মুক্তির স্বাদ
আজকের দিনটা অনেকের জন্য খুব আনন্দের। কিংবা খুব কষ্টের। যাঁরা এই পর্যায়টুকু পেরিয়ে গেছেন, তাঁদের কাছে হয়তো বিষয়টা এমন আহামরি কিছু না। তবে আমার বয়সীদের জন্য আজকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দিন জীবনে খুব কমই এসেছে। নিঃসন্দেহে।
ওয়েবসাইটটা লোড হলো। আমি দুরু দুরু বুকে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো দিলাম। আসছে… লোড হচ্ছে।
হয়ে গেল।
চুপচাপ তাকিয়ে রইলাম ওয়েবপেজটার দিকে। জানতাম অবশ্য, এমনটাই হবে। হ্যাঁ, আমি ফেল করেছি। এসএসসি পরীক্ষায় রসায়নে গোল্লা মেরেছি রীতিমতো।
একটা মুহূর্ত। ভেঙে চুরচুর হয়ে গেল আমার ভেতরের সবকিছু। এলোমেলো হয়ে গেল মাথার ভেতরে। আমি জানতাম, এমনটাই হবে। জানতাম রসায়ন পরীক্ষার আগেই। তবু একটা আশা ছিল বুকের ভেতরে।
মানুষ আশাবাদী প্রাণী। তবে আমার মনে হয়, আশা বড় খারাপ জিনিস, সহজে ছাড়া যায় না। এই আশা ধীরে ধীরে কুরে কুরে খেয়ে ফেলে বুকের ভেতরে কিছু একটা।
কাচের মতো ভেঙেচুরে যাচ্ছে ভেতরে সব। আর আমার মনে হচ্ছে, এ মুহূর্তে বিড়াল হয়ে যেতে পারলে খুব ভালো হতো। বিড়ালই কেন? আমি জানি না। কিংবা হয়তো জানি।
একবার এক বিড়ালের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। সেদিন বাবার সঙ্গে খুব ঝগড়া করলাম। এটা ক্লাস এইটের ঘটনা। একটা ক্লাস পরীক্ষায় খারাপ করেছিলাম। মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রধান আমার বাবার উদ্বেগ ছিল একটাই—ছেলে পরীক্ষায় ভালো করছে তো? ছেলে ভালো আছে কি না, সে কথা তাঁকে জিজ্ঞেস করতে কখনো শুনিনি।
আমি কখনো ভালো ছাত্র ছিলাম না। বাবা পরীক্ষার রেজাল্ট কার্ড দেখে মাঝেমধ্যে বলতেন, ‘তুই তো ছাত্র না, ছত্রাক।’ নিজের বাবার মুখে এসব কথা শুনতে কারও ভালো লাগার কথা না। বিশেষ করে স্কুল যেহেতু আমার কাছে ছিল নরকসম। পড়াশোনায় ভালো না দেখে শিক্ষকেরা কম কথা শোনাতেন না। ক্লাসে আমার আক্ষরিক অর্থেই কোনো বন্ধুও ছিল না।
সেদিন এটুকু মনে আছে, ক্লাসে বসে একটা গল্পের বই পড়ছিলাম। তিন গোয়েন্দার রুপালি মাকড়সা। কীভাবে যেন টের পেয়ে গেলেন স্যার। ক্লাস পরীক্ষার ফলাফলে ডাব্বা মেরেও ছেলে ক্লাসে বসে গল্পের বই পড়ছে, এটা স্যার মানতে পারেননি। বই জমা নিলেন। হেডস্যারের কাছে যেতে হলো আমাকে। আব্বুকে কল দেওয়া হলো। আব্বু স্যারকে বললেন, ‘ওই বই ছিঁড়ে ফেলে দেন।’
স্যার সম্ভবত, আমাকে শিক্ষা দিতেই, বইটা ছিঁড়ে ফেললেন আমার চোখের সামনে।
আমার খুব মন খারাপ হলো। বাসা থেকে বাসভাড়া আর টিফিনের টাকা দেওয়া হয়, প্রতিদিন ৩০ টাকা। সেই টাকা থেকে ১০ টাকা করে প্রতিদিন জমাই। ক্লাস শেষে হেঁটে হেঁটে বাসায় ফিরি, বাসে উঠি না।
বাবা আমার জন্য অনেক করেছেন, করছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। মাস শেষে ধার করা আবশ্যক। তবু কোনো দিন ক্লাসের বই, টিফিনের টাকা দিতে না করেননি। কিন্তু সেই অল্প কয় টাকার বই যে আসলে কতটা অমূল্য ছিল, তা আমার বাবা বোঝেননি।
