স্বপ্নপূরণ

অলংকরণ: রাকিব রাজ্জাক

‘আমাকে ক্ষমা করো,’ আর্তনাদের সুরে বলে উঠল বাঘ। হরিণের ক্রূর হাসিতে ঝংকার দিয়ে উঠল সমস্ত বন। চোখ রাঙিয়ে হরিণ বলল, ‘পৃথিবীতে থাকতে তো কত জ্বালিয়েছিস। সেবার কত করে বললাম, আমাকে মাফ করতে। তা তো করলি না।’ ‘কিন্তু তোমার তো এখন খিদে নেই,’ কান্নাভরা চোখে বলল বাঘ। ‘তোরও তো সেদিন খিদে ছিল না, শুধু তোর বন্ধুদের দেখানোর জন্য তুই আমার সাথিদের মেরে ফেললি।‘ এমন সময় এল বানর। সে বনের সেনাপতি। বানর বলল, ‘কী সমস্যা? চলো রাজার দরবারে। বনের মধ্যে কোনো অশান্তি নয়।‘ রাজার দরবারের উদ্দেশে রওনা হলো ওরা। বনের রাজা ছোট্ট খরগোশ। রাজা রায় দিলেন, বাঘকে ক্ষমা করে প্রাণভিক্ষা দিতে। তার বদলে সমগ্র বাঘ জাতি হরিণদের দাস হয়ে থাকবে। কয়েক দিনের মধ্যেই পুরো পালটে গেল বনের চেহারা। হরিণদের সেবায় পুরো বনে ছোটাছুটি করছে বাঘেরা। কেউ হরিণদের পা টিপছে, কেউবা ধুয়ে দিচ্ছে হরিণের শিং। হরিণশাবকেরা বাঘ মামাদের পিঠে চড়ে বনে ঘুরে বেড়াতে লাগল। এমন সময় হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল ছোট্ট হরিণ মায়ার। এখনো তার চোখ ভেজা। কাল বাঘের আক্রমণে বন্ধুদের হারিয়েছে সে। পাশে থাকা বন্ধু খরগোশকে সে বলল, ‘জানিস কী সুন্দর স্বপ্ন দেখলাম! একদম উল্টো!’ ঠিক তখনই শোনা গেল কান্নাভরা বাঘের কণ্ঠ, ‘আমাকে ক্ষমা করুন।’ এরপর শোনা গেল ক্রূর হাসি। যাক, তাহলে স্বর্গে থাকা ছোট্ট হরিণশাবকের স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত পূরণ হলো।

লেখক: শিক্ষার্থী, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা