রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মজার ঘটনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনে রম্য উপাখ্যানের কাহিনি অফুরন্ত। কারণ, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন খুবই হাস্যরস-প্রিয়; তবে তাঁর হাস্যরস ছিল মার্জিত, সূক্ষ্ম ও সুরুচিসম্পন্ন। তাঁর পুত্রবধূ প্রতিমা ঠাকুর একদা বলেছিলেন, ‘বাবা মশায় সকলের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করতে খুব ভালোবাসতেন। মেয়ে, বউ, পরিবারবর্গের সকলের সঙ্গে, এমনকি নীলমণি ভৃত্যের সঙ্গে হাস্য-পরিহাসে তাঁর ছিল সহজ আনন্দ।’ 

একবার রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীজি একসঙ্গে বসে সকালের নাশতা করছিলেন। তো গান্ধীজি লুচি পছন্দ করতেন না, তাই তাঁকে ওটসের পরিজ (Porridge of oats) খেতে দেওয়া হয়েছিল আর রবীন্দ্রনাথ খাচ্ছিলেন গরম গরম লুচি।

গান্ধীজি তাই না দেখে বলে উঠলেন, ‘গুরুদেব, তুমি জানো না যে তুমি বিষ খাচ্ছ।’

উত্তরে রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘বিষই হবে; তবে এর অ্যাকশন খুব ধীরে। কারণ, আমি বিগত ৬০ বছর যাবৎ এই বিষ খাচ্ছি।’

২. 

রবীন্দ্রনাথের একটা অভ্যাস ছিল, যখনই তিনি কোনো নাটক বা উপন্যাস লিখতেন, সেটা প্রথম দফা শান্তিনিকেতনে গুণীজন সমাবেশে পড়ে শোনাতেন। শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রায়ই এ রকম পাঠের আসরে যোগদান করতেন। তা একবার আসরে যোগদানকালে বাইরে জুতা রেখে আসায় সেটা চুরি গেল। অতঃপর তিনি জুতাজোড়া কাগজে মুড়ে বগলদাবা করে আসরে আসতে শুরু করে দিলেন।

রবীন্দ্রনাথ এটা টের পেয়ে গেলেন। তাই একদিন শরত্চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে এভাবে আসরে প্রবেশ করতে দেখে তিনি বলে উঠলেন, ‘শরৎ, তোমার বগলে ওটা কি পাদুকা-পুরাণ?’ এ নিয়ে সেদিন প্রচণ্ড হাসাহাসি হয়েছিল। 

অলংকরণ: রাজিব