লাল পাহাড় (চতুর্থ পর্ব)

অলংকরণ : আরাফাত করিম

রাব্বি বাসায় গিয়ে দেখে, ঝরনা খালা এসেছে। ঝরনা খালা রাব্বির একদম ছোট খালা। ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়ে। কলেজ বন্ধ, তাই রাব্বিদের বাসায় বেড়াতে এসেছে। পুরো ছুটিটাই নাকি কাটাবে এখানে। মনটা ভালো হয়ে গেল রাব্বির। এই কদিনে মনের ভেতর যে গুমোট ভাবটা ছিল, সব দূর হয়ে গেল একমুহূর্তে। এই খালাটা দারুণ মজার।

‘কিরে রাব্বি, কই ছিলি?’

‘ওহ্‌, তুমি কখন এসেছ খালা? একটা কাজে গিয়েছিলাম।’

‘উফ্‌...খুব কাজের মানুষ হয়েছিস না? এই নে, তোর জন্য একটা মজার বই এনেছি। সায়েন্স ফিকশন পছন্দ করিস তো?’

‘হ্যাঁ হ্যাঁ, করি। কী বই, দেখি?’ 

বইটা সুন্দর করে র৵াপ করা। র৵াপটা খুলতেই বইটার নাম দেখে রাব্বির হাত থেকে পড়ে গেল বইটা!

বইটার নাম লাল পাহাড়। লেখক ইয়েস্তিন খাজিন। রাশান লেখক। অনুবাদ বই।

‘কী হলো তোর?’

অবাক হয়ে ঝরনা খালা তাকালেন রাব্বির দিকে। বইটা হাতে নিয়ে রাব্বির যে কিছু পরিবর্তন হয়েছে, সেটা টের পেলেন তিনি।

‘না না, কিছু হয়নি।’ চট করে বইটা হাতে নিল রাব্বি।

‘নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে। বিছানায় শো তো।’ বলে জোর করে রাব্বিকে শোয়ানো হলো। ঝরনা খালা আর কদিন বাদেই ডাক্তার হবেন। অতএব তাঁর ডাক্তারি করা চাই। রাব্বির পেট টিপে প্রেশার দেখে জিব দেখে চোখ দেখে লম্বা করে শ্বাস নিতে বললেন; সব ঠিক আছে। মা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বললেন, ‘খালি পেটে খেলেদুলে এসেছে, তাই মনে হয় শরীরটা দুর্বল ছিল। এমনিতে তো হয়েছে তালপাতার সেপাই, কিছুই খায় না।’ মা গজগজ করেন।

সে রাতেই লাল পাহাড় বইটা নিয়ে পড়তে বসল রাব্বি। আসলে সেদিন বিকেলে, ওই টংদোকানে লাল পাহাড় শব্দটা অনেকবার শোনা হয়েছে...আর বাসায় এসেই এই নামে বই। তাই হঠাৎ ভেতরে–ভেতরে কেমন চমকে উঠেছিল রাব্বি! এবার বইটা পড়া যাক। রাত ১১টা ৩০ বাজে, পাশের ঘরে মা আর ঝরনা খালা আড্ডা মারছেন। বহুদিন পর দুই বোনের দেখা, অনেক রাত পর্যন্ত আড্ডা হবে। এই ফাঁকে খালার উপহারের বইটা পড়ে ফেলা যাক। মা কিছু বলবে না আজ রাত জাগলে। 

রাব্বি পড়তে শুরু করল, মনে হচ্ছে উত্তম পুরুষে লেখা কাহিনি, ‘‘...আমি পাহাড়টার দিকে তাকালাম। পাহাড়টার রংটা অদ্ভুত। সবুজ নীল বা তার কাছাকাছি কোনো রং না, টকটকে লাল, মনে হলো আমার কাছে। নাকি শেষ বিকেলে সূর্যের আলো পড়ে ও রকমটা হয়েছে! আমি রুমির দিকে তাকালাম। রুমি যেন আমার মনের ভাব বুঝতে পারল।

‘ওটা লাল, না রংটা আসলে গেরুয়া।’ আমি অবাক হলাম ও কী করে বুঝল আমি পাহাড়ের রং নিয়ে ভাবছি!

‘গেরুয়া রংটা সবার ওপর প্রভাব বিস্তার করে।’ রুমি খুব গম্ভীরভাবে বলল।

‘কে বলেছে?’

‘আমি জানি। দেখো না প্রাচীন ঋষিরা এই পোশাক পরত। বৌদ্ধরাও পরত।’

‘হতে পারে।’

‘যে কেউ ওই পাহাড়টায় আত্মগোপন করতে পারে। চাইলে তুমিও।’

‘আমি কেন আত্মগোপন করব?’

‘এমনি বললাম আরকি। ওই পাহাড়ে কেউ যায় না। কেউ যাবেও না কখনো।’

‘কেন?’

‘আমি জানি...।’

রুমির ভেতর একটা সবজান্তা ভাব আছে। সে অনেক কিছুই ‘আমি জানি’ বলে এবং বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই বলে। এবং আশ্চর্যজনক হলেও সে সত্যিই অনেক কিছু জানে। সে-ই প্রথম বুঝে ফেলল যে আমি একজন নিষিদ্ধ ক্লোন চাইল্ড। নিষিদ্ধ না বলে বাতিল বলা যেতে পারে। কিংবা ট্যাবু ...তবে বিষয়টা এতই গোপনীয় যে সে যখন আমার কানে ফিসফিস করল, বিষয়টা নিয়ে আমি একই সঙ্গে খুবই অবাক হয়েছি এবং আতঙ্কিতও হয়েছি।

‘ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমি কাউকে বলব না।’ 

আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না, এই রকম ‘সুপার ডুপার রেড সিক্রেট’ ফাঁস হয়ে গেলে কী বলা উচিত। ক্লাসে স্যার তখন ভূগোল পড়াচ্ছিলেন। তিনি পড়াচ্ছিলেন আইসসটেসি থিওরি। উঁচু পাহাড়ের মাটি আর ঠিক সমপরিমাণ তার নিচের মাটিতে একধরনের মিল রয়েছে...টেবিলের ওপর একটা বাটিতে কিছু পানির মধ্যে কয়েকটা বিভিন্ন সাইজের কাঠের টুকরো উঁচু–নিচু হয়ে ভাসছিল, যেন কাঠের টুকরোগুলো সব ছোট ছোট পাহাড়...।

রুমি কি বিষয়টা বুঝতে পেরেই তাকে লাল পাহাড়ে আত্মগোপন করার কথা বলেছিল? আমি রুমির দিকে তাকালাম, বললাম—

‘তুমি কী করে বুঝলে?’

‘আমি অনেক আগেই বুঝেছি।’

‘তোমরা কথা বলছ মনে হচ্ছে।’

স্যার আমাদের দিকে তাকালেন।

‘সরি‌ স্যার।’ রুমি বলল। আমি মাথা নিচু করে ফেললাম। টের পেলাম সামনে থেকে জিনিয়া মেয়েটা ঘাড় ঘুরিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এ মেয়েটাকে দেখলেই আমার বুকটা কেমন যেন ধড়ফড় করে।

‘এই যে আইডি ১৮১-৪০-৫৭৭ (রুমি), তুমি বলো আমি কী বলছিলাম।’

‘স্যার, আইসসটেসি থিওরি।’

‘ব্যাখ্যা করো।’

‘স্যার...!’ রুমি মাথা চুলকায়।

পরে ক্লাসে অমনোযোগিতার জন্য আমাদের দুজনকেই ছুটির পর রুম নম্বর থার্টি ওয়ানে যোগাযোগ করতে বলা হলো। লেভেল ইলেভেন পর্যন্ত যত দেনদরবার, সব রুম থার্টি ওয়ানে। যাহোক, এভাবেই একদিন ভূগোল ক্লাসে রুমির কাছে আমি ধরা খেলাম, ও জেনে গেল আমি একজন নিষিদ্ধ ক্লোন চাইল্ড (নাকি বাতিল)। আমাকে তৈরি করা হয়েছে কোনো গোপন ল্যাবে এবং যে কারণে তৈরি করা হয়েছিল, সেই প্রজেক্টও এখন বন্ধ।

