার, আপনার লেখা শ্রেষ্ঠতম রচনা হলো টুনটুনি ও ছোটাচ্চু’। একেকজনের কাছে একেক বই শ্রেষ্ঠ। তবে যদি বলো লিখে আনন্দ পেয়েছি কি না, তাহলে সে রকম একটা বই লেখার ইচ্ছা আছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের লেখকেরা দু-তিন বছর সময় নিয়ে একটা বই লেখে। আমাদের দেশের লেখকদের বিভিন্ন কারণে বছরে তিন-চারটা বই লিখতে হয়। তাই অনেক সময় নিয়ে একটা বই লিখতে চাই, যেটা লিখে অনেক আনন্দ পাব।
গত বছর বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কোন ঘটনাটি আপনাকে সবচেয়ে আনন্দ দিয়েছে আর কোন ঘটনাটি হতাশ করেছে?
গত বছর ঘটে যাওয়া সব ঘটনার মধ্যে শাহবাগ আমাকে আনন্দ দিয়েছে। কারণ, আমি আগে ভাবতাম, এ প্রজন্মের তরুণদের মধ্যে দেশাত্মবোধ নেই। কারণ, তারা তো যুদ্ধ দেখেনি। কীভাবে দেশ স্বাধীন হয়েছে তা জানে না। কিন্তু আমি শাহবাগ দেখে অবাক হয়েছি। এখন আর চিন্তা করি না। কারণ, যাদের দেশের প্রতি মায়া আছে, তারাই দেশের জন্য কিছু করবে। আর এ জিনিসটাই আমাকে আনন্দ দিয়েছে। আর আমি হতাশ তেমন হই না বললেই চলে।
আপনার প্রায় সব উপন্যাসের চরিত্র অনেক সাহসী, মেধাবী, আত্মবিশ্বাসী হয়। এর কারণ কি এই যে আপনি নিজেই মেধাবী, আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী?
আসলে মেধা শব্দটায় আমি বিশ্বাসী না। যারা বেশি পরিশ্রম করে তারাই মেধাবী। আর কে বলেছে লিখিনি? আমি সব ধরনের চরিত্র নিয়ে লিখতে চেষ্টা করি। কখনো বোকা কিন্তু সাহসী আবার কখনো চালাক কিন্তু আত্মবিশ্বাসী নয়। এ রকম সব ধরনের চরিত্র নিয়েই লিখি আর এসব গল্পের খাতিরেই হয়।
একটি প্রবাদ আছে, ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো’। আরেকটি প্রবাদ আছে, ‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো’। আপনি কোনটিতে বিশ্বাসী?
এটা তো অর্ধেক গ্লাস ভর্তি পানি থাকলে কেউ বলে অর্ধেক গ্লাস খালি আবার কেউ বলে অর্ধেক গ্লাস পূর্ণ, সে রকম একটা প্রশ্ন হয়ে গেল। আমি সব সময় আশাবাদী আর এ জন্যই যেখানে মানুষ হতাশ হয়ে যায়, সেখানে আমি আশা নিয়ে সেই কাজটা করি এবং বেশির ভাগ সময় সফলও হয়েছি।
কখনো সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা আছে কি?
না। রাজনীতিতে আসার আমার কোনো ইচ্ছা নেই। কারণ, রাজনীতিবিদদের যেসব গুণ থাকা উচিত, যেমন সাংগঠনিক নেতৃত্ব দেওয়া—এসব গুণ আমার মধ্যে নেই। তবে আমি চাই তরুণেরা ভালো রাজনীতিতে যোগদান করুক।
যখন কোনো বাঙালি মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এসে আমার সঙ্গে তর্ক করে, তখন আমি কী করব?
অবশ্যই তুমি তখন তার সঙ্গে কথা বলে সময় নষ্ট করবে না। যদি কোনো ছাগল ঘাস খায়, তখন কি তুমি তাকে বলো যে, ‘এই ছাগল, এদিকে এসে ভালো পরিষ্কার ঘাস খাও!’
তরুণেরা চাইলে যেকোনো অসাধ্য সাধন করতে পারে। এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে তরুণদের করা সবচেয়ে বড় কাজ কোনটি?
আসলে তরুণদের তো সেটা করতে দেওয়া হয় না। ওরা তো এখনো প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ওরা সে রকম অসাধ্যও কিন্তু সাধন করেছে। তুমি ভেবে দেখো, আমাদের দেশের যে শিক্ষাব্যবস্থা, তাতে কিন্তু কখনো গণিত অলিম্পিয়াড হওয়ার কথা নয়, এভারেস্ট জয়ের কথা নয়, এভাবে ক্রিকেটে এত ভালো করার কথা নয়, কিন্তু তারা তো সেটা করছে, তাই না? সেটা ওরা নিজেরাই করছে, আমরা শুধু ওদের উত্সাহ দিয়ে যাচ্ছি।
এত বইয়ের মাঝেও একটা ডিজিটাল বই আছে, যার নাম ফেসবুক। সবাই এখন ফেসবুকে ঝুঁকছে। আপনি নিজে ফেসবুক ব্যবহার করেন না। তবে আপনার একটি অফিশিয়াল পেজ আছে। কিশোরদের ফেসবুক ব্যবহার নিয়ে কী বলবেন?
তুমি যদি যন্ত্রকে ব্যবহার করো, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু যন্ত্র তোমাকে ব্যবহার করলে ঠিক নেই। অতএব নিজেকে জিজ্ঞেস করো ফেসবুকে তুমি কতক্ষণ সময় দিচ্ছ, এর জন্য তোমার ক্ষতি হচ্ছে কি না, তুমি ব্যবহূত হচ্ছ কি না।
প্রযুক্তির এই যুগে কোন বয়স থেকে শিশুদের হাতে কম্পিউটার, ট্যাব, স্মার্টফোন তুলে দেওয়া উচিত?
এ বিষয়ে আমি বৈজ্ঞানিক মতবাদ দিতে পারি না। কারণ, এ নিয়ে গবেষণার ব্যাপার আছে। তবে আমার মতে, প্রত্যেক শিশুরই হাত দিয়ে কাজ করা উচিত। মাটি দিয়ে খেলনা তৈরি করা, কাঁচি দিয়ে কাগজ কেটে আবার জোড়া লাগিয়ে খেলনা তৈরি করা। আমি আমেরিকার একটা খেলনার দোকানে গিয়েছিলাম, যেটা এখন বন্ধ হয়ে গেছে। এখন যেখানে শিশুদের হাত দিয়ে কাজ করা উচিত, সেখানে তারা আঙুল দিয়ে শুধু টাইপ করছে। এভাবে হলে মস্তিষ্কের সূক্ষ্ম বিকাশ হবে না।
যদি আইনস্টাইন আপনার সামনে হাজির হন, তাহলে আপনি তাকে কী বলবেন?
আমি তাকে বলব, ‘এই যে আপনি এত আগে এত কিছু আবিষ্কার করেছেন, আপনি কি জানেন যে এখন কম্পিউটার নামে একটা যন্ত্র আছে?’
তারপর আমি আইনস্টাইনকে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট দেখাব। বলব, ‘এই যে এখানে বসে আমি পৃথিবীর যেকোনো তথ্য পেতে পারি, এই যে দেখেন সার্চ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার কত ছবি বের হয়ে আসছে!’
শিশু চলচ্চিত্র উত্সবে শিশুদের সঙ্গে নিয়ে আপনি একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন যে বাংলাদেশ আগামী ১৫ বছরের মধ্যে অস্কার পাবে। সাহিত্যে কোনো বাংলাদেশি কবে নাগাদ নোবেল পেতে পারেন?
আসলে আমি এটি বলেছি তাদের উত্সাহ দেওয়ার জন্য। ১৫ বছরের বেশি বা কম হোক, সেটা ব্যাপার নয়। আমি মনে করি অস্কারের চেয়ে অনেক ভালো চলচ্চিত্র আমরাই বানাব। অস্কার, নোবেল এগুলো আসলে ব্যাপার নয়। আমাদের জীবনানন্দ দাশ, তারাশঙ্কর—তাঁদের ১০টা করে নোবেল পাওয়ার কথা। নোবেল-অস্কার পেলেই আসলে সবকিছু হয়ে যায় না।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান খেলায় যখন বাঙালিরাই পাকিস্তানকে সমর্থন করে, সেটা আপনার কাছে কেমন লাগে?
এটা আমার কাছে খুবই বিচিত্র মনে হয়। আমি আসলে তাদের জন্য একধরনের করুণা অনুভব করি। পৃথিবীতে যতগুলো অনুভূতি আছে, সেখানে শ্রেষ্ঠ হচ্ছে নিজের দেশটাকে ভালোবাসা। আমাদের দেশের এত বড় ঐতিহ্য, এত মহান ইতিহাস, একজন সেখান থেকে আনন্দ পায় না, আনন্দ পায় পাকিস্তানের খেলা দেখে! খুবই অদ্ভুত।
বাংলাদেশের যে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা তা আমাদের সত্যিকার অর্থে ‘মানুষ’ হয়ে গড়ে তুলতে কতটা কার্যকর?
আসলে শুধু শিক্ষাব্যবস্থা দিয়ে তো সেটা হয় না। মানুষ তার পরিবেশ থেকে শিক্ষা নেয়। শিক্ষার ব্যবস্থা তো খালি পাঠ্যবই, খাতা-কলম। তবে হ্যাঁ, শিক্ষাব্যবস্থা যেহেতু মানুষ হওয়ার একটা বড় অংশ, তাই সেটাকে আমরা আরও উন্নত করছি।
একজন আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য কী থাকা প্রয়োজন?
সবার আগে কোনো কিছু করার উত্সাহ থাকতে হবে। দ্বিতীয়ত, দেশকে ভালোবাসতে হবে এবং সব শেষে অন্যের জন্য কিছু করতে হবে। আর নিজেকে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, যাতে অনেক মানুষের উপকার করা যায়।
শিক্ষকতা পেশায় মানুষ কেন আসছে না বলে আপনি মনে করেন?
শিক্ষকতা পেশায় তাঁরাই নিয়োজিত হন, যাঁদের সত্যিকার অর্থে শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষকদের উপযুক্ত সম্মানী এবং সুযোগ-সুবিধার অভাবে এ পেশায় খুব কম মানুষই স্বেচ্ছায় আসেন। আমাদের দেশে শিক্ষকদের জন্য উপযুক্ত সম্মানী এবং সুযোগ-সুবিধার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
আপনি কেন শিক্ষকতা পেশায় এসেছেন?
আমি এসেছি, কারণ এ পেশায় গবেষণার অনেক সুযোগ আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা আছে। তাদের সম্মানীও ভালো। তাই যারা পড়ানোর পাশাপাশি গবেষণা করতে চায়, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারে।
কোনো কিশোর এসে যদি বলে আমি আপনার চেয়ে ভালো লেখক হতে চাই, তাকে আপনি কী পরামর্শ দেবেন?
প্রথমেই আমি তাকে কংগ্রাচুলেট করব এবং একটা আইসক্রিমের দোকানে নিয়ে তাকে আইসক্রিম খাওয়াব। আর একজন মানুষ যত বেশি বই পড়ে, সে তত বেশি ভালো একজন লেখক হতে পারে বলে আমি মনে করি।
আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
তোমাদেরও অনেক ধন্যবাদ।
সাক্ষৎকার দলের পাঁচজন ছাড়া আরও যাদের প্রশ্ন নির্বাচিত হয়েছে— আবদুল্লাহ ফাহাদ, আফরা ইবনাত, আফসানা চৌধুরী, মো. আহসান নাহিয়ান, অমিত প্রামানিক, অনন্যা তৃষা, আনিতা আহমেদ, অরণি মুনতাহা, অভিজিত্ সাহা, মুহিদ হাসান, ইসাবা শুহরাত, ইসতিয়াক হোসেন, জয়তসিংহ, কাজী আরাফ সাঈদ, কাজী ফারহিন, লাবিবা তাহিয়া, মশিউর রহমান, মাশরিক ফাইয়াজ, মীম জামান, মো. জসীম উদ্দিন, নাসরুল্লাহ বাসার, নিলয় ত্রিপুরা, নশিন তাবাসসুম, প্রিয়ংকেশ ভৌমিক, প্রজ্ঞা আহমেদ, প্রভাতি নাজমিন, রাজকন্যা রাজ্জাক, রামিসা তাহিয়া, সাবিহা শারমিন, সাবরিনা ওসমান, সাদিয়া ফাইরুজ, এস এম সাদমান শিপার, সামিয়া শারমিন, শতাব্দী দাস, সিফাত আহমেদ, সুমাইয়া ইয়াসমিন, সুপান্থ দে, সাইমুন চৌধুরী, তাবাসসুম ইসলাম, তাজরি জাহান, তানজিনা আক্তার ও তাসফিয়া তাবাসসুম।
ছবি: কবীর শাহরীয়ার ও সাবহানাজ রশীদ
অলংকরণ: জুনায়েদ, নামিস্তা
(কিশোর আলোর এপ্রিল ২০১৪ সংখ্যায় প্রকাশিত)