ভাঙনের পূর্বে
ঘরের ভেতর প্রবেশ করে হকচকিয়ে গেলেন আনিস সাবেত। নিজের বাসা ছেড়ে সদ্য ভাড়া বাসায় এসে উঠেছেন। তাঁর একমাত্র ভাগনে মিজানকে বলেছিলেন নতুন বাসা ঠিক করে দিতে। এই বাসা সম্পর্কে মিজান বলেছিল, ‘বাসা ভালো। তবে সমস্যা একটাই। বাড়িটা একদম গোরস্তানের গা ঘেঁষা। এ জন্যই ভাড়া হয়তো কম।’
কম দামে এক রুম হলেই আনিস সাবেতের চলত, তাই তিনি আর কষ্ট করে বাসা দেখতে আসেননি। বাড়ির পাশে গোরস্তান থাকা তাঁর জন্য অসুবিধার কিছু না। তবে কোনো বাড়ির এত কাছে তিনি কখনো গোরস্তান দেখেননি। ঝিগাতলার নিজের ফ্ল্যাট ছেড়ে দুই কামরার ভাড়া বাড়িতে ওঠার পেছনে তাঁর যুক্তি হলো, ডাক্তারের পরামর্শে তিনি হাওয়া বদল করতে এসেছেন। সাধারণত, বিত্তবানেরা হাওয়া বদল করতে কক্সবাজার, দার্জিলিং বেড়াতে যান। কিন্তু তেমন টাকাপয়সা তাঁর পকেটে নেই। জমানো টাকার পরিমাণও একেবারে নগণ্য। তাই তিনি বেড়াতে এসেছেন ঢাকা থেকে দূরে নির্জন গোরস্তানকে পাশে রেখে একতলার দুই কামরার ঘরে। এর পেছনের আসল রহস্য তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া। বিয়ের পর থেকে তাঁদের ঝগড়া সারা মাস লেগেই থাকে। এবার ঝগড়া প্রবল রূপ ধারণ করার পরই তিনি ঠিক করলেন, শ্বশুরের দেওয়া বাসায় আর থাকা চলবে না। যত দিন না পর্যন্ত তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছে ক্ষমা চাইছেন, সবকিছু নিয়ে খোঁটা দেওয়া বন্ধ না করছেন, তত দিন তিনি ওই পথ মাড়াবেন না। তা ছাড়া দেশের এই মাতাল করা সময়ে কোলাহল ও অশান্তিমুক্ত পরিবেশে একটু শান্তিতেও থাকা যাবে।
তাই গোরস্তান-সংলগ্ন তিনতলার বিল্ডিংয়ে নিচতলায় আনিস সাবেত নতুন আস্তানা গাড়লেন। জায়গাটা তাঁর পছন্দ হলো। বারান্দায় দাঁড়ালে গোরস্তানের পুরো অংশটা দেখা যায়। গোরস্তান জায়গাটা বেশ রোমাঞ্চকর। কী যেন ভিন্নতা আছে, তিনি ধরতে পারলেন না। বাঁধাই করে দেওয়া কবরগুলো ঝকঝক করছে। এমনকি বাঁশ দিয়ে ঘেরা কবরগুলোতেও নিয়মিত যত্নআত্তির ছাপ। কোথাও বাড়তি আগাছা নেই। নষ্ট হয়ে ভেঙে পড়া বাঁশের বেড়া নেই। মুগ্ধ হলেন তিনি। লেখালেখি তাঁর পেশা। মূলত গল্প-উপন্যাস লেখেন। কল্পনার সাগরে ভেসে গল্প লেখা তাঁর পেশা ছাড়া শখও বটে। একজন লেখকের জন্য উদ্ভট কিছুতে ভালো লাগা অস্বাভাবিক কিছু না। লেখকেরা হবেন কল্পনাপ্রবণ। তাঁদের চিন্তায় স্বাভাবিক-অস্বাভাবিক নানা কিছু আসতে পারে। কিন্তু কবরখানা দেখে কবে কার ভালো লেগেছে?
‘স্যার কি নতুন আইলেন?’ হুট করে বলে উঠলেন কেউ।
আনিস সাবেত চমকে উঠে দেখলেন তাঁর সামনে কোদাল হাতে রোগামতো একজন বৃদ্ধ দাঁড়িয়ে আছেন। খোলা জানালার সামনে দাঁড়িয়ে গভীর চিন্তায় ছিলেন বলে প্রথমে তাঁকে খেয়াল করেননি। লোকটি আর তাঁর মাঝে কয়েক হাতের তফাতমাত্র। মাঝে শুধু গোরস্তানের দেয়াল ও তাঁর বারান্দায় গ্রিল।
‘হ্যাঁ, তা এলাম। আপনি কে ভাই, এই সময় গোরস্তানে কী করেন?’ আনিস সাবেত জিজ্ঞেস করলেন।
‘স্যার আমি হইলাম নুরু মিয়া, গোরস্তানের কিয়ারটিকার।’
‘আচ্ছা। এত বড় গোরস্তান কি একাই দেখাশোনা করেন? সব দেখি ঝকঝকে–তকতকে।’
পানখাওয়া দাঁত বের করে নুরু মিয়া জবাব দিলেন, ‘জে স্যার। আমার কামই তো এইডা। ওপরআলা দায়িত্ব দিছে। ভালামতো না করলে পরকালে জবাবডা দিমুনে কী, কন তো?’
‘থাকেন কোথায়?’
‘এইখানেই। ওই যে সোজা কাঁডালগাছটা দেখতেছেন। ওটার পেছনে আমার ছাপরা। কব্বর নিয়াই তো আমার সংসার। তাই থাকি এহানেই। যামু আর কই?’
আনিস সাবেত আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু নুরু মিয়া বলে উঠলেন, ‘আজ চলি স্যার। কব্বর খুদা লাগব। বিকেল চাইরডায় জানাজা। এরপরই লাশ আসনের কথা। দেরি করন যাইব না। দেশের খবর ঠিক নাই, আর এত মরা মানুষ।’
নুরু মিয়া চলে যাচ্ছেন। আনিস সাবেত লক্ষ করলেন, নুরু মিয়া কোদাল হাতে হেঁটে যাচ্ছেন ঠিকই। তবে ডান হাতটা একটু বাঁকিয়ে হাঁটছেন। এমনভাবে হাঁটছেন, যেন মনে হচ্ছে, ডান হাতটি তিনি কারও দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন।
‘তাই বলে সব সময় আপনি কেন করবেন? আপনার বয়স হয়েছে। এই বয়সে এত ধকল সইতে পারবেন?’
সেদিনের পর থেকে একটা সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। আনিস সাবেত এখন এই বাড়িতে বিরক্ত বোধ করছেন। স্ত্রী তাঁর কোনো খোঁজও করেননি। চিঠি লেখা তো বহু দূরের কথা। এ জন্য তিনিও করেননি। এ কথা ভেবেই তাঁর মনে হলো, চিঠি সে কীভাবে লিখবে? তিনি যে এখানে আছেন, সেটা মিজান ছাড়া আর কেউ জানে না। কিন্তু সুলতানা মিজানকে একবারের জন্যও জিজ্ঞেস করল না? মিজানকে ধরলেই তো সে সবকিছু বলে দিত। প্রচণ্ড রাগ করে এভাবে বের হয়ে এসেছেন ঠিকই। এখন মনের ভেতর আনচান করছে। আবার রাগও হচ্ছে। এই দুই অনুভূতির সঙ্গে নতুন এই বাড়িতে রীতিমতো যুদ্ধ করছেন তিনি। সাত দিনে লাভের লাভও কিছু হয়নি তাঁর। একটা পাতাও লিখতে পারেননি। তা ছাড়া তাঁর মাথায় কোনো গল্প আসছে না। প্রায় সময় তিনি বারান্দায় বসে অলস সময় কাটান আর নুরু মিয়ার কাজকর্ম দেখেন।
প্রথম দিনের পর থেকে তাঁর সঙ্গে আনিস সাবেতের আর কোনো কথা হয়নি। তবে এ সাত দিন নুরু মিয়ার কিছু স্বভাব তিনি লক্ষ করেছেন। নুরু মিয়া প্রায় সারা দিন কবরের আশপাশে ঘোরাফেরা করেন। বিড়বিড় করে আনমনে কথা বলেন। আর এ পর্যন্ত এ গোরস্তানে যতজনকে দাফন করা হয়েছে। তাঁদের সবার কবর নুরু মিয়া নিজ হাতে খুঁড়েছেন। কবর তৈরি করা নিয়ে কয়েকবার কথা–কাটাকাটি পর্যন্ত হয়ে গেছে। এক সপ্তাহে তিনবার এ দৃশ্য হজম করেছেন আনিস সাবেত।
অষ্টম দিনে সকালে হইচই শুনে আনিস সাবেত ঘুম ভেঙে গেল। বারান্দায় গিয়ে দেখেন সেই পুরোনো দৃশ্য। কবর খোঁড়ার জন্য মৃতের বাড়ি থেকে লোক এল। নুরু মিয়ার এক কথা, কবর তিনি খুঁড়বেন। কাউকে এখানে হাত লাগাতে দেবেন না। বৃদ্ধ বয়সেও তাঁর ভেতর শক্তির অভাব নেই।
সেদিন বিকেলে নুরু মিয়াকে তাঁর বারান্দার আশপাশে দেখে চট করে ডাকলেন আনিস সাবেত, ‘কেমন আছেন নুরু মিয়া?’
একগাল হেসে নুরু মিয়া জবাব দিলেন, ‘আপনাদের দোয়াতে বাঁইচা আছি, স্যার।’
নুরু মিয়াকে দেখে হুট করে তাঁর মনে হলো, আজ একবার গোরস্তানটা ঘুরে এলে মন্দ হয় না। ‘নুরু মিয়া, গোরস্তানের গেটটা কোন দিকে?’
আনিস সাবেতের আগ্রহ দেখে নুরু মিয়ার মুখের হাসি আরও দীর্ঘ হলো। খুব দ্রুত জবাব দিলেন তিনি।
‘গোরস্তানে আইবেন? আহেন। আপনের বাড়ি থেকে বাইর হইয়া হাতের ডাইনে।’
গোরস্তানের ভেতর এসে আনিস সাবেতের মন ভালো হয়ে গেল। ভেতরের আবহাওয়া আরও ঠান্ডা আর মোলায়েম। কবরে শুয়ে থাকা প্রত্যেক মৃত ব্যক্তি যেন খুব শান্তিতে ঘুমাচ্ছেন। তিনি মনে মনে অবাক হলেন। এমন একটি জায়গা তাঁকে এভাবে আকৃষ্ট করে ফেলল কীভাবে?
নুরু মিয়াকে খুঁজে পেতেই সরাসরি প্রশ্ন করলেন তিনি। ‘আপনার কবর খোঁড়ার এত আগ্রহ কেন? আসার পর থেকে দেখছি, কারও কবর নিজ হাতে না খুঁড়ে ছাড়েন না।’
‘স্যার, দায়িত্ব তো আমার এইডাই। পঁয়ত্রিশ বছর ধরে কইরা আসতেছি। এখন ক্যামনে দিমু?’
‘তাই বলে সব সময় আপনি কেন করবেন? আপনার বয়স হয়েছে। এই বয়সে এত ধকল সইতে পারবেন?’
‘কী করুম স্যার বলেন, মরার আগপর্যন্ত করতে হইব। আমি যে কথা দিছি।’ সামান্য জড়ানো কণ্ঠে জবাব দিলেন তিনি।
আনিস সাবেত আগ্রহের সঙ্গে প্রশ্ন করলেন, ‘কাকে কথা দিয়েছেন?’
প্রথমে আমতা আমতা করলেও নুরু মিয়া তাঁর ঘটনা বলতে শুরু করলেন। ‘আমি জীবনে শাদি দুইটা করছিলাম স্যার। বাচ্চাকাচ্চার শখ ছিল। কিন্তু ওপরআলা কখনো আমার দিকে চায়ে তাকায় নাই। সব আশা যখন শ্যাষ দেখছিলাম, তখন ওপরআলা মুখ তুলল। বাচ্চা দিতে গিয়া আমার বউটা মইরা গেল। আমার বয়স তখন সাতচল্লিশের মতো হইব। আমি আমার জীবন দিয়া আমার মাইয়াডারে বড় করার চেষ্টা করতিছিলাম। মাইয়াডা বুবা ছিল স্যার। কতা কইতে পারত না। আমার আগের বউ ওরে দেখতে পারত না। কিন্তু আমি মাইয়াডারে বুকে–পিঠে করে বড় করে তুলতেছিলাম। কিন্তু ওলাওঠায় সব শেষ। বউ গেল, সাথে মাইয়াডাও, আমি বাঁইচা থাকলাম। ওই বছর গ্রামের এমন অবস্থা কব্বর কাটনের মানুষ নাই। আমি জীবনে কব্বর কাটি নাই। কিন্তু মাইয়ার কব্বর আমারেই কাটতে হইল। তখন কী মনে হইল, মনে মনে কইলাম, শালার কব্বর-ই কাটমু। গ্রাম ছাইড়া এদিকে আইলাম। এই গোরস্তান হইল আমার নতুন ঠিকানা। এখন থাকি এইখানেই। কামও আমার একটাই—কব্বর কাটা।’
আনিস সাবেত চুপ করে রইলেন। তারপর নুরু মিয়াকে প্রশ্ন করলেন, ‘আপনার মেয়ে বোবা ছিল?’
‘হ স্যার।’
‘কী নাম ছিল আপনার মেয়ের?’
অনেকক্ষণ পর নুরু মিয়ার গম্ভীর স্বরের জবাব পাওয়া গেল। ‘মরিয়ম।’
তবে দীর্ঘ এক সপ্তাহ পর তাঁর মাথায় গল্প ঘুরপাক খাচ্ছে। চেয়ারে বসে একগাদা কাগজ টেনে নিলেন। দোয়াত থেকে ফাউন্টেন পেনে নতুন কালি ভরলেন। অনেক দিন পর তিনি কিছু লিখতে যাচ্ছেন। উত্তেজনায় তাঁর হাত-পা কাঁপছে। স্বভাবত দিন ও তারিখ লিখলেন। ২৫ মার্চ ১৯৭১। এরপর দ্রুত কলম চলতে লাগল।
দূর মসজিদে মাগরিবের আজানের ধ্বনি ভেসে এল। সঙ্গে দমকা বাতাস টেনে আনল নাম না–জানা এক সুবাস। বুকভরে শ্বাস নিলেন আনিস সাবেত। গায়ের চাদরটা ভালো করে টেনে দিয়ে ভাবলেন, এবারের শীতটা ভালোই পড়েছিল। এই মার্চের শেষের দিকের বাতাসও হাড় প্রায় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। অন্ধকারও হয়ে আসছে এখন। নুরু মিয়াকে আর কিছু না বলে বাড়ির উদ্দেশে হাঁটা শুরু করলেন তিনি। কিছুক্ষণ পর কী মনে করে একবার পেছনে ঘুরে তাকালেন। দেখলেন, সন্ধ্যার আবছা কুয়াশার ভেতর নুরু মিয়া এখনো দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর পাশে লাল জামা পরা ছয় অথবা সাত বছরের একটি শিশু। এক হাত দিয়ে নুরু মিয়ার হাত ধরে আছে। দূর থেকেও বোঝা যাচ্ছে, এই শীতেও তার গায়ে কোনো গরমকাপড় নেই, পা খালি। হালকা কাঁপছে সে। দূর থেকে দেখেও আনিস সাবেত বুঝতে পারলেন, মেয়েটার দুধে আলতা গায়ের রং।
ঠিক তখনই কেউ একজন তাঁর কানে ফিসফিস করে বলল, ‘অত্যন্ত মায়াবতী চেহারার এই মেয়েটি মরিয়ম।’
আনিস সাবেতের তখন মনে হলো, তিনি চশমা ফেলে এসেছেন। দ্রুত চশমা এনে আবার গোরস্তানে এলেন তিনি। ততক্ষণে অন্ধকার আরও জেঁকে বসেছে। ঝিঁঝিপোকার ডাক আর অন্ধকার ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ল না তাঁর। নুরু মিয়াকে ডাকতে গিয়েও ডাকলেন না। তাঁর ঘর থেকে নুরু মিয়ার ছাপরা দেখা যায় না। তবে এখান থেকে যায়। আনিস সাবেত দেখলেন, নুরু মিয়ার ঘরে ক্ষীণ আলো জ্বলছে। নিজের ঘরে ফিরে এসে দ্রুত সিগারেট ধরিয়ে ভাবতে লাগলেন, চশমা না নেওয়াতে ভুলভাল দেখেছেন। এ ছাড়া আর কিছুই নয়।
তবে দীর্ঘ এক সপ্তাহ পর তাঁর মাথায় গল্প ঘুরপাক খাচ্ছে। চেয়ারে বসে একগাদা কাগজ টেনে নিলেন। দোয়াত থেকে ফাউন্টেন পেনে নতুন কালি ভরলেন। অনেক দিন পর তিনি কিছু লিখতে যাচ্ছেন। উত্তেজনায় তাঁর হাত-পা কাঁপছে। স্বভাবত দিন ও তারিখ লিখলেন। ২৫ মার্চ ১৯৭১। এরপর দ্রুত কলম চলতে লাগল।
লেখা শেষ করতে করতে তখন গভীর রাত। একটানা লিখেছেন তিনি। অনেক দিন এভাবে টানা লেখা হয় না। চেয়ার থেকে উঠে এক গ্লাস পানি খেলেন, এরপর সিগারেট ধরিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন। হাতঘড়ি দেখতেই হুট করে মনে পড়ল, রাত বারোটা বেজে গেছে। আজ ২৬ মার্চ। তাঁর স্ত্রীর জন্মদিন। সব অভিমান একনিমেষে উবে গেল, নিজেকে আর সামলে রাখতে পারলেন না।
ভাবতে লাগলেন, এত রাতে ফুল তিনি কোথায় পাবেন? সাদা গোলাপ পাওয়া গেলে খুব ভালো হতো। সাদা গোলাপ সুলতানার খুব পছন্দের। বিকেলে কবরস্থানে তিনি নাম না–জানা ফুলের গাছ দেখেছিলেন। গোলাপ না পাওয়া গেলেও ফুল তো পাওয়া গেল। তাঁর রাগ, অভিমান অনেক। কিন্তু মানুষ হিসেবে তিনি প্রচণ্ড আবেগপ্রবণ। সেই আবেগই তাঁকে কবরস্থানে গিয়ে ফুল খোঁজার সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করল।
ঢাকার রাজপথে ততক্ষণে তাণ্ডব শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু গোরস্তান–সংলগ্ন এই এলাকার এখনো সেই তাণ্ডবের ছোঁয়া পায়নি। বাইরের পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা আনিস সাবেত পাঞ্জাবির ওপরে মোটা শাল জড়িয়ে নিলেন। এরপর সদ্য লেখা গল্পের কাগজগুলো ঢুকিয়ে নিলেন পাঞ্জাবির পকেটে। তারপর দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন।