সাক্ষাৎকার
ভালো-খারাপ মিলিয়েই তো মানুষ। কারওটা চাপ মনে হয়, কারওটা উৎসাহ দেয় — সাকিব আল হাসান
আর সবার মতো পড়াশোনা ভালো লাগত না সাকিব আল হাসানেরও। প্রাথমিক পর্যায়ে পড়েছেন বেশ কয়েকটি স্কুলে। তারপর মাগুরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় হয়ে বিকেএসপি। তবে ছোটবেলায় জীবনের লক্ষ্য একদমই নির্ধারিত ছিল না। একেক সময় হতে চাইতেন একেক জিনিস। বাবা ফুটবলার ছিলেন বলে ফুটবলের সঙ্গেই বেড়ে ওঠা, তবে ক্রিকেটও খেলতেন। পড়া বাদ দিয়ে ক্রিকেট খেলার কারণে তো বাবা তাঁর ব্যাটও কেটে ফেলেছিলেন। তাতে কি আর সাকিবকে দমিয়ে রাখা যায়? সবকিছু জয় করে তিনি এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা ক্রিকেটার। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। তারপর নিয়মিত ভালো খেলার মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়। দারুণ বোলিং আর দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে হয়েছেন আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বর অলরাউন্ডার। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে কাউন্টি আর বিগব্যাশ খেলেছেন। আইপিএল, এসএলপিএল আর সিপিএলের মতো বড় টুর্নামেন্টেও তাঁকে দেখা যাচ্ছে নিয়মিত। এত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিভাবান এই ক্রিকেটার গত ২৪ জুন ২০১৪ নিজ বাসায় মুখোমুখি হয়েছিলেন কিশোর আলোর সাক্ষাৎকার দলের। সেই দলে ছিল ওয়াইডব্লিউসিএ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের তাসফিয়া তাবাসসুম, হলিক্রস কলেজের তানজিনা কাকন ও সেন্ট যোসেফ উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাহিব নিহাল।
প্রশ্ন :
ছোটবেলায় ‘এইম ইন লাইফ’ রচনায় কী হওয়ার কথা লিখতেন? অর্থাৎ বড় হয়ে কী হতে চাইতেন?
ইচ্ছাটা প্রতিবছর পরিবর্তন হতো। কখনো ডাক্তার, কখনো ইঞ্জিনিয়ার, আবার কখনো পাইলট এমনকি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টও হতে ইচ্ছা হতো। আর ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলতাম। ফুটবল খেলার একটা কারণ হচ্ছে বাবা ফুটবলার ছিলেন। আমার ফুফাতো ভাই জাতীয় দলে খেলতেন। তো স্বাভাবিকভাবেই ফুটবলের সঙ্গে একটা আলাদা সম্পর্ক ছিল। তা ছাড়া মাগুরায় ফুটবল বেশ জনপ্রিয়।
প্রশ্ন :
ইচ্ছাগুলো কী কারণে পরিবর্তন হতো?
যখন যেটা আকর্ষণীয় লাগত, তখন সেটাই হতে চাইতাম। তারপর একবার মনে হলো, সবাই তো চায় ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে, আমি অন্য কিছু হব। সবার চেয়ে একটু আলাদা থাকতে ভালো লাগত।
প্রশ্ন :
বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নটা তাহলে ঠিক কখন দেখলেন?
সত্যি কথা বলতে, আমি যখন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলেছি, তখন মনে হয়েছে যে জাতীয় দলে খেলতে পারি।
প্রশ্ন :
বিকেএসপিতে যাওয়ার আগের স্কুলজীবনের কথা মনে পড়ে? কেমন ছিল সেই দিনগুলো?
(হেসে) মনে তো পড়েই। বিকেএসপিতে একধরনের মজা ছিল। আবার বিকেএসপির বাইরের স্কুলগুলোতেও অন্য রকম মজা ছিল। ক্লাস ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত তিন-চারটি স্কুলে পড়েছি। মনে আছে যে মাগুরা সরকারি বিদ্যালয়ে পড়েছি। তবে একদম প্রথম স্কুল কোনটা, তা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না।
প্রশ্ন :
কেমন ছিল বিকেএসপির দিনগুলো?
খুব মজার ছিল। এতটাই মজার ছিল যে বলে শেষ করা যাবে না। একেকটা দিন নিয়ে একেকটা বই লেখা যাবে। প্রথম তিন মাস একটু খারাপ লাগত। পরে অভ্যাস হয়ে যায়। একা থাকতাম বলে কখনো কান্নাকাটি করিনি। চিঠি লিখতাম। বিকেএসপিতে ইলেকট্রনিকস কোনো কিছুই—যেমন, মোবাইল রাখতে দিত না। সে সময়টা অন্য রকম ছিল। প্রতি মাসে একবার প্যারেন্টস ডেতে যেন ঈদ করতাম। বিকেএসপির মূল গেট থেকে একদম হোস্টেল পর্যন্ত সোজা একটা রাস্তা আছে। দেখা যেত অভিভাবকেরা ওদিক থেকে কাঁদতে কাঁদতে আসছেন। এদিক থেকে ছাত্ররা কাঁদতে কাঁদতে যাচ্ছে। পুরো বাংলা সিনেমা! হি হি হি...বাবা-মা চলে গেলে দেখা যেত রুমমেটরা কাঁদছে। খাবার ভরা ঘরে সবাই সবারটা খাচ্ছে। সেটা ঈদের চেয়েও বেশি আনন্দের লাগত।
প্রশ্ন :
তখনকার রুমমেট কাউকে কি আমরা চিনি?
রুমমেটদের কেউ অতটা পরিচিত নয়। তবে সহপাঠী ছিল শাহাদাত হোসেন রাজীব। এ ছাড়া মুশফিক ভাই, নাজমুল ভাই, শামসুর ভাই এক ব্যাচ বড় ছিলেন। আর রাজ ভাই (আবদুর রাজ্জাক) তখন পাস করে বের হয়ে গিয়েছিলেন।
প্রশ্ন :
ছোটবেলায় আপনার বাবা নাকি বেশ কয়েকটি ব্যাট কেটে ফেলেছেন। কয়টি ব্যাট কেটে ফেলেছেন?
তিন-চারটার মতো।
প্রশ্ন :
কেন, তিনি কি চাইতেন না আপনি ক্রিকেটার হন?
চাইতেন না, তা নয়। চাইতেন। কিন্তু বিকেলবেলায় কোচিং থাকত। কোচিং তো আমি করতামই না। ক্রিকেট খেলে বেড়াতাম। তাই আরকি...।
প্রশ্ন :
২০০৬ থেকে ২০১৪—এই আট বছরে আপনার মধ্যে ক্রিকেটীয় পরিবর্তন কতটুকু হয়েছে, সেটা তো আমরা জানি। কিন্তু ক্রিকেটের বাইরের জীবনটা কেমন বদলেছে?
(হেসে) খুব বেশি পরিবর্তন আসলে হয়নি। আগেও বিকেএসপির কারণে বাইরে বের হতে পারতাম না। আর এখনো বাসা থেকে বেশি বের হতে পারি না।
প্রশ্ন :
বিখ্যাত হওয়ার পর পুরোনো বন্ধুদের কাছে ‘আমাদের ভুলে গেলি’ ধরনের কথা শুনতে হয়েছে?
নিজেকে আমি বিখ্যাত মনে করি না। আর কেউ এ ধরনের কথা বলেওনি। খেলার কারণে বাইরে থাকতে হয়। দেখা করার সুযোগ পাওয়া যায় না। বন্ধুরাও বোঝে, ওরা তো আর বোকা নয়।
প্রশ্ন :
সাধারণ জীবনটা মিস করেন?
সেভাবে মিস করি না, কারণ যদি কখনো হঠাত্ করে মনে হয় যে কোথাও গেলে ভালো লাগবে, আমি সেখানে চলে যাই। এমনকি আমি টিএসসিতেও গিয়েছি অনেকবার। শুক্রবার বিকেলবেলা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছি।
প্রশ্ন :
নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না?
নাহ্। আমার ফ্রেন্ড সার্কেল অনেক বড়। তারাই আমাকে ঘিরে থাকে। তারা থাকলে আশপাশে ১০ গজের মধ্যে কেউ আসতে পারে না।
প্রশ্ন :
সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে ওপার বাংলার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচুর সাকিব-বন্দনা করেছে। জগমোহন ডালমিয়ার কন্যা বৈশাখী ডালমিয়া আপনাকে নিয়ে বিশেষ কলাম লিখেছেন। শাহরুখ বলেছেন আপনাকে কাঁধে তুলে নাচতে চান। আপনার ওপর এসব উচ্ছ্বাস কেমন প্রভাব ফেলে?
আমি আসলে এসব কিছুই জানতাম না। সবই অন্যদের কাছ থেকে শোনা। খেলার সময় শুধু খেলাতেই মনোযোগ দিতাম। তা ছাড়া এসব বিষয় আমার ওপর তেমন প্রভাব ফেলে না।
প্রশ্ন :
বাইরের সেসব লিগ খেলার পর আমাদের ঘরোয়া লিগ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য...
ঘরোয়া লিগ একধরনের টুর্নামেন্ট। আইপিএল, বিগব্যাশ ওগুলো আরেক ধরনের টুর্নামেন্ট। তবে বিপিএলের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের মাঠের ক্রিকেট কোনো অংশে কম নয়।
প্রশ্ন :
খেলার সময় উইকেটের পেছন থেকে মুশফিক ভাইকে প্রায়ই দেখা যায় আপনাকে ‘ময়না’ বলে উত্সাহিত করতে। এই নামটি কীভাবে এল?
বিকেএসপিতে একটা ক্যাম্প হয়েছিল। সেখানে অনেক খেলোয়াড়ই ছিল। সেখানেই কোনো এক বড় ভাই বলেছিলেন। কী কারণে নামটা দেওয়া হয়েছিল, সেটা মনে নেই। মজা করে দিয়েছিল কেউ। এর পরেই সেখানে নামটা ছড়িয়ে পড়ে।
প্রশ্ন :
আপনাকে কে কোন নামে ডাকে?
বাবা-মা এবং মাগুরার বন্ধুরা ফয়সাল নামে ডাকে। আর অন্য সবাই সাকিবই ডাকে। দলে কেউ কেউ কখনো ময়নাও বলে।
প্রশ্ন :
যে ম্যাচটির কথা কখনো ভুলতে পারবেন না...
আগে তো ওই রকম ম্যাচ আসুক। অনেক ভালো ম্যাচই খেলেছি। তবে আরও ভালো ফল আশা করি। সামনে আরও ভালো ম্যাচ আসবে।
প্রশ্ন :
জার্সি নম্বর ৭৫-এর পেছনে নির্দিষ্ট কোনো কারণ আছে কি?
না, তেমন কোনো স্পেশাল কারণ ছিল না। কিন্তু এখন স্পেশাল। বোর্ড থেকে দিয়েছিল। এখন চাইলে পরিবর্তন করা যায়, কিন্তু করিনি।
প্রশ্ন :
চাপ নাকি উৎসাহ, আপনার কাছে ‘১৬ কোটি মানুষ’ মানে কোনটা?
চাপ ও উৎসাহ দুটোই। ভালো-খারাপ মিলিয়েই তো মানুষ। কারওটা চাপ মনে হয়। কারওটা উৎসাহ দেয়, এই আরকি!
প্রশ্ন :
ক্যারিয়ারের খারাপ সময় যখন আসে, তখন কি মনে হয় যে ‘আমি আর পারব না’?