বাসায় ফিরে ঝগড়াঝাঁটি করে বেরিয়ে পড়লাম। বাবা একটা ভয়ংকর কথা বলেছিলেন সেদিন ঝগড়ার সময়। যখন বলেছি, ‘বাসা থেকে তাহলে বেরিয়ে যাই’, উনি বললেন, ‘তোর এত দেমাগ কিসের? গায়ের জামাকাপড়ও তো আমি কিনে দিছি। এগুলো খুলে তারপর বের হ।’
ইতিহাসের প্রাচীনতম মহাকাব্যের মূল চরিত্রটির দাদার সঙ্গে একটি কথা বলা বিড়ালের কীভাবে দেখা হলো, সে প্রশ্ন একবারও আমার মাথায় এল না। আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। বিড়ালটা আস্তে করে উঠে রাজকীয় ভঙ্গিতে হেলতে-দুলতে কোথায় যেন চলে গেল।
কাপড় খুলে বেরিয়ে পড়া যায় না। এটাও মানুষজন্মের একটা সমস্যা। সম্ভবত সে জন্যই আমার মানুষজন্মের শখ মিটে গেছে। ওভাবেই বেরিয়ে পড়লাম।
রাস্তার এক পাশে, ফুটপাতে বসে আছি। ঘড়িতে সাড়ে আটটা বা নয়টা বাজে। অনেকক্ষণ হেঁটেছি। শেওড়াপাড়া থেকে হেঁটে ধানমন্ডি সাতাশের এখানে এসে ফুটপাতে বসে পড়লাম।
সে সময় একটা বিড়াল হেঁটে এল আমার কাছে। আস্তে করে সামনের ডান পা-টা আমার ঊরুর ওপর তুলে দিয়ে স্বাভাবিক গলায় বলল, ‘তোমার মন খারাপ?’
আমি চমকে উঠলাম। ঝগড়া করেছি, তাই বলে মাথাও খারাপ হয়ে গেছে? উল্টাপাল্টা কী ভাবছি এসব?
বিড়ালটা একটু লাজুক ভঙ্গিতে হাসল। ‘না, তোমার মাথা খারাপ হয়নি। ভুল শুনছ না।’
অবাক গলায় জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তুমি আসলেই কথা বলতে পারো?’
‘হ্যাঁ। একবার এক দরবেশ রাস্তার পাশে বসে চোখ বুজে ধ্যান করছিলেন। বছরখানেক আগের কথা। তাঁর সামনে এক বাটি দুধ রাখা ছিল। আমি চুপি চুপি ওতে মুখ দিলাম। বাটিটা উল্টে গেল। দরবেশ তখন আমাকে অভিশাপ দিয়ে বললেন, ‘আজ থেকে তুই কথা বলতে পারবি।’ সে সময় বুঝিনি। ভেবেছিলাম, আশীর্বাদ। পরে টের পেলাম, অন্য বিড়ালদের সঙ্গ আমার ভালো লাগছে না। কথা না বলে, বিড়ালের ভাষায়, ইশারা করে করে সব বোঝাতে বড় কষ্ট হতো। আর মানুষ, ওরা আমাকে একদমই বিশ্বাস করত না। কেউ কেউ আমার কথা শুনে ভয়ে পালিয়ে যেত। সেই অভিশাপ নিয়ে আমি এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছি।’
বিড়ালটার কথা শুনে খুব খারাপ লাগল। বললাম, ‘হ্যাঁ, তুমি ঠিক বলেছ। আমার মন খারাপ।’
‘কী হয়েছে?’
‘পরীক্ষা খারাপ হয়েছে। বাবার সঙ্গে সে নিয়ে খুব ঝগড়া হলো সকালে। বাসায় থাকতে ভালো লাগছিল না। আসলে, বেঁচে থাকতেই ভালো লাগছে না আমার।’
বিড়ালটা সহমর্মিতার মতো করে মাথা নাড়ল ওপরে-নিচে। ‘নিঃসঙ্গতা বড় ভয়ংকর। আমি জানি। কিন্তু তোমার বাবা তো আর তোমার সমস্যাগুলো জানেন না। তাঁর সঙ্গে বসে কথা বলো?’
বিড়ালের মুখে এ রকম উপদেশ শুনে আমি হকচকিয়ে গেলাম। নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম, ‘বুঝবেন না আসলে।’
‘হুম।’ এটুকুই বলল সে। তারপর চুপচাপ বসে রইল আমার পাশে।
প্রায় ১৫ মিনিট বসে থাকার পর বিড়ালটাকে বললাম, ‘তুমি কিছু খাবে?’
‘নাহ। আমি তো রাস্তার খাবার খাই। ভালো কিছু খেলে সমস্যা। রাস্তার খাবার আর ভালো লাগবে না।’
আমার মন ভালো হয়ে গেল। এত সমঝদার একটা বিড়ালের সামনে মন খারাপ করে বসে থাকার কোনো মানে হয় না।
একটুক্ষণ পর বিড়ালটা বলল, ‘তুমি কি বই পড়ো?’
আমি হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়লাম।
‘গিলগামেশের কথা শুনেছ না?’
‘মহাকাব্য? হ্যাঁ, শুনেছি। মানে, গিলগামেশ আর এনকেদুর কথা পড়েছি।’
‘ওর দাদার সঙ্গে আমার একবার দেখা হয়েছিল। উনি আমাকে বললেন, “দুইটা কথা মনে রাখবা। যা গেছে, তা আর কখনো ফিরে আসে না। আর যা হওয়ার, তা হবেই। নিয়তিকে বদলানো যায় না।” তাই যা হয়ে গেছে, সেসব নিয়ে ভেবো না। সামনে কী করা যায়, সেটা ভাবো। দেখবে, আর মন খারাপ হবে না। অন্তত আমি তা-ই করি।’
ইতিহাসের প্রাচীনতম মহাকাব্যের মূল চরিত্রটির দাদার সঙ্গে একটি কথা বলা বিড়ালের কীভাবে দেখা হলো, সে প্রশ্ন একবারও আমার মাথায় এল না। আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। বিড়ালটা আস্তে করে উঠে রাজকীয় ভঙ্গিতে হেলতে-দুলতে কোথায় যেন চলে গেল।
অনেক দিন পর, আজ আমার খুব মনে পড়ছে সেই বিড়ালটার কথা। মনে হচ্ছে, বিড়াল হয়ে গেলে আমিও হয়তো একটু সমঝদার হয়ে যেতাম। তখন আমার আর এসএসসিতে ফেল করতে হতো না।
মাথা ঘোরাচ্ছে। চোখে শর্ষে ফুল দেখছি না, বরং ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। আব্বুকে এই ফেল করার খবর জানানোর মতো সাহস আমার নেই। তবে খবর উনি নিজেই পেয়ে যাবেন শিগগিরই। টলতে টলতে বাসা থেকে বেরিয়ে এলাম। শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ডের সামনের একটা দোকান থেকে কিনে নিলাম দুটি চুইংগাম। ৫ টাকা চলে গেল। মানিব্যাগে আর কোনো টাকা নেই। প্রচণ্ড আক্রোশে রাস্তার পাশের একটা ড্রেনে ছুড়ে ফেলে দিলাম মানিব্যাগটা। একটা চুইংগাম মুখে পুরে চিবুতে লাগলাম আনমনে।
হাতে ঘড়ি আছে। তাতে সময় দেখাচ্ছে—৯টা ৪২। ঢাকার জন্য, রাত কেবল শুরু হয়েছে। আশপাশে মানুষের ঢল। চাকরি শেষে ঘরে ফিরছে সবাই। উঁহু, কথাটা বোধ হয় ঠিক হলো না। আজ শনিবার। এই দিনে সবার অফিস থাকে না। অনেকে হয়তো ঘুরতে বেরিয়েছিল। অথবা শপিং শেষে ফিরছে।
ঘড়িটাও খুলে ছুড়ে ফেললাম একপাশে। ক্লাস ফাইভে থাকতে আমার জন্মদিনে বাবার কাছে একটা ঘড়ি চেয়েছিলাম। তখন দেননি। বছর শেষে পরীক্ষা মোটামুটি ভালো হয়েছিল। তখন কিনে দিয়েছিলেন। এত দিন এই ঘড়ি কেন রেখে দিয়েছি, সে কথাটাও মাথায় ঘুরেফিরে আসতে লাগল বারবার।
আমার হাতে এখন অঢেল সময়। ভবিষ্যৎই যেখানে নেই, সেখানে হাতে ঘড়ি রেখে কী লাভ? তার চেয়ে বরং যেদিকে দুচোখ যায়, চলে যাওয়া যাক।
কী ভেবে গুলিস্তানের বাসে উঠে বসলাম। পকেট ফাঁকা, এটুকু বলে দিলে হেলপার ভাড়া ছাড়াই নিয়ে যাবে, আমি জানি। গাদাগাদি ভিড় বাসে। এর মধ্যেই দাঁড়িয়ে রইলাম।
হেলপার ভাড়া চাইতে এলে তাকে জানালাম বিষয়টা। আমার ভাবলেশহীন মুখের দিকে তাকিয়ে তার বোধ হয় বিশ্বাস হলো না কথাটা। বিড়বিড় করে কিছু বলল। তারপর চলে গেল পরেরজনের কাছে।
গুলিস্তান নেমে আরেকটা বাস ধরে চলে এলাম কমলাপুর। রেলস্টেশনের সামনে নেমে কিছুক্ষণ স্থির দাঁড়িয়ে রইলাম। তারপর ধীরপায়ে গিয়ে দাঁড়ালাম একটা স্টেশনের সামনে। টিকিট ছাড়া আজকাল ওরা যেতে দেয় না। কিন্তু ফাঁকেতালে নিশ্চয়ই উঠে পড়া যাবে। কোনো একটা ট্রেনে উঠে বসলেই হলো। আমার এখন কোনো গন্তব্য নেই।
রেলস্টেশনের চারদিকে তাকাচ্ছি, ঠিক সে সময় এক কোণে সেই বিড়ালটাকে দেখলাম। দুপাশে মাথা নাড়ছে। যেন, আমার কাজকর্মে বিরক্ত। সেই বিড়ালটাই? না হয় চেনা চেনা লাগছে কেন? এগিয়ে গেলাম সেদিকে। বিড়ালটা আমাকে এক পা নেড়ে বসতে ইশারা করল।
‘কোথায় যাচ্ছ?’
‘জানি না।’
‘তাহলে যাচ্ছ কেন? এভাবে তো হারিয়ে যাওয়া যায় না।’
‘আমি হারিয়ে যেতে চাচ্ছি, তোমাকে কে বলল?’
‘বিড়ালদের নেটওয়ার্ক অনেক শক্তিশালী। তোমার বাসার সামনেই একটা বিড়াল থাকে। সে খবর পাঠিয়েছে। শুনে আমি এলাম তোমার সঙ্গে দেখা করতে।’
‘তুমি জানো, আমার কী হয়েছে?’
বিড়ালটা সায় দিয়ে বলল, ‘জানি। কিন্তু তুমি কেন একটা সহজ জিনিস বুঝতে পারছ না, সেটা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না।’
‘কী জিনিস?’
‘তোমার পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যায়নি। একটা অধ্যায় শেষ হয়েছে মাত্র। তোমার গল্পের আরও অনেকগুলো অধ্যায় আছে। সেগুলোর জন্য একটু অপেক্ষা তো করতে পারতে?’
‘কিন্তু আমি যে রকম ভেবেছিলাম, সেভাবে যে কিছুই হচ্ছে না! ভেবেছিলাম, এই পরীক্ষাটা ভালো হলে একটু অন্যভাবে, নতুনভাবে শুরু করব। সেই ইচ্ছাটা এখন মরে গেছে। আমার আসলে আর কিছু করার নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে আমি হেরে গেছি।’
‘যা ঘটার, তা আসলে ঘটবেই। নিয়তিকে কি আর থামানো যায়? যায় না।’
‘তাই বলে নিয়তির হাতে সব ছেড়ে দেওয়ার মানে নেই।’
‘জানি। কিন্তু তোমাকে তো আগেই বলেছিলাম—যা হওয়ার, তা হবেই। নিয়তিকে বদলানো যায় না। আমরা চেষ্টা করতে পারি শুধু।’
‘চেষ্টা করে লাভ কী, যদি নিয়তি বদলানো না যায়?’
‘এটা নিয়ে আমার একটা তত্ত্ব আছে,’ বিড়ালটা একটা পা তুলে কান চুলকে নিল। ‘এক জীবনে তুমি কতটা ভালো-মন্দ পাবে, তোমার ভাগ্যে কতটা ভালো-মন্দ ঘটবে, তা নির্ধারিত। তাই খারাপ কিছু ঘটে গেলে দুঃখ না পেয়ে আনন্দ পাওয়া উচিত। খারাপটুকু তো চলেই গেল, ভালোটা সামনে আসবে।’
‘আসলেই কি তা হয়? মানুষ হয়ে জন্মানোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, নিজেকে এসব কথা বলে মানানো যায় না।’
‘বিড়াল হলে ভালো হতো?’
‘হ্যাঁ।’
‘তুমি দুদিনও টিকতে পারতে না, বুঝলে? বিড়ালদের জীবন এত সহজ না।’
কী বলল, বুঝতে পারলাম না। বিড়ালটা আমাকে এক পা দিয়ে হালকা করে ছুঁয়ে দিয়ে বলল, ‘ঠিক আছে, আমার সঙ্গে চলো।’
কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বেরিয়ে এলাম। আমি আর একটা বিড়াল হাঁটতে লাগলাম পাশাপাশি৷ নিজের বিড়াল হয়ে যাওয়ার ইচ্ছাটা ক্রমেই বাড়ছে।
আরও খানিকটা হাঁটার পর অন্ধকারমতো একটা জায়গায় এসে বিড়ালটা থেমে গেল। টের পেলাম, আকাশে আধখানা চাঁদ। শহরের আলোয় এতক্ষণ চোখে পড়েনি। বিড়ালটার পাশে তাকিয়ে চমকে উঠলাম। আবছায়া জোছনালোকে ওখানে দুটো বিড়ালের ছায়া।