হ্যারি পটার: জানা-অজানা
৩১ জুলাই হ্যারি পটারের জন্মদিন! এই খুশিতে আনন্দের অন্ত নেই ভক্তদের। তাই চলো, জন্মদিন উপলক্ষে জেনে নেওয়া যাক হ্যারি পটার বিষয়ে অজানা অনেক কিছু, যার বেশির ভাগই চমকে দেবে তোমাকে।
হ্যারি পটার সিরিজটি লেখার পেছনে জে কে রাওলিং কতটা পরিশ্রম করেছিলেন তার একটা নমুনা দেওয়া যাক। রাওলিং প্লট সাজানোর আগে প্রথম পাঁচ বছর শুধু এটা ঠিক করেছিলেন যে তাঁর চরিত্রগুলো কী করতে পারবে, আর কী করতে পারবে না।
হ্যারি পটারে কিছু কিছু স্মৃতি কিন্তু একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। যেমন হ্যারির মা-বাবার মৃত্যুর ঠিক ১০ বছর পর, ৩১ অক্টোবর ১৯৯১ তে প্রথমবার ভলডেমর্ট হ্যারির কাছে হেরে যায়। আবার সেই দিনই সবার প্রিয় চরিত্র হ্যারি, রন আর হারমায়োনি একে অপরের বন্ধু হয়।
ফ্রেড উইসলি আর সিরিয়াস ব্ল্যাকের জন্য চোখের পানি ফেলেনি এমন পটারহেড খুব কমই আছে। হাসিখুশি এই দুটি চরিত্রের মধ্যে কিন্তু সুন্দর একটা মিল আছে। দুজনই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন হাসিমুখে।
হ্যারি পটার সিরিজের ছবিতে আমরা দেখি হ্যারি, রন, হারমায়োনি একসঙ্গে হোমওয়ার্ক করছে। তখন কিন্তু আসলেই ড্যানিয়েল র্যাডক্লিফ, রুপার্ট গ্রিন্ট আর এমা ওয়াটসন নিজেদের হোমওয়ার্ক করছিল।
হ্যারি পটার সিরিজে সব গাছপালার নাম একটি বই থেকে নেওয়া। সতেরো শতকে ইংরেজ বোটানিস্ট নিকোলাস কালপেপার কালপেপার’স কমপ্লিট হারবাল নামের বইটি লিখেছিলেন।
হ্যারি পটার সিরিজের প্রথম বই হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফারস স্টোন-এর আমেরিকান নাম হওয়ার কথা ছিল ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য স্কুল অব ম্যাজিক’, পরে পছন্দ না হওয়ায় এই নামের বদলে জে কে রাওলিং হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য সরসার্স স্টোন-এর প্রস্তাব দেন।
ভলডেমর্ট নামটা এক ফ্রেঞ্চ শব্দ থেকে নেওয়া, যার অর্থ মৃত্যুর দূত। খুবই সার্থক নামকরণ, তাই না?
হ্যারির প্যাঁচা হেডউইগ চরিত্রের জন্য ৮টি চলচ্চিত্রে মোট ৭টি প্যাঁচা অভিনয় করেছিল।
বইয়ের হ্যারি আর ছবির হ্যারির মধ্যে একটা ছোট্ট পার্থক্য আছে। বইয়ে হ্যারির স্কার বা কাটা দাগটি ঠিক কপালের মাঝামাঝিতে, আর ছবিতে সেটা কপালের মাঝখান থেকে খানিকটা দূরে। লেখক রাওলিংই মূলত এই পরিবর্তন করার জোর করেছিলেন।
হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য প্রিজনার অব আজকাবান ছবির ডিরেক্টর আলফনসো কুয়েরন চেয়েছিলেন নিজ নিজ চরিত্র নিয়ে ওয়াটসন, র্যাডক্লিফ আর গ্রিন্ট একটি করে রচনা লেখুক। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল ওয়াটসন ১০ পৃষ্ঠা, র্যাডক্লিফ ১ পৃষ্ঠা করে লিখলেও গ্রিন্ট একটুও লেখেনি। পরে সে যুক্তি দিয়েছিল, ‘রন হলে কখনোই এই হোমওয়ার্ক করত না।’ এই অকাট্য যুক্তির বিরুদ্ধে আলফনসো আর কি-ই বা বলতে পারেন।
হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য প্রিজনার অব আজকাবান বইটি আমেরিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর সব বইয়ের দোকানে বলা হয়েছিল যাতে স্কুল ছুটির আগে বইটি বিক্রি করা না হয়। কারণ, ভয় ছিল বইটি হাতে পেলে স্কুল পালানো আটকানো যাবে না।
বইয়ে হাউজ এলফ ডবির বলা প্রথম এবং শেষ শব্দ ছিল, ‘হ্যারি পটার’।
ভলডেমর্টের বানানো সাতটি হরক্রাক্সের মধ্যে মাত্র একটি হ্যারি ধ্বংস করেছিল নিজ হাতে। এভাবে রাওলিং বুঝিয়েছিলেন, লড়াইটা শুধু হ্যারির একার না, সবার।
যখন হ্যারির ভেতর থাকা হরক্রাক্স ধ্বংস হয়, তখন থেকে হ্যারি আর সাপদের ভাষা পার্সেলটাং বলতে বা বুঝতে পারত না।
উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডের ছবিগুলো জীবন্ত হওয়ার কারণ কী, জানো? ছবিগুলো 'ডেভেলপ' করতে একটা বিশেষ ধরনের পোশন (একধরনের তরল মিশ্রণ) ব্যবহার করা হয়, যেটা সাধারণ ছবিতে দেয় জাদুর ছোঁয়া।
হগওয়ার্টসের প্রিন্সিপাল হওয়া সত্ত্বেও কিন্তু শুরুতে প্রফেসর স্নেইপের ছবি প্রিন্সিপাল অফিসে রাখা হয়নি। পরবর্তী সময়ে হ্যারির কথায় স্নেইপ বিষয়ে সবাই সত্য জানতে পারায় স্নেইপের ছবি ঠিক ডাম্বেলডোরের পাশে লাগানো হয়। অসীম সাহসী মানুষটিকে এখনো হগওয়ার্টস শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।
উইজার্ডিং ওয়ার্ল্ডের স্কুল হগওয়ার্টসের সামনে যদি মাগলরা হাজির হয়, তাহলে কী হবে? সবাই কি দেখতে পাবে এই জাদুর স্কুলকে? আসলে মাগলরা হগওয়ার্টসের সামনে এলে ‘বাইরে থাকুন : বিপজ্জনক’ লেখা সাইনবোর্ড লাগানো একটা ভাঙাচোরা বাড়ি দেখতে পায়। তাই, কোনো দিনই উইজার্ডরা বাদে কেউ হগওয়ার্টস খুঁজে পায় না। এভাবেই জাদুর এই স্কুল সুরক্ষিত থাকে সব সময়।