‘রুম থার্টি ওয়ানে একটা ভূত আছে।’ রুমি বলে। আমি ওর দিকে তাকাই। মনে হলো না সে ফান করছে। আমরা যাচ্ছিলাম রুম নম্বর থার্টি ওয়ানে।

রুমি বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আবার বলে। ‘রুম থার্টি ওয়ানে একটা ভূত আছে!’

‘মানে?’

‘ভূত মানে ভূত, তবে রোবট ভূত। তুমি জানো তো মানুষ মরে গেলে যেমন তার প্রেতাত্মা ভূত হয়ে যায়, সে রকম মানবিক রোবটদের ক্ষেত্রেও হয়। যখন একটা মানবিক রোবটকে ধ্বংস করা হয়, তখন সেটা ভূত হয়ে যায়।’

আমি অবাক হয়ে তাকালাম ওর দিকে। মনে পড়ল অনেক আগের একটা স্মৃতি...বেশ একটু আগে থেকেই মনে করার চেষ্টা করলাম।

যখন আমি আস্তে আস্তে জানতে পারলাম...পৃথিবীতে খুব বেশি ক্লোন চাইল্ড নেই। বিষয়টা এখন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নিষিদ্ধ। তারপরও মনে হলো কেন? কেন আমি তৈরি হলাম বা আমাদের তৈরি করা হলো এবং অফিশিয়ালি আমাকে জানিয়েই–বা দিল কেন যে ‘তুমি একজন ক্লোন চাইল্ড। বিষয়টা তুমি গোপন রাখবে।’ প্রথম দিকে আমি একটা বিশেষ ঘরে একাই থাকতাম। আমাকে কিছু ভিডিও দেখানো হতো। আগ্রহ নিয়েই দেখতাম ভিডিওগুলো। তারপর একঘেয়ে হয়ে গেল ভিডিওগুলো। ভিডিওতে দেখানো হতো একটা ছোট বাচ্চা মা–বাবার কাছে কীভাবে আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে।

তারপর একদিন কালো স্যুট পরা একটা লোক আমাকে নতুন একটা শহরে নিয়ে গেল। আমরা গেলাম সাবওয়ে ট্রেনে। ট্রেন জার্নিটা আমার ভালো লেগেছে। ট্রেন থেকে নেমে আমরা একটা বিশেষ গাড়িতে করে নতুন শহরের ফোগস স্ট্রিটের একটা একতলা বাড়িতে গিয়ে হাজির হলাম। দরজা খুলল মোটামতো একজন লোক আর সম্ভবত তার স্ত্রী।

‘এরা তোমার ফস্টার প্যারেন্টস।’ আমার সঙ্গে কালো কোট পরা লোকটি বলল।

আমি আমার পালক বাবা–মায়ের দিকে তাকালাম। মনে হলো না তারা খুব খুশি হয়েছে আমাকে দেখে। মহিলা আমার দিকে তাকিয়ে একটু হাসির ভঙ্গি করল তবে বাবার মুখে বিরক্তি।

‘নিয়মকানুন আপনারা জানেন।’

কালো স্যুট পরা লোকটা বলল।

‘হু।’ আমার ফস্টার প্যারেন্টস একসঙ্গে মাথা নাড়ল।

‘এই খামটা রাখুন। এর ভরণপোষণের কিছু আগাম খরচ এখানে আছে, প্রয়োজনে আরও দেওয়া হবে। ও ঠিক ছমাস থাকবে এখানে।’

‘ছ মাস পর আমি কোথায় যাব?’ মাথা ঘুরিয়ে আমি কালো স্যুট পরা লোকটাকে প্রশ্ন করলাম।

‘সেটা ছ মাস পরের ব্যাপার। বিষয়টা রেড সিক্রেট।’ আবার দুজন একসঙ্গে মাথা নাড়ল। কালো স্যুট পরা লোকটা আমার মাথার চুলগুলো এলোমেলো করে দিয়ে চলে গেল। আমার হঠাৎ মন খারাপ হলো খুব। আমি লোকটার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

‘এসো, ভেতরে এসো। তোমার ঘর দেখিয়ে দিই।’ আমি আমার ছোট স্যুটকেসটা নিয়ে ঢুকলাম ওদের ঘরে। আমার মনে হলো না তারা খুব খুশিমনে আমাকে গ্রহণ করল। নিজের ঘরে বসে আমি যখন আমার হতবুদ্ধি ভাবটা কাটানোর চেষ্টা করছিলাম, তখন একটা বাচ্চা মেয়ে এল। সম্ভবত ফস্টার মা–বাবার মেয়ে। এদিক–ওদিক তাকাল। গলা নামিয়ে ফিসফিস করে ঠিক রুমির মতো করেই বলল, এখন যেমনটা রুমি বলছে—

‘এই রুমে একটা ভূত আছে, রোবট ভূত।’ মেয়েটা গম্ভীর গলায় বলে। যেমনটা রুমি এখন বলছে।

‘তোমার নাম কী?’

‘পলি।’

‘পলি, ভূতটা তুমি দেখেছ?’

‘দেখা যায় না।’

‘তাহলে?’

‘বোঝা যায়।’

কদিন পর সত্যিই বোঝা গেল ভূতটাকে। সন্ধ্যার দিকে আমি খাটে পা ঝুলিয়ে বসে ছিলাম। আমার জুতোজোড়া খাটের নিচে ছিল। হঠাৎ একদিন দেখি, জুতোজোড়া আস্তে আস্তে আমার চোখের সামনে খাটের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে। কেউ যেন টেনে সরিয়ে নিচ্ছে। আমার ভয় পাওয়া উচিত ছিল কিন্তু ভয় পেলাম না।

তবে ভয় পেলাম দুদিন পর, প্রচণ্ড ভয় পেলাম।

দুপুরবেলায় স্কুল থেকে এসে দেখি আমার ঘরের সিলিংয়ে শুয়ে আছে পলি। যেন কেউ আঠা দিয়ে সেঁটে দিয়েছে ওকে সিলিংয়ে, ওর ফ্রকের ঝুলটা নিচের দিকে ঝুলছে। আমি চিৎকার করলাম। কিন্তু আমার গলা দিয়ে কোনো শব্দ বেরোল না। ঘর্ঘর একটা আওয়াজ হলো এবং আমি জ্ঞান হারালাম।

আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, আমার যখন চলে আসার সময় হলো। তখন আমি বিদায় নেওয়ার জন্য পলিকে খুঁজলাম। আমার ফস্টার প্যারেন্টস খুবই অবাক হলেন এবং জানালেন, তাদের বাসায় পলি নামে কেউ নেই। তবে পলি নামে একটা এক্স টু ফিমেল রোবট ছিল, ডিস ফুয়েল করা হয়েছে বহু আগে। 

গল্পটা শুনে রুমি দাঁড়িয়ে গেল।

‘কী হলো?’

‘আশ্চর্য!’

‘কিসের আশ্চর্য?’

‘রুম থার্টি ওয়ানের ইনচার্জের নাম পলিনা গোমেজ। সবার ধারণা, সে একজন এক্স ওয়ান ফিমেল রোবট।’

‘বাজে কথা, এ ধরনের রোবট এখন আর নেই।’

এক ঘণ্টার ওপরে হলো। আমরা রুম থার্টি ওয়ানে বসে আছি। রুম ইনচার্জের নাম মোটেই পলিনা নয়। তার নাম ম্যালিনা গোমেজ। তিনি ঠাস করে একটা ফাইল রাখলেন টেবিলের ওপর। তারপর ফাইল খুলে তাতে চোখ বুলিয়ে বললেন,

‘১৮১-৪০-৫৬৬ কে?’

‘আমি।’ আমি হাত তুললাম। ‘ওটা আমার আইডি নম্বর।’

‘আর ১৮১-৪০-৫৭৭?’

‘আমি।’ রুমি হাত তুলল। ম্যালিনা গোমেজ দুজনের দিকেই চোখ সরু করে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। তারপর রুমির দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তুমি চলে যেতে পারো। তবে তোমাকে আরও কিছুক্ষণ বসতে হবে।’

‘আমরা একসঙ্গেই যেতে চাই।’ বলল রুমি।

‘না, তুমি যাও।’ এবার মনে হলো একটু কড়া গলায় বললেন ম্যালিনা গোমেজ। কাঁধ ঝাঁকিয়ে উঠে দাঁড়াল রুমি। হাত নাড়ল আমার দিকে। আমিও হাত নাড়লাম। হঠাৎ আমার মনে হলো, রুমির সঙ্গে হয়তো আমার আর কোনো দিন দেখাই হবে না। মনে মনে বললাম, ‘বিদায় বন্ধু’।

রুমি চলে যেতেই ম্যালিনা গোমেজ আমাকে ইশারা করলেন তার সঙ্গে যেতে। আমি তার পিছু পিছু তার রুমে ঢুকলাম। তার কথামতো একটা সোফায় বসলাম। সোফাটা অসম্ভব নরম। যেন আমি ডুবে গেলাম সোফাটার মধ্যে।

কফিটা খেয়ে ফেলো। আমি একটু অবাক হলাম; এখানে ছোট ক্লাসের বাচ্চাদের কফি দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু আমাকে কফি দিচ্ছে। সোফার সামনের টেবিলটায় মগে কফি। তবে আমার গলা শুকিয়ে আসছিল। ঢক ঢক করে মগটা খালি করে ফেললাম, কফিটা খুব একটা গরম ছিল না। তবে জিনিসটাকে ঠিক কফি মনে হলো না। তখনই মাথায় কেমন একটা ঝিম ভাব এল। আমি তাকিয়ে দেখি, একটা সেক্রেটারিয়েট টেবিলের উল্টো দিকে বসে আছে ম্যালিনা গোমেজ। সম্ভবত এটা তার নিজস্ব অফিস...তাকে অন্য রকম লাগছে...তার পেছনের দেয়ালটা টকটকে লাল। না, ঠিক লাল না, গেরুয়া রং। সেই লাল পাহাড়টার মতো। রুমি নাকি একবার তার সাইকেলে করে গিয়েছিল পাহাড়টার খুব কাছাকাছি...। পাহাড়টার একটা নাম আছে। আমি নামটা মনে করার চেষ্টা করলাম। কিছুতেই মনে আসছে না। মনে হচ্ছে লাল পাহাড়টা হঠাৎ করে একদম সামনে চলে এসেছে। এই ঘরটার ভেতর চলে এসেছে লাল পাহাড়টা। কী আশ্চর্য, পাহাড়ের ভেতর এক জোড়া তীক্ষ্ণ চোখ! চোখজোড়া ম্যালিনা গোমেজের...ম্যালিনা গোমেজের ফ্যাসফ্যাসে গলা শোনা যাচ্ছে, ‘ছেলেটা জ্ঞান হারিয়েছে, ওকে কালো কাভার্ড ভ্যানটায় তোলো জলদি...।’’ 

এই পর্যন্ত পড়ে বইটা বন্ধ করে ফেলল রাব্বি। প্রথম পর্ব সমাপ্ত। দ্বিতীয় পর্বের নাম ‘পালাও’ কাল পড়া যাবে, ১৮০ পৃষ্ঠার বই। আচ্ছা, কৌশিকদার কী হলো? বই বন্ধ করে ভাবে রাব্বি। ভাবতে ভাবতে চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে তার!

(চলবে...)

আরও পড়ুন