এখন আমি তোমাদের এমন একটা মজার ঘটনা বলতে যাচ্ছি, যা আমার জীবনে কখনোই ঘটেনি। সেটা দুবছর আগের কথা। তখন আমার বয়স সবে ছয় বছর। এখন আমার বয়স আট।
আমি বৃত্তা কাইসা। তবে নাম নিয়ে কিছু আসে যায় না আমার। মা, বাবা আর আমি ছোট্ট একটা বাড়িতে থাকি। বাড়ির সামনে একটা ছোট উঠান আছে। তবে খুবই নির্জন। আশপাশে কেউ থাকে না। উঠানের সামনে দিয়ে সরু ছোট একটা রাস্তা চলে গেছে। আর এই রাস্তার শেষে অনেক দূরে শহর। বাবা বাগানের মালী। মার্কেট স্কয়ারে ফুল আর শাকসবজি বিক্রি করতে প্রতি বুধ আর শনিবার শহরে যায় সে। এ জন্য যে টাকা পায়, তা যথেষ্ট নয়।
আমার মা বলে, কোনোভাবেই আমাদের সংসারের অভাব কখনো মেটে না। দুবছর আগের সেই সব দিনে সব সময় চাইতাম একটা জিনিস; খুব, খুব করে চাইতাম, আর চাওয়াটা হলো একটা পুতুল। মাঝেমধ্যে হাটের দিন আমিও মা–বাবার সঙ্গে শহরে যেতাম। মার্কেট স্কয়ারে একটা বড় খেলনার দোকান আছে। দোকানটার পাশ দিয়ে যখনই যেতাম, দাঁড়িয়ে দেখতাম ভেতরের পুতুলগুলো। আর খুব করে চাইতাম একটা পুতুল কিনতে। মা কেবল বলত, অসম্ভব। বাবা সবজি বিক্রি করে যে টাকা পেত, তা দিয়ে আমাদের খাবার, কাপড়চোপড় আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেই ফুরিয়ে যেত। আমার নিজের জন্য একটা পুতুল পাওয়ার কোনো আশাই দেখছিলাম না। কিন্তু পাওয়ার ইচ্ছাও কোনোভাবেই ছাড়তে পারছিলাম না।
এবার আমি ঘটনার মজার অংশটার কথা বলব। দুবছর আগে বসন্তকালে একদিন মা আর বাবা কাউস্লিপ ফুল (হলুদ রঙের ছোট ফুল) আর ভুর্জগাছের কাঠ বিক্রি করতে বাজারে গেছে। আমি তখন বাড়িতে। কেন ছিলাম, তা কে জানে! কিন্তু আমি ভাগ্যবতী যে সেদিন আমি বাড়িতে ছিলাম। সেদিন সন্ধ্যার আগ দিয়ে; তখন সবে অন্ধকার নেমে আসছে; মা-বাবা ফেরত আসছে কি না, তা দেখতে উঠানের দিকে গেলাম। আমার মনে হচ্ছিল যে তারা পাহাড়ের দিক থেকে নেমে আসছে।
সেদিনের সন্ধ্যাটা ছিল অদ্ভুত। পুরো উঠান, আমাদের বাড়িটা এমনকি রাস্তারও যেন ওলট–পালট অবস্থা। অদ্ভুত লাগছিল সবকিছু। বাতাসেও অদ্ভুত কিছু একটা টের পাচ্ছিলাম। সেই অদ্ভুত অবস্থা বর্ণনা করার ভাষা আমার জানা নেই। আমি যেই ওখানটায় দাঁড়িয়ে রাস্তার দিকে তাকালাম, একটা ঘোড়া আর সেই ঘোড়ায় টানা একটা গাড়ি আসতে দেখলাম। গাড়িটা দেখে খুব খুশি হলাম আমি। ভাবলাম, মা-বাবা ফিরে আসছে। কিন্তু গাড়িতে তারা ছিল না। মোড়ের কাছাকাছি এলে দেখলাম, অদ্ভুত এক বেঁটে লোক গাড়িটা চালাচ্ছে। আমি উঠানে অপেক্ষা করছিলাম। দেখলাম, তার ঘোড়ার গাড়িটা ক্রমেই আমার দিকে এগিয়ে আসছে। শেষে আমি নিজে তাড়াতাড়ি দরজা খোলার জন্য দৌড়ে গেলাম, যেন