না। বড় একটা সময় ছিল যখন আসলে রান পাচ্ছিলাম না। যেহেতু আমার বোলিং-ব্যাটিং দুটোই ছিল, তাই একটা অথবা আরেকটার জন্য নিয়মিত দলে সুযোগ পেতাম। রান না পাওয়াটা অবশ্যই আমার জন্য অনেক কঠিন সময় ছিল। তবে সেখান থেকেও অনেক কিছু শেখা যায়। আর সে সময় আমাকে যাঁরা সমর্থন দিয়েছেন, তাঁদের সেই সমর্থনটা আমার অনেক কাজে লেগেছে।
প্রশ্ন :
নিজের খারাপ সময়ের পর আবার যেভাবে ফিরে আসেন...
নিজেকে বোঝানো আসলে মুশকিল। তা-ও বোঝাতে পারি। জেদটা কাজ করে। জেদের কারণেই সামলাতে পারি।
প্রশ্ন :
দলের অতি প্রয়োজনীয় মুহূর্তে যখন ননস্ট্রাইকে থেকে অন্য ব্যাটসম্যানকে আউট হয়ে ফিরে যেতে দেখেন, তখন আপনার মনে কী চিন্তা খেলা করে?
সে অনুভূতি আসলে বোঝানো মুশকিল। অন্যজন বা নিজে আউট হলে কেমন লাগে, সেখানে নিজে না থাকলে আসলে বোঝানো সম্ভব নয়।
প্রশ্ন :
অসম্ভবকে সম্ভব করা অনন্তর কাজ। আর সাকিবের কাজ?
(হাসি) আমার বিশেষ কোনো কাজ নেই। তবে চেষ্টা করি সব সময় ভালো খেলতে।
প্রশ্ন :
অনেক আগে একবার বলেছিলেন, আমাদের রোল মডেলের অভাব। এখন উঠতি বয়সের কেউ যখন বলে, ‘বড় হয়ে সাকিবের মতো হতে চাই’, তখন কি মনে হয় যে সেই অভাবটা পূরণ করতে পেরেছেন?
এটা আসলে তারা ও তাদের অভিভাবকেরাই ভালো বলতে পারবেন। আমি জানি না...
প্রশ্ন :
ক্রিকেট ছাড়া আর কী ভালো পারেন?
মোটামুটি সব খেলাই ভালো পারি। ক্রিকেট ছাড়াও ফুটবল ভালো খেলতাম। স্কুল টিমে খেলেছি। আমি ক্যারম ও ব্যাডমিন্টনে স্কুল চ্যাম্পিয়ন ছিলাম।
প্রশ্ন :
‘স্বপ্নের গল্প’ নামে কিশোর আলোয় একটি গল্পলেখা প্রতিযোগিতা হয়েছিল। সেখানে সবচেয়ে বেশি গল্প এসেছিল ‘ক্রিকেটের নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ’ বিষয়ে। সবার এই স্বপ্নটা কবে নাগাদ পূরণ হতে পারে বলে মনে করেন?
বলা মুশকিল! তবে এশিয়ায় পরে কখনো বিশ্বকাপ খেলা হলে আমাদের একটা ভালো সুযোগ থাকবে।
প্রশ্ন :
যদি কোনো দিন ঘুম থেকে উঠে দেখেন ক্রিকেট খেলা ভুলে গিয়েছেন, তখন কী করবেন?
ভুলে যাব না। আমার মেমোরি খুব শার্প আছে। হা হা হা...।
প্রশ্ন :
শাহরুখ খানের সঙ্গে দেখা হলে আলাদা কোনো উচ্ছ্বাস কাজ করেছে কি?
দেখা হতে হতে আসলে আলাদা কিছু মনে হয়নি। প্রথমবার দেখা হওয়ার সময়ও যে বেশি কিছু মনে হয়েছিল, তা নয়। আসলে সেভাবে কোনো উচ্ছ্বাস কাজ করেনি।
প্রশ্ন :
আপনার অভিনীত একটি মুঠোফোন অপারেটরের বিজ্ঞাপনচিত্রে দেখা যায়, আপনার প্রতি ভালোবাসা একেকজন একেকভাবে প্রকাশ করছে। বাস্তবে কী এমনটা কখনো হয়েছে?
হ্যাঁ, এ রকম ঘটনা অনেক ঘটেছে। কিন্তু বিয়ের পর এসব বিষয় একটু কমে গিয়েছে (হেসে)। এই তো, সেদিনই একজন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কেজি ল্যাংড়া আম আমার বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। খুব মজার ছিল। তা-ও ফরমালিন ছাড়া। হা হা হা...।
প্রশ্ন :
মাঠের শিশির নাকি ঘরের শিশির—কোনটাতে বেশি ভয়?
(হাসি) কোনোটাই ভয় পাই না।
প্রশ্ন :
আপনি বিভিন্ন সাক্ষাত্কারে বলেছেন, আপনার প্রিয় অভিনেত্রী তিশা। তিশা আপু কিশোর আলোতে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেছেন, তাঁরও প্রিয় খেলোয়াড় আপনি। কোনো সমালোচনায় কান না দিয়ে তিনি আপনাকে এগিয়ে যেতে বলেছেন। তাঁকে আপনার কী বলার আছে?
(হাসি) ওনার উপদেশটা নিলাম। উনি তো অনেক ভালো একটা উপদেশ দিলেন। উনি নিজেও ওই উপদেশটা অনুসরণ করলে আর কিছু লাগবে না।
প্রশ্ন :
একজন কিশোর ক্রিকেটারের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
পড়াশোনা ঠিকভাবে করো। খেলাটা আনন্দ হিসেবে নাও। বেশি সিরিয়াস হোয়ো না যে আমি ক্রিকেটারই হব। কারণ, তুমি নিজেও জানো না যে তুমি কী হবে। তাই পড়াটা চালিয়ে যাও, বিকেলে খেলো। বড় হতে হতে আস্তে আস্তে বুঝতে পারবে তুমি কী হবে।
প্রশ্ন :
ক্রিকেট বল (কাঠের) নাকি টেনিস বল, কোনটা দিয়ে শুরু করা উচিত?
টেনিস বলেই শুরু করা উচিত। ছোটদের হাত-পা যেহেতু নরম থাকে, তাই ক্রিকেট বল দিয়ে আঘাত পাওয়ার একটা আশঙ্কা থেকে যায়। সে জন্য ক্রিকেট বলে শুরু না করাটাই ভালো। আমি বিদেশেও দেখেছি টেনিস বল দিয়ে শুরু করতে।
প্রশ্ন :
বাংলাদেশ নিয়ে কী ধরনের স্বপ্ন দেখেন?
স্বপ্ন অনেক আছে। অনেক ধরনের আছে। স্বপ্নের কোনো শেষ নেই। আর আমার মাথার ভেতর অনেক চিন্তাই ঘুরতে থাকে। অনেক স্বপ্নই দেখি সাধারণ চিন্তার বাইরে।
প্রশ্ন :
আমরা চাই আপনি সারা জীবন খেলুন। কিন্তু সবাই তো চিরদিন খেলেন না। অবসর নিতেই হয়। আপনি কবে নাগাদ অবসর নিতে পারেন?
আর সাড়ে নয় বছর পরে। এখন আমার বয়স ২৭। তাহলে মোটামুটি ৩৬ বছর বয়সে অবসরে যাব।
প্রশ্ন :
অবসরের পরে কী করবেন?
দেখি! একটা বড় বাসা নেওয়ার চেষ্টা করব। একটা বড় হোম থিয়েটার রাখব। নিজের জন্য একটা ইজিচেয়ার রাখব। খেলা দেখতে দেখতে বসে চা-বিস্কুট খাব আর বলব, প্লেয়াররা এসব কী খেলে! হা হা হা... আমরা দারুণ খেলতাম!