‘বড় হয়ে রাজনীতিবিদ হতে চাই’ — ফারহানা আমিন

ক্লাস ফাঁকি দিয়ে প্রথমবারের মতো প্যারেড করতে যাওয়া মেয়েটা বাদ পড়েছিল শুধু উচ্চতার কারণে। তিন বছর পর একই দলের কমান্ডার হয়ে সে দেখিয়ে দেয় যে উচ্চতা কোনো ব্যাপার নয়, ইচ্ছাশক্তি থাকলে জয় করা সম্ভব যেকোনো কিছুই।

বলছিলাম শহীদ বীর উত্তম লে. আনোয়ার গার্লস কলেজের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী ফারহানার কথা। দুষ্টুমি করে মাঝেমধ্যে ক্লাস ফাঁকি দিলেও পড়াশোনায় সে ফাঁকি দেয় না মোটেও। সেই সঙ্গে চালিয়ে যায় আরও নানা সহশিক্ষা কার্যক্রম। ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বিজ্ঞান উৎসবে গণিত, আইকিউ অলিম্পিয়াড থেকে শুরু করে সুডোকু, প্রজেক্ট ডিসপ্লে, উপস্থিত বক্তৃতা ইত্যাদি নানা ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে আসছে সে। একটু বড় হওয়ার পর শুরু করে বিতর্ক, সেখানেও একের পর এক অর্জন, পায় শ্রেষ্ঠ বিতার্কিকের খেতাবও। স্কুলে তায়কোয়ান্দো শেখানো শুরু হলে সেখানে নাম লেখায় ফারহানা, বিভিন্ন তায়কোয়ান্দো প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদকসহ জিতে নেয় একাধিক পদক। সার্ক আয়োজিত ইয়ুথ মিনিস্ট্রিয়ালে শ্রেষ্ঠ ইনফরমেশন মিনিস্টার নির্বাচিত হয়েছে এ বছর। এ ছাড়া হ্যান্ডবল খেলেও পুরস্কারের ঝুলিটা ভারী করেছে সে।

অবসর সময়ে বই পড়তে ভালোবাসে ফারহানা। আর নানা স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে যুক্ত সে। দীর্ঘদিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে কিশোর আলোর সঙ্গেও। একাধিক রেডিও শোতে প্রতিনিধিত্ব করেছে কিশোর আলো এবং একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। জীবন নিয়ে নিজস্ব ধ্যানধারণা রয়েছে তার। সে বিশ্বাস করে তার মতাদর্শে মানুষকে প্রভাবিত করতে পারলে সমাজে বড় কিছু পরিবর্তন আনা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তাই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে চায় সে। গৎবাঁধা চাকরিজীবনেও তার অনীহা, বড় হয়ে রাজনীতিবিদের পাশাপাশি হতে চায় উদ্যোক্তা, সেই সঙ্গে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় অন্যান্য উদ্যোক্তার জন্য।

ফারহানার সাক্ষাৎকার

প্রশ্ন :

বড় হয়ে কী হতে চাও?

রাজনীতিবিদ।

প্রশ্ন :

স্কুলের কী ভালো লাগে? কী খারাপ লাগে?

পরীক্ষা অনেক ভালো লাগে, কিন্তু রেজাল্ট দেওয়াটা একদম ভালো লাগে না!

প্রশ্ন :

স্কুলের কোনো মজার স্মৃতি...

বর্তমান স্কুলে প্রথম দিন এসেই ক্লাস ফাঁকি দিয়েছিলাম, যথারীতি তার জন্য বকাও খেয়েছিলাম।

প্রশ্ন :

প্রিয় লেখক...

ড্যান ব্রাউন।

প্রশ্ন :

প্রিয় কবিতার লাইন...

‘তবু এই পৃথিবীর সব আলো একদিন নিভে গেলে পরে,
পৃথিবীর সব গল্প একদিন ফুরাবে যখন,
মানুষ রবে না আর, রবে শুধু মানুষের স্বপ্ন তখন
সেই মুখ আর আমি রবো সেই স্বপ্নের ভিতরে।’

—জীবনানন্দ দাশ

প্রশ্ন :

লটারি জিতলে কী করবে?

নিজের জন্য একটা লাইব্রেরি বানাব।

প্রশ্ন :

ভূতে বিশ্বাস করো?

বিশ্বাস সবাই করে না, কিন্তু ভয় অনেকেই পায়। আমিও সেই দলে।

প্রশ্ন :

ভূত ছাড়া আর কিসে ভয় পাও?

আমার ক্লাসটিচারকে ভীষণ ভয় পাই!

প্রশ্ন :

কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে বিরক্ত লাগে?

‘তোমাকে আব্বু বেশি ভালোবাসে, না আম্মু?’

প্রশ্ন :

কোনো সমস্যায় পড়লে কার কাছে উপদেশ চাও?

আমার বোন। তার কাছে আমার যাবতীয় সমস্যার সমাধান থাকে!

(কিশোর আলোর জানুয়ারি ২০১৮ সংখ্যায় প্রকাশিত)