আধুনিক পৃথিবীতে বহুল ব্যবহৃত জিনিসগুলোর মধ্যে প্লাস্টিক অন্যতম। কিন্তু এর খারাপ দিকও রয়েছে। অপচনশীল এই দ্রব্য কখনো মাটিতে মেশে না। ফলে তৈরি হয় পরিবেশদূষণ। শুধু মাটিকেই নয়, এটি দূষিত করছে নদী, সাগর ও মহাসাগরকেও। বিপর্যস্ত করছে সামুদ্রিক জীবন। এই বিপর্যয় রোধ করতেই বারো বছর বয়সী বালক হাজিক কাজী ডিজাইন করেছে ‘এরভিস’ নামের একটি জাহাজের। ভারতের পুনেতে জন্ম নেওয়া এই বালকের নকশা করা জাহাজটি প্লাস্টিকদূষণের হাত থেকে বাঁচাবে সমুদ্র ও সামুদ্রিক জীবনকে।
হাজিক জানায়, বিভিন্ন তথ্যচিত্রের মাধ্যমে সে জানতে পারে কীভাবে প্লাস্টিকের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সামুদ্রিক জীবন। মাছেরা প্লাস্টিক খাচ্ছে, আবার আমরা সেই মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করছি। এ কারণে এই দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মানবজীবনও। এটা তাকে নাড়া দেয়। তার মনে হয়, এই ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু একটা করা উচিত। সেই ভাবনা থেকেই আসে ‘এরভিস’।
এরভিসের কার্যপ্রণালি এবং বৈশিষ্ট্য নিয়ে সে জানায়, এতে ব্যবহার করা সসারগুলো কেন্দ্রমুখী বলের প্রভাবে বর্জ্যসমেত পানি শুষে নেবে। তারপর সেখান থেকে পানি, সামুদ্রিক জীব আর বর্জ্য আলাদা করা হবে। পানি আর সামুদ্রিক জীবকে ফেরত পাঠানো হবে সাগরে এবং বর্জ্যকে এর আকৃতি অনুযায়ী আরও পাঁচ ভাগে আলাদা করা হবে। তার নকশা অনুসারে, জাহাজের তলদেশে সেন্সর অথবা সামুদ্রিক জীব, পানি এবং বর্জ্যকে আলাদাভাবে চেনার জন্য কোনো পদ্ধতি থাকবে।
হাজিকের এই আইডিয়া প্রশংসিত হয়েছে টেডএক্স, টেড৮–এর মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে। তথ্যচিত্র দেখার পর ৯ বছর বয়সেই এমন কিছু একটা তৈরির ভাবনা এসেছিল তার মাথায়। তারপর বিভিন্ন মাধ্যমের সহযোগিতায় এমন একটি জাহাজের নকশা প্রণয়ন করে সে।
বর্তমানে বিভিন্ন সংগঠন ও ফোরামের সঙ্গে প্লাস্টিকের কারণে সমুদ্রে সৃষ্ট জটিলতা এবং সমস্যা নিয়ে জনসচেতনতা তৈরির কাজ করছে হাজিক কাজী।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস