যারা গান গেয়েছে আজ পর্যন্ত, সবার ভক্ত আমি — আইয়ুব বাচ্চু
আইয়ুব বাচ্চু — বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের একজন পথিকৃৎ। তাঁর ছোটবেলা কেটেছে চট্টগ্রামে। পড়েছেন চট্টগ্রাম মুসলিম হাইস্কুলে। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি এক অদ্ভুত ভালোবাসা ছিল তাঁর। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম অ্যালবাম রক্তগোলাপ। সেটি তেমন জনপ্রিয় না হলেও ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত দ্বিতীয় অ্যালবাম ময়না ব্যাপক শ্রোতাপ্রিয়তা পায়। তাঁর প্রথম ব্যান্ডের নাম ছিল ‘গোল্ডেন বয়েজ’। ছিলেন ‘ফিলিংস’ এবং ‘সোলস’-এর মতো ব্যান্ডেও। বর্তমানে তাঁর ব্যান্ড এলআরবি। গান করেছেন সিনেমায়। বিচারক হয়েছেন গানবিষয়ক রিয়েলিটি শোতেও। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মগবাজারে নিজের স্টুডিও এবি কিচেনে তিনি মুখোমুখি হয়েছিলেন কিশোর আলোর সাক্ষাত্কার দলের। সেই দলে ছিল শহীদ পুলিশ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ের খাতুনে জান্নাত, মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের তৌসিফুল ইসলাম, তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের জিনাতুন নেসা, খিলগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের রাফিদ আরিয়ান এবং বিসিআইসি কলেজের নিলুফার আক্তার।
আপনার গানে শুনেছি আপনি নাকি কষ্ট পেতে ভালোবাসেন। গানের জগতে এসে কি আপনাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে?
প্রথমত, গানটা তো আমার লেখা নয়। তাই গানটা যিনি লিখেছেন, তিনি হয়তো কষ্ট পেতে ভালোবাসেন। আমি গানটা গেয়েছি মাত্র। দ্বিতীয়ত, কষ্ট পেতে ভালোবাসা লাগে না। কষ্ট আসলে মানুষের জীবনজুড়েই আছে। ঘুম থেকে উঠে কষ্ট, ঘুমানো পর্যন্ত কষ্ট। মানে ঘুমাব এটাও আয়োজন করতে একটা কষ্ট। মশারি খাটাও, তারপরে লাইট অফ করো, এসি থাকলে এসি চালাও, ফ্যান চালাও, বাবা-মাকে ‘খোদা হাফেজ’ বলো, ভাইবোনকে বিদায় জানাও... সবাইকে বিদায় জানিয়ে ঘুমাতে হবে। ওখানেও একটা ট্রাবল আছে। কষ্টটা তো জীবনজুড়েই আছে। ওটা গান গাইলেই কী, আর না গাইলেই কী!
গানের জগতে কীভাবে এলেন?
আমার পরিবারের কেউ গানের জগতে নেই। ব্যবসায়ী পরিবার। বেশ বড় একটা পরিবার ছিল আমাদের, যাকে বলে একান্নবর্তী পরিবার। মানে মা-বাবা, খালা, চাচা-চাচি, জেঠা-জেঠি—সবাই মিলে একটা বাড়ির মধ্যে থাকা। বাড়ির মধ্যে সবাই ব্যবসা করে, লেখাপড়া করে, আমিও লেখাপড়ার মধ্যেই ছিলাম। কখন যে কীভাবে ব্যবসায় না গিয়ে এই জগতে এলাম নিজেও জানি না। হঠাৎ মনে হলো—না, আমার গান-বাজনাই করতে হবে। আমার আর কিছু ভালো লাগছে না। এই যে পাগলামিটা এল মাথায়, তার জন্য প্রচুর বকাও খেলাম বাসায়। মা একসময় নিষেধ করতেন। বাবা তো প্রথম থেকেই হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন যে ছেলে গোল্লায় গেছে। বাবা বলতেন, ‘বাবা, তুমি শেষ, ইউ আর আউট।’ আমি যেহেতু বড় ছেলে, বাবা আমার প্রতি বিশ্বাসই হারিয়ে ফেলেছিলেন। মা বলতেন, দেখা যাক কী হয়। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানি একটা সময়ে গিয়ে ১৯৭৮ বা ১৯৭৯-তে আমরা একটা ইংরেজি ব্যান্ড গঠন করি। গান তোলা, বাজানো শুরু করলাম। মা তখন বললেন, ‘নাহ্! তোদের কেউ চেনে না।’ তারপর হঠাৎ একটা বড় সুযোগ এল। একটা বড় ব্যান্ডে সুযোগ পেলাম। আমি নিজের কিছু সুর করা গান করলাম। ব্যান্ডটার নাম ‘সোলস’। ওই ব্যান্ডে ১০ বছর আমার সুর করা গান দিলাম। গিটার বাজালাম, কম্পোজিশন করলাম, গাইলাম। তপনদা (তপন চৌধুরী) আমার সুরে গান গাইল। ব্যান্ডটা অনেক জনপ্রিয় হলো। তখন আম্মা বললেন, ‘হ্যাঁ, এবার বোধ হয় তোদের ব্যান্ড খুললে চলবে।’ বাবা কিন্তু তখনো বলতেন, ইশ্! এটা ঠিক না, এই জীবন চলবে না...।
তারপর যখন এলআরবি করে ফেললাম, তখন না বাবা, না মা, কেউই কিছু বললেন না। তোমাদের এটা বলার কারণ হচ্ছে, মূলত আমি শূন্য হাতে ঘর থেকে বেরিয়েছি এবং নিজেই নিজেকে গড়ে তুলেছি। যারা লেখাপড়া করো, তাদের কাছে আমার অনুরোধ, বাবা-মার কাছে সবকিছু আশা কোরো না। বাবা-মা একমাত্র সম্পদ পৃথিবীতে, যারা তোমার সামনে সবকিছু খারাপ বলবে, আবার পেছনে তোমার জন্য অনেক দোয়া করবে। এ ছাড়া আর সব আপনজন এই পৃথিবীতে সামনে ভালো বলবে, পেছনে খারাপ বলবে। তোমার নিজেকে নিজে গড়ে তুলে মা-বাবাকে দেখাতে হবে।
গান গাইতে গিয়ে পড়াশোনার কোনো ক্ষতি হতো?
এটা তো মারাত্মক প্রশ্ন। দুটাই এত ভয়ানক কাজ যে জীবনে একটাকে ক্ষতি করে দিতে হবে। তবে না করাই ভালো আরকি। আমাদের মতো ভুল কোরো না। গান তুমি সারা জীবন গাইতে পারবে। কিন্তু লেখাপড়া সারা জীবন করা কঠিন। সময় থাকতে থাকতে লেখাপড়া শেষ করে তারপর তুমি গান করো। তুমি গান ভালোবাসো, কিন্তু লেখাপড়া শেষ করে নাও।
খেলাধুলা করতেন?
আমার ফুটবলার হওয়ার খুব শখ ছিল। তো যিনি আমার কোচ ছিলেন, তিনি একদিন খুব জোরে একটা বল মারেন। বলটা সোজা এসে নাকে লাগে। তারপর থেকে আমার ফুটবল খেলা বন্ধ। খেলা দেখিও না, খেলিও না। আর ক্রিকেট খেলতে গিয়ে একদিন আমার পায়ে বল লাগল। তারপর থেকে প্যাড-ট্যাড ছাড়া আর ক্রিকেট খেলিনি।
আপনার জীবনের প্রথম গিটার কে কিনে দিয়েছিলেন?
ওটা আমার বাবা কিনে দিয়েছিলেন। দিয়ে ভুল করেছেন (হাসি)। তারপর নিজেই বলেছিলেন, কেন গিটার কিনে দিলাম, ছেলে তো বাউল হয়ে গেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। উনি অবশ্য গিটার দিয়েছিলেন আমার কাছে একটা বাজিতে হেরে গিয়ে। তখন আমি ক্লাস ফাইভে। বাবা বলেছিলেন, তুমি যদি ফোর থেকে ফাইভে তোমার রোল দুই করতে পারো, তবে তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দেব। কী চাও তুমি? আমার মাথায় ঘুরছে গিটার লাগবে। আমি আমার কথা রেখেছিলাম। বাবাও তাঁর কথা রেখেছিলেন। আমি তো গিটার বাজাতে পারতাম না। টুংটাং করতে করতে একপর্যায়ে গিটারটা ভেঙে গিয়েছিল। তখন যদি বুঝতাম এটা কত অমূল্য সম্পদ ছিল, তাহলে হয়তো বাঁধিয়ে রাখতাম এখনো। কিন্তু তখন ওটার মূল্য বুঝতে পারিনি। এটা আমার দুর্ভাগ্য। বাবাও একসময় গিটার বাজাতেন। দাদা একদিন রাগ করে ভেঙে চুলায় ঢুকিয়ে দেন বাবার গিটারটা। তিনি বলেছিলেন, এসব জিনিস এখানে চলবে না। তো বাবার মধ্যে একটা ক্ষোভ ছিল যে আমার ছেলেকে গিটারিস্ট বানাব। হয়তো এই ক্ষোভটাই ওনার দোয়া ছিল।
ব্যান্ডের শুরু কবে? কীভাবে?
ব্যান্ডের শুরু ফাজলামি করে। আমরা প্রচুর গান শুনতাম। ১৯৭৪ সালে আজম সাহেবের (আজম খান) গান শুনে আমরা খুব অনুপ্রাণিত হই যে এ রকম বড় চুল রাখতে হবে আর গান গাইতে হবে। আমার দেখা একজন অসাধারণ গিটারিস্ট ছিলেন নয়ন মুন্সি। তিনি প্রখ্যাত গায়ক আলমগীরের ভাই। ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডের সঙ্গে ছিলেন। ওনার গিটার বাজানো দেখে এবং আজম খানের গান শুনে গান গাওয়ার ইচ্ছাটা হয়।
প্রথম কোন ব্যান্ডে ছিলেন?
প্রথমে ছিলাম গোল্ডেন বয়েজে। পরে ফিলিংস, সোলস আর এলআরবিতে।
ফিলিংস ও সোলসে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
ফিলিংস আমার প্রথম ভালোবাসা। প্রথম প্রেম। ওখানে আমরা সব বন্ধু ছিলাম। গোল্ডেন বয়েজেও ছিলাম আমরা সব বন্ধু মিলে। ফিলিংসে তিন-চার বছরের অভিজ্ঞতা অসাধারণ। ওই সময়টাতেই আমি গানটা শিখতে পেরেছি। সোলসে আমি ১০ বছর ছিলাম। অনেক কাজ করেছি, বাজিয়েছি। গান একটা অদ্ভুত জিনিস। এখানে এত বছর সাঁতরেও কূলের দেখা পেলাম না। কেউ এটা শিখে শেষ করতে পারে না। তুমি সামনে কূল দেখবে, সামনে যাবে, দেখবে ওটা দূরে সরে যাচ্ছে। কেউ যদি বলে যে গান পুরোপুরি শিখে ফেলেছে, তাহলে তো সে মহাপণ্ডিত। ওই সময় এই গানগুলো করা এত সোজা ছিল না। ১৯৯১ সালের দিকে, পাড়ার মানুষেরা গান শুনে এত বকা দিতেন যে বাবা-মাও এত বকা দিতেন না। এখন এই সময়ে এসে তোমরা আমাদের গানগুলো পছন্দ করছ। তবে তোমাকে সবকিছুকেই সম্মান করতে হবে। রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলগীতি, ফোক, আধুনিক, জারি, সারি, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, রক, মেটাল, ডিপ মেটাল সবকিছুকেই।
আপনার প্রথম অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’ প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালে। সেই সময়ের অনুভূতি কেমন ছিল?
দুঃখজনক ছিল। এত মিষ্টি মিষ্টি গান করলাম, আগে জীবনেও করিনি। অথচ ফ্লপ করল। আমার গিটারের এক ওস্তাদ ছিলেন রউফ চৌধুরী। তিনি বলেছিলেন, তোমাদের গানটি তোমাদের জন্য ভালো হয়েছে, মিষ্টি মিষ্টি। কিন্তু এত বেশি সুগার হয়েছে যে ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা আছে।
১৯৮৮ সালে আপনার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’ প্রকাশিত হয়। তারপর ১৯৯৫ সালে তৃতীয় অ্যালবাম ‘কষ্ট’। মাঝখানে এত বছর কোনো অ্যালবাম বের করেননি কেন?
কিছু মিস্ত্রি আছে যারা প্রতিদিন বাড়ি বানায়। আর কিছু মিস্ত্রি আছে যারা ইট গেঁথে মাটি শক্ত হওয়ার অপেক্ষা করে। মানে আমরা আসলে তখন শিখছিলাম। সোলসের সঙ্গে বাজাচ্ছিলাম। তাই হয়তো এত বছর দেরি হয়ে যায়।
জিমি হেনড্রিক্স ও জো স্যাট্রিয়ানির বাজনায় আপনি দারুণভাবে অনুপ্রাণিত বলে আমরা জেনেছি। তাঁদের সুরের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে?
ছোটবেলা থেকেই। আমি খুব পাগল ভক্ত ছিলাম রিচি পপসেলের। আরও ভক্ত ছিলাম রিচি ব্ল্যাকমোর, রিচি কোজেন, স্টিভ ভাই, স্টিভ মোর, গ্যারি মোর, জিমি হ্যানড্রিক্স, গট্ররি গোবেন—এঁদের। ওখান থেকেই ওনাদের বাজনায় অনুপ্রাণিত হই।
আপনি বাংলা সিনেমায়ও প্লেব্যাক করেছেন। সব কটি গানই অসম্ভব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। হঠাৎ করে সিনেমায় গান কেন করলেন?
আজকের বাদশা নামে আলাউদ্দিন ভাইয়ের একটা সিনেমা হয়েছিল। ওখানে তিনি আমাদের গাইতে বলেন। এক দিন যায়, দুই দিন যায়—আমরা আর গান গাই না। তিনি বললেন, তোরা কি গানটা গাইতে পারবি না? যারা ব্যান্ডে গায় তারা কি সিনেমার গান গাইতে পারে না? বললাম, পারে। গাইলাম ‘আমি জানি তুমি আমার’। এরপর আরও গাইলাম ‘অনন্ত প্রেম’, ‘সাগরিকা’, ‘আম্মাজান’, ‘আমি তো প্রেমে পড়িনি’। সংগীত জীবনে আমি প্রায় ২ হাজার ৪০০-এর মতো গান গেয়েছি।
সিনেমার গান কেন ছাড়লেন?
আমি যখন সিনেমায় গান গাই, তখন তোমাদের মতো শিশু-কিশোরেরা আমাকে নিয়মিত বলত, ভাইয়া এটা করবেন না। তখন আমি তাদের জিজ্ঞাসা করলাম, কেন আমি সিনেমায় গান গাইব না? ওরা বলল যে ওনাদের যে ছবি, তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের কোনো মিল নেই। আমি হিসাব করে দেখলাম, ওরাই ঠিক। এটা একটা কারণ সিনেমার গান ছাড়ার। আরেকটা দুঃখ পেয়েছিলাম আমি। এক রেকর্ডিং কোম্পানি আমার গানগুলো দিয়ে, আমার ছবি বসিয়ে ‘বেস্ট অব আইয়ুব বাচ্চু’ নামে ছেড়ে দিয়েছিল। এটা দেখার পর সিদ্ধান্ত নিই সিনেমায় আর গান গাইব না। শুধু বিশেষ কারণে দুটি সিনেমার গান করেছি। একটি ব্যাচেলর আরেকটি চোরাবালি। আর ভারতীয় একটা সিনেমায় গেয়েছি।
রক শিল্পী হলেও আপনি ধ্রুপদি ও লোকগীতি গেয়েও শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। এ ধরনের গানের প্রতি কি আলাদা কোনো টান আছে আপনার?
রক তো আমার দেশের নয়। কিন্তু ধ্রুপদি, লোকগীতি বা ফোক এগুলো আমার মায়ের গর্ভ থেকে আমার দেশে এসেছে। সে হিসেবে এগুলো আমাদের গান। তাহলে রক কেন করছি? আমার রক্তে রয়ে গেছে ফোক সংগীত। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, রকের বাংলা হবে না কেন? রক কেন আমাকে ইংরেজিতে শুনতে হবে? সেই জেদ থেকে ১৯৯১ সালে এলআরবি তৈরি করে বাংলায় রক গান শুরু করলাম। ‘ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘চল বদলে যাই’, ‘ফেরারী মন’ ‘মাধবী’ ‘হকার’—প্রতিটার একটা বিষয় আছে। কিন্তু গানগুলো বাংলা আর এগুলো পিওরলি রক।
আপনি হার্ডরক, ব্লুজ, সাইকেডেলিক রক কিংবা অল্টারনেটিভ রকসহ নানা রকম গান করেন। মূলত কাদের জন্য এগুলো করেন?
এ গানগুলো তোমাদের গান। আমি যে গানগুলো করছি বা আমি যে গানগুলো নিয়ে কাজ করছি সেগুলো আগামীর গান। ‘ঢাকার সন্ধ্যা’, ‘হকার’, ‘মাধবী’ হয়তো শুনেছ। তোমার আম্মুর ভালো লাগল না। আম্মু বলবে, ‘আহা! কান তো ব্যথা হয়ে গেছে।’ কিন্তু আমি তাদের জন্য গাইছি, যারা আগামীর বিশ্বে লড়বে।
আপনি গান লিখেছেন, সুর করেছেন, গেয়েছেন, বাজিয়েছেন, নির্দেশনা দিয়েছেন। কোনটি সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং?
গান বানানো খুব কঠিন। অন্যের গান দিয়ে বিখ্যাত হওয়া যায়, নিজের গান দিয়ে বিখ্যাত হওয়া খুব কঠিন। একজন আবদুল আলীম হওয়া খুব কঠিন, একজন আব্বাসউদ্দীন হওয়াও খুব কঠিন। কিন্তু আব্বাসউদ্দীনের মতো করে গাওয়াটা হয়তো সহজ। দুই-তিন মাসে গান তুলে ফেলা সহজ। মানুষের অসাধ্য কিছু আছে নাকি? গান বানাতে বসলে তখন বোঝা যায় যে গান বানানো কত কঠিন। সৃষ্টি করা খুব কঠিন। যেমন হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের ছয়টা অ্যালবাম আমার করা। আমি তো ওকে রকও দিতে পারতাম। কিন্তু দিইনি। কারণ ওর হৃদয়ই নরম। সে জন্যই ওকে মিষ্টি মিষ্টি গান দিয়ে সোজা পথে চালিয়ে দিলাম। তপন চৌধুরী—তোমরা হয়তো শোনোনি, তোমাদের আব্বু-আম্মুরা শুনেছে হয়তো। আমরা একসঙ্গে গান করতাম সোলসে। তপনদা আমাকে অনুরোধ করল, তোমার তো সুন্দর গান আছে, তুমি আমাকে একটা অ্যালবাম করে দাও। বললাম, আপনি আমার গান গাইবেন? এতে ব্যান্ডের অসুবিধা হবে না? তপনদা বললেন, ‘রাখো মিয়া ব্যান্ড, তুমি আগে আমার জন্য গান করে দাও।’ আমি তখন সুর করি। ওই সময়টাতে একক অ্যালবাম করা বা কারও জন্য গান করা আমার জন্য স্বপ্ন ছিল। তখন আমি তখন তোমাদের বয়সী বা একটু বড় হব। আমার নাই দুইটা টাকা—আমি গান রেকর্ডিং করতে যাব। কিন্তু আল্লাহ অশেষ মেহেরবান। আমার জন্য একটা কোম্পানি বিনিয়োগ করতে চাইল। ‘আমার গল্প শুনে’, ‘মনে করো তুমি’, ‘হঠাত্ দেখে চমকে’, ‘আলো ভেবে যারে আমি’ ইত্যাদি অনেকগুলো গান নিয়ে একটা অ্যালবাম। গান বানানো কষ্টের কিন্তু গান কপি করা অনেক সহজ।
কখনো কি স্কুল পালিয়েছেন?
না। স্কুল পালানো হয়নি সেভাবে। কিন্তু স্কুলের দিনগুলো খুব বাজে ছিল। কারণ, আমি আমার ক্লাস ক্যাপ্টেন ছিলাম। এটা আমার সবচেয়ে দুর্ভাগ্য। টিফিনের সময় ডেকচি দিত—ওপর দিয়ে একটা পেপার, ভেতরে জিলাপি, নিমকি, অমুক-তমুক অনেক থাকত। দায়িত্ব পড়ত আমার ওপর। যারা আমার বেশি ভালো বন্ধু ছিল, তাদের দুইটা করে দিতাম। আর যাদের সঙ্গে তেমন ভাব ছিল না তাদের বলতাম, ‘তোদেরটা কে জানি নিয়ে গেছে।’ প্রতিদিনই বিচার যেত আর টিফিনের পর স্যার এসে আমাকে মার লাগাতেন। তবে আমি খুব আনন্দ করতাম। আমি আমার স্কুলকে খুব মিস করি। তোমরাও যত পারো তত তোমার স্কুলকে উপভোগ করো। এই উপভোগ তোমরা তোমাদের কলেজ বা ভার্সিটিতে পাবে না।
আমাদের ক্লাসে একজনকে মারলে বাকিরা প্রতিবাদ করত। সবাই একসঙ্গে চিৎকার করলে আর সাহস পেত না। জিজ্ঞেস করত, ‘এই তোরা চিল্লাস ক্যান?’
সুন্দর একটা সাদা শার্ট পরে স্কুলে যেতাম আর ফিরতাম কালিমাখা ময়লা শার্টে। মা জিজ্ঞেস করতেন, ‘কিরে তোকে প্রতিদিন কালি মারে কে?’ আমি বলতাম, ‘মা, আমি তো সামনে বসি, পেছন থেকে কে মারে আমি জানি না।’ তারপর বলতেন, ‘কালকে থেকে এর একটা ব্যবস্থা করতে হবে।’ কারণ এভাবে তো প্রতিদিন শার্ট ধোয়া যায় না। আর কালি ছড়িয়ে পড়তে পড়তে একপর্যায়ে আমার সাদা শার্টটি কালোই হয়ে গিয়েছিল।
আপনি চট্টগ্রামে বড় হয়েছেন, সেখানকার স্মৃতি মনে পড়ে?
চট্টগ্রামের প্রতি আমার দুর্বলতা থাকবেই আজীবন, আমৃত্যু। তবে আমরা কিন্তু সব শহরেরই সন্তান। সিলেটে গেলে সিলেটের মেয়র বলে উঠছে, ‘এ তো আমাগো পোলা!’ এটা আমার জন্য গর্বের ব্যাপার। কুমিল্লা গেলে কুমিল্লার সব লোকজন বলছে, ‘এটা আমাদের ছেলে।’ কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ—আমি কোথায় না গিয়েছি। এই দেশটার কোনায় কোনায় ব্যান্ড সংগীত নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু চট্টগ্রামে আমার স্মৃতি যেগুলো, তা আজীবন থাকবে। চট্টগ্রামের সবচেয়ে ভালো স্মৃতি হচ্ছে, সার্কিট হাউসের সামনে একটা বড় স্টেডিয়ামের মাঠ। এখন হয়তো আর নেই। রাত নয়টার পর থেকে গিটার নিয়ে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতাম। মায়ের বকুনি খেতে হতো। চট্টগ্রাম আমার কাছে অনেক আদরের। সেখানে আমার মা আছেন। গোরস্তানে শুয়ে আছেন। ১২ বছর ধরেই যাই সেখানে, কবর জিয়ারত করি। চট্টগ্রাম আমার রক্তে।
ছোটবেলার বন্ধুরা কেমন ছিল?
যে বন্ধুরা ছিল তাদের মধ্যে দুষ্টু ছিল বেশি, ভালো একটাও ছিল না। আমিই মনে হয় সবচেয়ে ভালো ছিলাম (হাসি)। তবে বেশির ভাগ বন্ধুই এখন বাইরে।
আপনার স্টুডিওর নাম ‘এবি কিচেন’। আপনি কি রান্না করতে ভালোবাসেন?
সব মিউজিক রান্না করি এখানে। কিন্তু খাবার রান্না করতে পারি না। একদিন আমার স্ত্রী রাতে তার বাবার বাড়ি দাওয়াতে গেছে। সেদিন সে সেখানেই থেকে গেল। বাসায় আমি একা। ভোরবেলা নাশতা খেতে হবে। তখন ল্যান্ডফোনের দিন। আমি ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, কীভাবে ডিম সিদ্ধ করব? ও বলল, আগে পানি দাও। আমি আগুন জ্বালালাম। তারপর বলল ডিম পানিতে ছেড়ে দিতে। আমি ডিম ছেড়ে দিয়েছি। বলল, একটু পর দেখবে হয়ে যাবে, পাঁচ মিনিট পর তুলে খেয়ে নেবে। রুটি আছে, কলা আছে, ব্রেকফাস্ট করে নিয়ো। আমি ব্রাশ-ট্রাশ করলাম। প্রায় এক-দুই ঘণ্টা পর চিন্তা করলাম নাশতা তো খেতে হবে। তখন গিয়ে দেখি, পাঁচ মিনিট কখন পার হয়ে গেছে, পানি শুকিয়ে জ্বলে গেছে। ডেকচির ভেতরে দুটো কালো পাথর পড়ে আছে (হাসি)।
গান তৈরির অভিজ্ঞতাটা কেমন?
কখনো কখনো পনেরো বার রেকর্ড করার পরও গানটা ফেলে দেওয়া হয়েছে। একবার রেকর্ড করেছি, বাসায় নিয়ে গেছি শুনতে। ধুর! এটা কোনো গান হয়নি। পরের দিন আবার রেকর্ড করেছি, না, এটা ভালো হয়নি। প্রায় দেড় মাস পরে মনে হয়েছে, না এই গানটা না করলেও চলবে। এটা আমার জীবনে সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার ছিল। আসলে আমি নিজে নিশ্চিত হওয়ার আগে মানুষের কান দিয়ে গানটা শোনার চেষ্টা করি। গানটা অনেক ভালো—এটা মনে করলে তুমি অনেক বিপদে পড়বে। কিন্তু মানুষের কান দিয়ে শুনে দেখো কী হয়। যেমন কিছুদিন আগে মা দিবস ছিল। আমার খুব প্রিয় একটা গান, ‘ও তোতা পাখি’। যদিও এটা আমাদের গান নয়। ভারতীয় গান। গানটা আমি এমনিই রেকর্ড করলাম। করার পর আমার মনে হয়েছে গানটা ভিডিও করতে হবে। মাসুদ ছিল। সে বলল, স্টুডিওতেই তো করবেন, চলেন। যেভাবে গাচ্ছেন ওভাবেই। ভিডিও আপলোড করা হয়েছে। প্রচুর মানুষ ওটা দেখেছে। গান এভাবেও হয়। আবার পনেরো বার রেকর্ড করার পরও হয়।
অনেকেই আপনার ভক্ত, আপনি কার ভক্ত?
আমি প্রথমেই মাভক্ত। আর মিউজিকে শাহ আবদুল করিমের। কারণ, ওনার গানের কথাগুলো আমার কাছে মনে হয়েছে এটা সাধারণ মানুষের পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। এভাবে গাওয়াও সম্ভব নয়। তারপর আমি লালন সাঁইজির ভক্ত। যে মানুষগুলো গান গেয়ে এভাবে উপস্থাপন করেছেন ওনাদের ভক্ত না হয়ে উপায় নেই। আর আব্বাসউদ্দীন। আমাদের আবদুর রহমান, তিনি তো রয়েছেনই। ফোক মিউজিকে সবাই। যারা গান গেয়েছে আজ পর্যন্ত, সবার ভক্ত আমি। নিজের ছাড়া।
সেকালের ব্যান্ড আর একালের ব্যান্ডের মধ্যে পার্থক্য কেমন?
এখনকার ব্যান্ডগুলো অনেক ভাগ্যবান। তাদের হাতের মধ্যে সবকিছু আছে। আর সেকালের ব্যান্ড, আমাদেরও সিনিয়র যারা, একটা প্রয়োজনীয় যন্ত্র, সাউন্ড সিস্টেম জোগাড় করতে বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াতে হয়েছে। একটা সাউন্ড সিস্টেম দিয়ে আটটা শো করতে হয়েছে। আর এখন একটা গান আট জায়গায় আটটা সাউন্ড সিস্টেম লাগিয়ে হচ্ছে। এর মানে আমাদের এখন যা দরকার সব এসে গেছে। নতুন প্রজন্মের হাতের মুঠোয় পুরো দুনিয়া। আমাদের সময় ইউটিউব ছিল না। ওরা দেখতে পাচ্ছে কীভাবে গিটার বাজাচ্ছে। আমাদের সময় তো শুনতে হতো, শুনে কর্ডটা তুলতে হতো। এভাবে করতে করতে দেখা যেত কোনোটার সিডি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বা টেপ ছিঁড়ে যাচ্ছে ইত্যাদি ইত্যাদি। আরও অনেক সমস্যা হতো, যা এখন হয় না।
নিজের গান শুনে কী মনে হয়?
খুব বাজে!
আপনি হাতে ব্রেসলেট পরেন, এটি শুধুই স্টাইল নাকি পরার কোনো বিশেষ কারণ আছে?
আমি যে বিয়ে করেছি এটার প্রমাণ! (হাসি)
কিন্তু আমরা তো জানি তখন আংটি পরা হয়...
হা হা হা, আংটিও পরি। আসলে এটা আমার ফ্যাশন। আমার প্রায় ত্রিশ-চল্লিশটা ব্রেসলেট আছে। যখন শো করতে যাই তখন মিলিয়ে যতটা ইচ্ছা নিয়ে যাই।
নিজের গাওয়া প্রিয় গান কোনটি?
বাবার কাছে তার সব সন্তানই প্রিয়। তবে তুমি যেহেতু আমার নিজের গান বলেছ, আমার প্রিয় গানটা এভাবে বলি, ‘চলো বদলে যাই...সেই তুমি...’
আপনার সংগ্রহে নাকি ৩৬টি ভিন্ন রকমের গিটার আছে। আপনার সবচেয়ে পছন্দের গিটার কোনটি?
সবচেয়ে পছন্দের হচ্ছে জেমস ৭৭, এফপি-২, এফপি-১। গিটারের প্রদর্শনী করার ইচ্ছা আছে। তোমাদের বয়সী যারা আছে, মানে ২০ বছর বয়সী যারা, তারা যদি গিটারগুলো বাজাতে পারে, তাহলে উপহার পেয়ে যাবে একটা গিটার।
গিটারিস্ট হিসেবে কাকে পছন্দ?
দেশে আমার ইদানীং সামিরের বাজানোটা ভালো লাগছে। বাহাদুর আর মাসুম ভালো। বাপ্পাও ভালো গিটারিস্ট। এ ছাড়া কমলেরটা ভালো লাগে। জেমসের প্লেয়িংটাও ভালো লাগে। আনন্দ, সেলিম হায়দারেরটা ভালো লাগে। নিলয়, আমার বন্ধু, মারা গেছে। তার বাজানোটা অসাধারণ ছিল। অতুলনীয়! নিলয়ের সঙ্গে কারও তুলনা হবে না। তখন ওই সময়টায় ও যে নিউ ক্লাসিক্যাল বাজাত, সেটা এখনো কেউ ঠিকমতো শিখতে পারেনি। এটি আমাদের দেশের জন্য একটি দুঃসংবাদ। ওই সময়ে নিলয় যেটা বাজাত, এখনো এসে সেটা সবাই বাজাতে পারছে না ঠিকমতো। অন্যেরটা তুলে বাজাতে পারছে কিন্তু সৃষ্টি করতে পারছে না। কিন্তু আমরা চাই নিলয়ের মতো এ রকম আরও গিটারিস্ট আসুক।
বাংলাদেশি আইডলের মতো রিয়েলিটি শোতে বিচারক হওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
আমার অভিজ্ঞতা খুব বাজে ছিল। কাউকে অনুকরণ করে তো আর বাংলাদেশের আইডল হওয়া যায় না। বাংলাদেশি আইডল হতে হবে তার নিজস্বতা নিয়ে, যা আমাদের অবাক করে দেবে। যেন সম্পূর্ণ নতুন কিছু। তবে সেখানে এমন কিছু হয়নি। উল্টো আমাকে মিথ্যে করে বলতে হচ্ছে, খুব ভালো হয়েছে। কিন্তু এ মিথ্যা এতক্ষণ ধরে বসে বলা খুবই কষ্টকর। আবার মনে হয়েছে যে না বললেও পারতাম। আমরা সব নিতে পারি, সমালোচনা নিতে পারি না। যেমন আমি যখন বললাম যে কেন তুমি ওর মতো গাইলে? তুমি তোমার নিজস্ব স্টাইলে গাইতে পারতে। এই কথা নিয়ে তুমি ফেসবুকে আমাকে নিয়ে লম্বা ফিরিস্তি দিচ্ছ। আমি কিন্তু তোমাকে খারাপ কিছু বলিনি, আমি শুধু বলেছি তোমার নিজের স্টাইলে ফিরে আসো, সবাইকে অবাক করে দাও।
বাংলাদেশে পাইরেসি অনেক বেড়ে গেছে। এটি বন্ধে কী করা উচিত?
পাইরেসি বন্ধ করার জন্য যা যা করণীয় সবই করা হয়েছে। কিন্তু যেটা করা হয়নি, সেটা হচ্ছে ফ্রি ডাউনলোড সাইটগুলো বন্ধ করা। ফেসবুক যদি দেশের প্রয়োজনে বন্ধ রাখা যেতে পারে, তবে ফ্রি ডাউনলোড সাইটগুলো কেন বন্ধ রাখা যাবে না? এ ছাড়া পাইরেসি বন্ধ হওয়ার কোনো উপায় নেই।
গায়ক না হলে কী হতেন?
গায়ক না হলে আমি পাইলট হতাম। আকাশে থাকতাম। দুনিয়ার কোনো কিছু আমাকে স্পর্শ করতে পারত না। সব সমস্যা এই দুনিয়াতেই। আকাশে কিছু নেই।
‘ট্রাফিক সিগন্যাল ও হলুদ বাতি’ নামে একটি নাটকে আপনি অভিনয় করেছেন। বিজ্ঞাপনচিত্রেও অংশ নিয়েছেন। অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
খুব বাজে। কারণ, আমার জীবনে কোনো রকম ইচ্ছা ছিল না অভিনয় করার। ওরা আমাকে জোর করে করিয়েছে। করতে গিয়ে কোনোমতে উতরে গিয়েছি। কিন্তু ওগুলো না করলেও চলে। একজন রকস্টারের ‘রকস্টার’ থেকে বড় কোনো পরিচয় আর দরকার নেই। আমি একজন রকস্টার। এর থেকে আমার বেশি কিছু পাওয়ার নেই।
অনেকেই একজনের গান পছন্দ করে তো অন্যজনের গান পছন্দ করে না। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
কার কী পছন্দ সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু মনে রাখতে হবে, ‘শ্রদ্ধা’ বলে একটা শব্দ আছে। যেটা তোমাকে করতে হবে। অমুকের গান ভালো লাগে কিন্তু তমুকের গান ভালো লাগে না। তাই বলে তুমি কাউকে অসম্মান করতে পারবে না।
আপনি এ পর্যন্ত অনেক গান গেয়েছেন। আপনার কি মনে হয় আপনি সেরা জিনিসটি আমাদের দিয়েছেন? নাকি দেননি?
কেউ তার সেরা জিনিসটা বানাতে পারে না। কেউ যদি বলে যে সে বানিয়ে ফেলেছে, তাহলে বোঝা যায় তার মতো আহাম্মক কেউ নেই।

দিনের অবসর সময়গুলোতে কী করতে পছন্দ করেন?
গিটার বাজাতেই ভালো লাগে।
কোনটা সবচেয়ে বেশি অপছন্দ?
পরনিন্দা করা, পরচর্চা করা।
কিশোর তরুণ যারা গানের জগতে আসতে চায় তাদের জন্য পরামর্শ?
তোমার পরীক্ষা শেষ করো, তোমার পড়ালেখা শেষ করো। তারপর যুক্ত হও।