মেট্রোরেলে পকেটমার উঠলে কী করা হয়?

মেট্রোরেলফাইল ছবি

ঢাকার মেট্রোরেলে চড়েছ কম? তোমরা যারা ঢাকায় থাক, অনেকেই হয়তো মেট্রোরেলে যাতায়াত করেছ। দরকারে করেছ, অথবা শখ করেই সেরে নিয়েছ মেট্রোভ্রমণ। ঢাকার বাইরে থেকেও অনেকেই রাজধানীতে এসে মেট্রোতে চড়ার অভিজ্ঞতা নিয়েছ।

মেট্রো নিয়ে কিছু প্রশ্ন সবার মনেই আসতে পারে। যারা মেট্রোতে চড়েছ, আর যারা চড়োনি, সবার মনেই এসব কৌতূহল থাকা স্বাভাবিক। মেট্রো নিয়ে তোমাদের মনে যেসব জিজ্ঞাসা আসতে পারে, সেসব আমরা তুলে ধরেছিলাম ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) ইফতিখার হোসেনের কাছে। তিনি কিশোর আলোর পাঠকদের জন্য সানন্দ জবাব দিয়েছেন। প্রশ্ন আর উত্তরগুলো নিচে দিচ্ছি:

১. শিশুদের জন্য কি মেট্রোরেল ফ্রি? টিকিট লাগবে না? কত বছর পর্যন্ত ফ্রি?

উত্তর: শিশুদের জন্য মেট্রোতে টিকিট লাগবে না। এটা বয়স দিয়ে বিচার করা হয় না, উচ্চতা দিয়ে হয়। তিন ফুট পর্যন্ত কারও জন্য টিকিটের দরকার পড়বে না। তবে, তার সঙ্গে অবশ্যই বড় কোনো সঙ্গী থাকতে হবে।

এই প্রশ্নের উত্তর জানার পর আমাদের প্রশ্ন ছিল, তাহলে বামনদের জন্যও কি ফ্রি?

মহাব্যবস্থাপক হেসে বলেছেন, যেহেতু নিয়মটা হলো তিন ফুট পর্যন্ত টিকিট লাগবে না, কাজেই এর চেয়ে ছোট যে কেউই বিনা টিকিটে প্রাপ্তবয়স্ক সঙ্গীর সঙ্গে মেট্রোতে ভ্রমণ করতে পারবেন।

২. টিকিট নিয়ে অটোমেটিক গেটে পাঞ্চ করলে পাল্লা খুলে যায়। তখন ঢোকা বা বেরোনো যায়। কিন্তু কেউ যদি আরেক যাত্রীর একেবারে পেছন পেছন ঢুকে পড়েন, তাহলে তো তিনিও বিনা টিকিটে ঢুকতে পারবেন! তাঁকে আটকাবেন কীভাবে?

উত্তর: টিকিট পাঞ্চ করা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য পাশেই দ্বাররক্ষী থাকেন। তাঁরা খেয়াল করেন। কাজেই ঢোকার সময় বা বেরোনোর সময় বিনা টিকিটের যাত্রী ধরা পড়বেনই। আর পুরো মেট্রোরেল এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায়। সবকিছু রেকর্ড হচ্ছে। কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে তাঁকে ধরে ফেলা খুবই সহজ।

তবে আশার কথা হলো, এখনো কেউ নিয়ম ভঙ্গ করেনি। টিকিট পাঞ্চ না করে ঢুকলে দ্বাররক্ষীরা তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন যাত্রী আবার পাঞ্চ করেন অথবা ভেতর থেকে আরেকটা টিকিট কেটে নেন।

বিনা টিকিটের যাত্রীকে ‘ডিটেনশনে’ নেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এখন পর্যন্ত কাউকে এই সাজা দেওয়ার দরকার পড়েনি।

ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) ইফতিখার হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

৩. মেট্রোরেলের আসনগুলোয় কাদের বসার অধিকার আগে?

উত্তর: প্রবীণ নাগরিক, প্রতিবন্ধী, অন্তঃসত্ত্বা, সন্তান কোলে মানুষ, অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য আসন ছেড়ে দেওয়ার কথা সব সময় বলা হয়। এই নোটিশ ট্রেনে লেখা আছে। বলাও হয়। লিফটের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষ, প্রবীণ, অসুস্থ মানুষ, সন্তান কোলে যাত্রীদের জন্য লিফটে অগ্রাধিকার।

৪. আপনারা ঘোষণা দিয়ে থাকেন যে এস্কেলেটরে একপাশে দাঁড়ান। যাঁরা হেঁটে যেতে চান, তাঁদের জায়গা দিন। যাঁরা দাঁড়াবেন, তাঁরা এস্কেলেটরের কোন দিকে দাঁড়াবেন? বাঁয়ে না ডানে?

উত্তর: সব সময় এস্কেলেটরের বাম দিকে দাঁড়াবেন। ডান দিকে ফাঁকা রাখতে হবে। যাঁরা দ্রুত হেঁটে যেতে চান, তাঁদের জায়গা দেওয়ার জন্য।

৫. মেট্রোরেলে যদি পকেটমার ওঠে, তাকে কীভাবে ধরা হবে?

উত্তর: এই ঈদের আগে এ রকম দুটো ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কাছে অভিযোগ এল যে ট্রেনে ব্যাগ থেকে জিনিস সরানোর ঘটনা ঘটেছে। এটা ঘটেছে আগারগাঁও স্টেশনে। আমরা সিসিটিভিতে ফুটেজ দেখলাম। তারপর অপরাধীকে শনাক্ত করে তাঁকে ধরে ফেলা হলো। তাঁর স্বীকারোক্তি থেকে এক নারীসহ চারজন অপরাধীকে ধরে ফেলা হয়েছে। এরা একটা চক্র ছিল।

এ ছাড়া আরও একটা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। পুরো মেট্রো এলাকা সিসিটিভির শক্তিশালী ক্যামেরার অধীন। এখানে অপরাধ করে কেউ পার পাবেন না।

৬. ঈদের পর দুটো ট্রেনের বিরতি কমিয়ে এনে ট্রেনযাত্রা ঘন ঘন করার কথা শোনা গিয়েছিল। ট্রেনের বগিও বাড়ানোর কথা শুনেছিলাম। এটা কত দূর এগুলো?

উত্তর: ট্রেনের বগিসংখ্যা আপাতত বাড়ছে না। তবে দুটো ট্রেনের মাঝখানের সময় কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো হবে। এটা করতেও মাস তিনেক লেগে যাবে বলে মনে হয়।

আপনাকে ধন্যবাদ। ঈদ মোবারক।

—সবাইকে ধন্যবাদ। ঈদ মোবারক।