প্রিয় বিড়ালটার জন্য তুমি কী করেছ? বুকে জড়িয়ে ঘুমানো? কিংবা বিড়ালের ছবিতে বানানো লকেট পরো? আর সেই প্রিয় বিড়াল মারা গেলে? ওর ছবিটা বাঁধিয়ে রাখতে পারো ফ্রেমে। কিংবা ওর স্মৃতিগুলো সাজিয়ে রাখতে পারো তোমার আলমারিতে। এত ভালোবাসার বিড়াল বলে কথা। তবে এ ছাড়া আর কী করা যায় বলতে পারো? একটু ভেবে দেখো তো কী কী করা যেতে পারে?
তোমার এই বিড়ালের স্মৃতিকাতর চিন্তায় নতুন মাত্রা যোগ করতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক স্টিভ মুট। প্রিয় বিড়াল ‘পিকাচু’কে স্মরণীয় করে রাখতে মহাকাশে এটির ছাই পাঠাবেন তিনি। ইতিমধ্যে পোষা প্রাণীদের জন্য তৈরি মহাকাশভ্রমণ সেবা প্রতিষ্ঠান সেলেসটিস পেট–এ ফ্লাইট বুক করেছেন তিনি। এ জন্য তাঁকে গুনতে হবে ৫ ডলার চার্জ, যা টাকায় দাঁড়াবে প্রায় ৪ লাখ ২১ হাজার টাকা। তবে এ কাজে সাহায্য নিতে অনলাইনে ফান্ড রাইজিং করা শুরু করেছেন মুট। ইতিমধ্যে সেখানে সারা বিশ্বের পোষা প্রাণীপ্রেমীরা আড়াই হাজার ডলার জমা করেছেন। সব ঠিক থাকলে, আগামী বছর মহাকাশে ছড়িয়ে যাবে পিকাচুর ছাই।
১৯৯৫ সাল থেকে মহাকাশে পোষা প্রাণীদের জীবনযাপন নিয়ে কাজ করছে সেলেস্টিয়াল পেট। সেলেস্টিয়াল পেট পোষা প্রাণীদের জন্য চার ধরনের সার্ভিস দেয়। কেউ চাইলে তাঁর পোষা প্রাণীকে মহাকাশে পাঠাতে পারেন জিরো গ্র্যাভিটির অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য। এরপর আবার প্রাণীটিকে নিরাপদে ফিরিয়ে আনা হবে পৃথিবীতে। পাশাপাশি তাদের আছে ‘আর্থ অরবিট’ সার্ভিস। এই সার্ভিসে পোষা প্রাণীর লোম বা মারা গেলে সেটার ছাই মহাকাশে পাঠানো যাবে। সেখানে প্রাকৃতিক কারণে ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত মহাকাশেই ভেসে বেড়াবে প্রত্যেকের প্রিয় প্রাণীর স্মৃতি। আবার কেউ চাইলে তাঁর পোষা প্রাণীকে পাঠাতে পারেন চাঁদের বুকে। এ জন্য বুক করতে হবে ‘লুনার’ সার্ভিস। আর কয়েক বছর পরপর চাঁদ ছাড়াও অন্য গ্রহে পোষা প্রাণীকে পাঠাতে পরিচালনা করা হয় ‘ভয়েজার’ সার্ভিস। এসব সার্ভিসের বিস্তারিত পাওয়া যাবে সেলেস্টিয়াল পেট –এর ওয়েসবাইটে।
মহাকাশে এর আগে ১৯৬৩ সালে প্রথমবারের মতো বিড়াল পাঠানো হয়। তবে সে ছিল জীবিত। ফেলিসেট নামের বিড়ালটি পরবর্তী সময়ে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসে। তবে প্রথমবারের মতো ছাই হিসেবে মহাকাশের বুকে ছড়িয়ে পড়বে পিকাচুর ছাই। এর আগে মহাকাশে অ্যাপোলো ও লাইকা নামে দুটি কুকুর গেলেও বিড়ালদের জন্যই এটা নতুন অভিজ্ঞতা হতে চলেছে।
তথ্য সূত্র: স্পেস ডট কম