এক বনে এক সিংহ ছিল। সে-ই ছিল সেই বনের হর্তাকর্তা, মানে রাজা আরকি! বনের সব পশুপাখি তাকে ভয় পেত এবং মান্যও করত।
একদিন সেই সিংহ বনের মধ্যে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছিল। ওদিক দিয়ে এক ইঁদুর দৌড়ে যাচ্ছিল। ইঁদুরের দৌড়ে শুকনো পাতায় মচমচ শব্দ হচ্ছিল। ফলে সিংহের ঘুম ভেঙে গেল। আরামের ঘুম ভেঙে যাওয়ায় সিংহ ভীষণ রেগে গেল। সে খপ করে ইঁদুরকে ধরে ফেলল। ভয়ে তো ইঁদুর প্রায় আধমরা। ইঁদুর সিংহকে অনেক কাকুতি-মিনতি করে বলল, সিংহ মশাই, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনার উপকার করব।
ইঁদুরের এ কথা শুনে সিংহ রাগের বদলে হো হো শব্দে বন কাঁপিয়ে হেসে উঠল। তারপর ইঁদুরকে বলল, তোর মতো পুঁচকে ইঁদুর আমার কী উপকার করবে! যা, তোকে ছেড়ে দিলাম। আর কক্ষনো আমাকে জ্বালাতন করবি না।
সিংহের কবল থেকে ছাড়া পেয়ে ইঁদুর হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। এদিকে একদিন হয়েছে কি জানো, একদল শিকারি ওই বনে এসেছিল শিকার করতে। তারা রাজামশাই মানে সিংহকেও রেহাই দিল না। শক্ত এক জালে তাকে বন্দী করে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলল। সিংহ বাঁধন ছেঁড়ার অনেক চেষ্টা করল, কিন্তু তার তর্জন-গর্জনই সার হলো। তবে তার বন কাঁপানো গর্জনে একটা লাভ হয়েছিল। সেটা হচ্ছে, তার গর্জন সেই ইঁদুরের কানে পৌঁছেছিল। ইঁদুর সেখানে ছুটে এল। আর তারপর তার ধারালো দাঁতে সিংহের বাঁধন কেটে দিয়ে সিংহকে বলল, মনে আছে, আমাকে পুঁচকে বলে তুমি একদিন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছিলে? এখন দেখলে তো ছোট্ট ইঁদুরও তোমার উপকার করতে পারে!