লোকটাকে নিচে নামতে না হয়। তোমরা তো জানো, আমাদের বাড়ির পাশ বরাবর রাস্তার কাছে একটা গেট আছে। আমি প্রায়ই কোনো গাড়ি আসতে দেখলে সেই গেট খুলে দিই। মাঝেমধ্যে তারা আমাকে কয়েন দেয়। যখন ওই বেঁটে লোকটার জন্য গেটটা খুলতে গেলাম, তখন আমার কিছুটা ভয় লাগছিল। কারণ, আমি ছিলাম সম্পূর্ণ একা। আর আমাদের আশপাশে কোনো প্রতিবেশীও নেই। তা ছাড়া লোকটা ভালো না খারাপ, তা-ও জানতাম না। কিন্তু তাকে দেখে দয়ালু মনে হলো। সে যখন গেট পার হচ্ছিল, তখন তার ঘোড়াকে গেটের ভেতরে নিল। তারপর থামল। আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল। তারপর বলল, ‘গেট খোলার জন্য আসলেই তোমাকে একটা কয়েন দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার কাছে কোনো কয়েন নেই। তবে তার বদলে অন্য জিনিস আছে। এটা তুমি হাতে নাও।’
আমি তা–ই করলাম। এরপর সেই অদ্ভুত লোকটা আমার হাতে ছোট একটা হলুদ বীজ গুঁজে দিল। দেখতে একবারে চকচকে সোনার মতো।
‘এই বীজ তোমার বাগানে রোপণ কোরো আর প্রতিদিন বেশি বেশি পানি দিয়ো। দেখবে এ বীজ থেকে এমন কিছু গজাবে যাতে তুমি খুশি হবে,’ লোকটা বলল।
এরপর সে তার গাড়ি নিয়ে যেন শূন্যে উড়াল দিল। কয়েক মিনিটের মধ্যে দৃষ্টির বাইরে অদৃশ্য হয়ে গেল গাড়িটা। কেবল চাকার শব্দ শুনতে শুনতে স্তব্ধ হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকলাম অনেকক্ষণ। গাড়িটা দূরে অদৃশ্য হয়ে গেল। সবকিছুই কেমন অদ্ভুতভাবে ঘটে গেল।
অবশেষে আমাদের বাগানে গেলাম। বাড়ির পেছনের বাগানে আমার নিজস্ব ছোট্ট জায়গায় লোকটার দেওয়া বীজটা বুনলাম। এরপর বাড়ির ভেতরে গেলাম। আমার ছোট সবুজ পানি দেওয়ার ক্যানটা নিলাম এবং পুঁতে রাখা বীজের ওপরের মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণ পানি ঢাললাম।
প্রতিদিন অনেকক্ষণ ধরে আমি বাড়ির বাইরে থাকি। সেই জায়গায় পানি দিই আর আগ্রহভরে অপেক্ষা করি, ওখান থেকে কী বের হয়, তা দেখার জন্য। আমার মনে হতো যে গোলাপের ঝাড় বা অন্য কোনো সুন্দর গাছ গজাবে। কিন্তু সত্যি সত্যি সেই বীজ থেকে যা বের হলো, তা আমি স্বপ্নেও ভাবিনি।
একদিন সকালে অন্যান্য দিনের মতোই আমার বাগানে পানি দেওয়ার জন্য বের হলাম। দেখলাম, মাটি থেকে লাল কিছু একটা বের হয়েছে। সামান্য কিছু, যা দেখতে লাল। লাল সেই বস্তু সারা দিন ধরে বড় হতে থাকল, যতক্ষণ পর্যন্ত না বোঝা যায় সেটা কী। তোমরা অনুমান করো তো, কী সেটা? সেটা হলো, আমার বাগানের কোণে গজানো একটা লাল পুতুলের হ্যাট। এখন কি তোমাদের কাছে আশ্চর্যজনক মনে হচ্ছে না? তোমরা অনুমান করো, আমি কী পরিমাণ পানি দিয়েছিলাম! সকাল, দুপুর আর রাতে পানি দিতাম। মা-বাবা বলত—
‘সোনামণি, এত পানি দেওয়ার দরকার কী? মুলা গজাতে এত পানির দরকার হয় না।’
কিন্তু মা–বাবা সেখানে কখনো যায়নি এবং দেখেওনি। কারণ, আমার বাগানের জায়গাটা ছিল রাস্তা থেকে একটু দূরে।
একদিন সকালে পুতুলের পুরো মাথা দেখা গেল। এটা এমন ধরনের পুতুল যে তার চোখ খুলতে ও বুজতে পারে। তার চোখ দুটো তখন বোজা ছিল।
এটা আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর পুতুল। চুল আছে। হ্যাটের নিচে কোঁকড়ানো চুল। গোলাপি গাল। লাল মুখ।
অল্প সময়ের মধ্যে তার পুরো শরীর মাটি থেকে বের হয়ে এল। অসম্ভব সুন্দর লাল পোশাক। হ্যাটও একই কাপড়ের। যখন সে হাঁটু পর্যন্ত বের হয়ে এল, মা আর বাবাকে আমার বাগানের জায়গাটায় ডেকে আনলাম, কী গজাচ্ছে তা দেখানোর জন্য। আমি জানি, তারা কেবল মূলা আর শাক গজানো দেখবে। তারপরও তারা এল। সেই পুতুল দেখে তারা যে পরিমাণ অবাক হলো, আমি তাদের এ রকম অবাক হতে এর আগে কখনোই দেখিনি। কেবল পুতুলটির দিকে তাকিয়েই থাকল তারা। এরপর বাবা বলল,
‘এ রকম কখনোই দেখিনি।’
আর মা বলল,
‘দুনিয়াতে এ আমি কী দেখছি?’
‘আসলে আমি একটা পুতুলের বীজ বুনেছিলাম এই মাটিতে।’ আমি বললাম।
বাবা বলল, তার যদি পুরো বুশেল (শস্য মাপার একক, এক বুশেল সমান ৫৬ পাউন্ড) এ রকম পুতুলের বীজ থাকত, তাহলে সে অনেক অনেক পুতুল বাজারে বেচতে পারত। এতে মুলা বিক্রির চেয়ে বেশি টাকা আয় হতো। মা আর বাবা দিনের বাকি সময় বিস্ময়ের ঘোরেই কাটিয়ে দিল।
তারপর কী হলো, ভাবো তো। একদিন রোববার সকালে আমি যখন আমার বাগানের সেই জায়গায় পৌঁছালাম, আমার পুতুলটা তখন সবে তার বেড়ে ওঠা শেষ করেছে। তার পায়ে ধবধবে সাদা মোজা আর তার চেয়ে একটু কম সাদা চামড়ার জুতা। পুতুলটা যে কত সুন্দর, তার প্রশংসা করার জন্য আমি ঘাসের ওপর বসে পড়লাম। আর ঠিক তখনই সে তার চোখ খুলল। আমার দিকে সরাসরি তাকাল। নীল চোখ! যা আশা করেছিলাম। এর চেয়ে বিস্ময়কর পুতুল আমি দেখিনি। আমি তার পিঠ চাপড়ানো থেকে বিরত থাকতে পারছিলাম না। যখন তাকে চাপড়াচ্ছিলাম, তখন সে শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছিল। আর হ্যাঁ, তার পায়ের নিচে শিকড় ছিল। তখন বুঝলাম, ও আমার হতে চলেছে। তাকে তাই তুলে নিলাম। মা আর বাবাকে দেখানোর জন্য তাকে নিয়ে দিলাম দৌড়।
এরপর ওকে ঘরে নিয়ে এলাম আমি। ওর জন্য আমাদের কোনো পুতুলের বিছানা ছিল না। তাই মায়ের সেলাই মেশিনের হুড দিয়ে ওর জন্য একটা দোলনা বানালাম। সারা দিন ওর সঙ্গে খেললাম। এত খুশি ছিলাম যে খাওয়ার কথাও ভুলে গিয়েছিলাম। ওর নাম রাখলাম মার্গারেটা। ঘুমানোর সময় হলে সেলাই মেশিনের দোলনায় শুইয়ে দিয়ে বললাম, শুভরাত্রি মার্গারেটা।
তোমরা ভাবতেই পারবে না, তখন কী ঘটল! আমার পুতুল মুখ খুলল এবং বলল,
‘আমার নাম তো মার্গারেটা নয়! এ নাম তুমি কোথায় পেলে? আমি মিরাবেল।’
তোমরা ভাবতে পারো, সে কথা বলতে পারে! বকবক করতেই থাকল সে। আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তার কথার কোনো উত্তর দিতে পারছিলাম না। সে আমাকে বলল, সে তার জন্য একটা সত্যিকারের বিছানা আশা করেছিল আর সঙ্গে একটা রাতের পোশাক। এরপর সে আমাকে বলল, আমাকে তার খুব পছন্দ হয়েছে এবং আমি যেন তার মা হই।
‘কিন্তু আমাকে কখনো পরিজ খাওয়ানোর চেষ্টা করবে না। কারণ, আমি পরিজ খাই না।’
ভাবার জন্য আমার কিছু সময় দরকার। তাই নিজের বিছানায় আমি কিছুক্ষণ বুকে ভর দিয়ে নীরবে শুয়ে থাকলাম। মিরাবেলও নীরব থাকল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝতে পারলাম, ও কোনো কথা বলছে না কেন! ও আমার ড্রেসারের ওপর ওঠার চেষ্টা করছে। উঠেও পড়ল। ড্রেসারের ওপর থেকে সে তার বিছানায়, মানে সেলাই মেশিনের হুডের ওপর ঝাঁপ দিল। সে বারবার এটা করতে থাকল। আনন্দে খিলখিল করে হাসতে থাকল আর বলল, দারুণ মজা! দারুণ মজা!
কয়েক মিনিট পর ও আমার বিছানার কাছে এল। মাথা নেড়ে জানতে চাইল,
‘আমি কি এখানে তোমার সঙ্গে ঘুমাতে পারি? তুমি তো এখন আমার মা।’
আমি ওকে আমার বিছানায় তুলে নিলাম। ও সেখানে শুয়ে পড়ল আর গুনগুন করতে লাগল। ওর গুনগুনানি ভালো লাগল আমার। মিরাবেলকে নিয়ে আমি এত খুশি যে আমার পুরো জীবনে এর চেয়ে খুশির দিন আর আসেনি। অবশেষে ও কথা বলা বন্ধ করল। বেশ কয়েকবার হাই তোলার পর; দারুণ সে হাই তোলা; সে তার মাথা আমার হাতের বাঁকানো জায়গায় রাখল আর ঘুমিয়ে পড়ল। তাকে সেখান থেকে সরাতে আমার মন চাইল না। সেখানেই সারা রাত ঘুমাতে দিলাম। কেবল অন্ধকারে ওর নিশ্বাস শুনতে লাগলাম। তাই আমার ঘুম আসতে অনেক সময় লেগে গেল।
পরদিন যখন ঘুম থেকে উঠলাম, মিরাবেল আমার বিছানার পাশে রাখা ছোট টেবিলে উঠে পড়েছে। সেখানে গ্লাসে পানি রাখা আছে। মিরাবেল পুরো পানি ঢেলে ফেলল। এরপর সে সেলাই মেশিনের হুডে ঝাঁপ দিল। কয়েক মিনিট পর মা আমাকে ঘুম থেকে তোলার জন্য এল। মা দেখল যে মিরাবেল একটা সাধারণ পুতুলের মতো শুয়ে আছে।
দুবছর হলো মিরাবেল আমার কাছে আছে। আমার মনে হয় দুনিয়ায় আমার মতো কোনো ছোট মেয়ের এত সুন্দর পুতুল নেই। অবশ্য সে মাঝেমধ্যে একটু–আধটু ঝামেলা বাধায়, সেটা আমি মানি। তারপরও তাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। আমি ছাড়া কেউ জানে না যে সে সাধারণ মানুষের মতো কথা বলতে পারে, হাসতে পারে, খেতে পারে। যখন আমার মা আর বাবা কাছাকাছি থাকে, তখন সে সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে থাকে এবং সে যে জীবন্ত, তা বোঝা যায় না। কিন্তু যখন আমরা দুজন একা হই, তখন তোমাদের তাকে দেখা উচিত। আমরা কত যে মজা করি! পুতুলের প্যানকেক খেতে সে পছন্দ করে। পুতুলের প্যানকেক বানানোর তাওয়া আছে আমার। আমি ওর জন্য প্রতিদিন প্যানকেক বানিয়ে দিই।
মা মনে করে, মিরাবেল যে খেতে পারে, এটা আমি কেবল ভান করি। কিন্তু সে আসলেই খায়। একবার সে আমার আঙুল কামড়ে দিয়েছিল, যদিও সেটা শুধু মজা করার জন্য। বাবা ওর জন্য বিছানা বানিয়ে দিয়েছে। এখন আর ওকে সেলাই মেশিনের হুডে ঘুমাতে হয় না। মা বেডশিট আর কম্বল বানিয়ে দিয়েছে। আর আমি ওর জন্য ছোট্ট সুন্দর একটা রাতের পোশাক সেলাই করেছি। সঙ্গে কিছু কোটি আর প্রতিদিন পরার একটা পোশাক। যখনই মিরাবেল নতুন কিছু পায়, তখন ও খুব খুশি হয়। বাগানে আগাছা পরিষ্কার করতে বাবাকে সাহায্য করার সময়টুকু ছাড়া সারা দিনই ওর সঙ্গে আমি খেলা করি।
যখনই ঘোড়া আর ঘোড়ার গাড়ি রাস্তায় আসতে দেখি, তখনই আমি দৌড়ে গেটের কাছে ছুটে যাই, যদি সেই অদ্ভুত লোককে ফেরত আসতে দেখি! আমি তাকে খুব করে ধন্যবাদ দিতে চাই আমার এই অতি চমৎকার পুতুলের জন্য। কিন্তু কখনোই তার দেখা পাই না।
তোমরা কেউ আমার সুন্দর পুতুল, মিষ্টি মিরাবেলকে দেখতে চাও? আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসো তাহলে। আমি ওকে তোমাদের দেখাব। সরু রাস্তাটা ধরে চলে এসো। এই রাস্তা ধরে এগোলেই আমাদের বাড়ি পেয়ে যাবে। কথা দিলাম, মিরাবেলকে নিয়ে আমি গেটের সামনে অপেক্ষা করব।
অস্ট্রিড লিন্ডগ্রেনের (১৯০৭-২০০২) জন্ম সুইডেনে। একাধারে কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার হলেও তিনি শিশুসাহিত্যিক হিসেবে বেশি পরিচিত। রচনা করেছেন ৩০টির অধিক শিশুসাহিত্য। ২০১০ সাল পর্যন্ত তাঁর লেখা বই আনুমানিক ১৬৭ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে। তাঁর বই পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তিনি পেয়েছেন রাইট লাইভলিহুড পুরস্কার, জার্মান লেখক শান্তি পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার। তাঁর বিখ্যাত শিশুতোষ বইয়ের মধ্যে রয়েছে পিপ্পি লংস্টোকিং, এমিল অব লোনারবার্গা, কার্লসন-অন-দ্য-রুফ, সিক্স বুলারবাই চিলড্রেন সিরিজের বই এবং উপন্যাস মাইও মাই মাইও, রোনিয়া দ্য রবারস ডটার, দ্য ব্রাদার্স লায়নহার্ট ইত্যাদি।
‘মিরাবেল’ গল্পটি লিন্ডা শ্লেঙ্কের সুইডিশ থেকে অনূদিত ইংরেজি ভার্সন থেকে অনুবাদ করা হয়েছে।