তিন গোয়েন্দা
বইয়ে বইয়ে তিন গোয়েন্দার গল্প
রকিব হাসানের লেখা তিন গোয়েন্দা সিরিজের বইয়ের নামগুলো নিয়ে দারুণ এই চিঠিটি লিখেছে কিশোর-মুসা-রবিনের ভক্ত নূর-এ-তাজীম।
গ্রেট রবিনিয়োসো,
তিন গোয়েন্দার কথা মনে আছে? ওই যে কঙ্কাল দীপ থেকে রুপালি মাকড়সা উদ্ধার করে যার যাত্রা শুরু। ছায়া শ্বাপদ খুঁজতে গিয়ে পেলাম মমি। রত্নদানোর তাড়া খেয়ে প্রেতসাধনা করে পাওয়া রক্তচক্ষু নিয়ে সাগরসৈকতে বেড়াতে যাওয়া, মনে পড়ে?
জলদস্যুর দ্বীপ থেকে সবুজ ভূতের সঙ্গে দেখা। হারানো তিমি খুঁজে বের করলাম মুক্তো শিকারি দিয়ে। মৃত্যুখনি থেকে বেঁচে ফিরে কাকাতুয়া রহস্য ভেদ করে ছুটিতে গেলাম। আশা করি তোমার ভূতের হাসি মনে আছে? ছিনতাই হওয়া জিনিস খুঁজতে ভীষণ অরণ্যে গিয়ে ড্রাগনের তাড়া খেয়ে হারানো উপত্যকার গুহামানব ও ভিতু সিংহ দেখতে মহাকাশের আগন্তুকদের আগমন। খ্যাপা শয়তান ইন্দ্রজালে আমাদের পেঁচিয়ে মহাবিপদে ফেললেও গ্রেট মুসাইয়োসোর কারণে আমরা বেঁচে ফিরি। রত্নচোর ধরতে গিয়ে পুরোনো শত্রু ও বোম্বেটে এক হয়ে আমদের তাড়া করলে আমরা ভুতুড়ে সুড়ঙ্গ দিয়ে এসে আবার সম্মেলন করে আমরা ভয়াল গিরি যাই। সব থেকে মজা হয় কালো জাহাজে করে পোচার ধরতে গিয়ে। ঘড়ির গোলমালের জন্য তোমার ছোড়া তির একটা বিড়ালকে কানা করে দেয়। কিন্তু খোঁড়া গোয়েন্দার বাক্সটা প্রয়োজন হওয়ায় আমাদের অথৈ সাগর পাড়ি দিতে হয়। সেখানে বুদ্ধির ঝিলিক দেখিয়ে গোলাপি মুক্তা নিয়ে প্রজাপতির খামারে হাজির হই।
আচ্ছা,পাগল সংঘের কথা মনে আছে? ভাঙা ঘোড়ায় চড়ে ঢাকায় তিন গোয়েন্দার আসা? সেখানে জলকন্যা দেখতে গিয়ে বেগুনি জলদস্যুর পায়ের ছাপ অনুসরণ করে তেপান্তর যাত্রা? সেখানে সিংহের গর্জন শুনে ভয় পাওয়া? তোমার কি এখনো মনে পড়ে নাই? ঠিক আছে, পুরোনো ভূতের কথা তো মনে থাকার কথা। জাদু চক্রতে যাকে গাড়ির জাদুকর ডেকে আনে? প্রাচীন মূর্তি খুঁজতে আমাদের নিশাচর হয়ে দক্ষিণের দ্বীপে যেতে হয়। আমার নকল (কিশোর) দেখে ঈশ্বরের অশ্রুঝরা, তিন পিশাচের জন্য খাবারে বিষ মেশানো, ওয়ার্নিং বেল দিয়ে বিমান দুর্ঘটনা ঘটান, যে কারণে তোমার আজ এই অবস্থা।
তবে সবচেয়ে অবাক কাণ্ড হলো রেসের ঘোড়া খুন হওয়া। স্পেনের জাদুকর বানরের মুখোশ পরে ধূসর মেরুতে মুর্তির হুংকার দিয়ে কালো হাত দেখিয়ে আলোর সংকেত পেয়ে অভিনয় শুরু করে চিতা নিরুদ্দেশ করে চলে যায়। এদিকে পুরোনো কামান গেল কোথায় তা খুঁজতে আমরা ওকিমুরো করপোরেশন খুলে অপারেশন কক্সবাজার নামক অভিযানে যাই। সেখানে মায়া নেকড়ের তাড়া খেয়ে আমরা জিনার সেই দ্বীপে পৌঁছালে কুকুরখেকো ডাইনি গুপ্তচর শিকারির মাধ্যমে জানতে পারে এবং প্রেতাত্মার প্রতিশোধ কী হবে তা জানতে ঝামেলা ঐতিহাসিক দুর্গে যাওয়ার পথে হঠাৎ করে সোনার খোঁজে চলে যায়। এদিকে আমরা ডাকাতের পিছে গিয়ে এক বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠে ভ্যাম্পায়ারের দ্বীপে আটকা পড়ে আরেক ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দেখা পাই। সে তোমাকে মায়াজালে আটকে নরকে হাজির হয় আর আমাদের দুজনকে সৈকতে সাবধান থাকতে বলে। নরকে হাজির হয়ে তুমি ভয়ংকর অসহায় হয়ে পড়লেও গোপন ফর্মুলা পেয়ে যাও। কিন্তু খেলার নেশায় মারাত্মক ভুল করায় তোমার ওপর প্রেতের ছায়া পড়ে, আর তুমি মাকড়সা মানব হয়ে রাত্রি ভয়ংকর করে তোলো। শেষে খ্যাপা কিশোর তোমাকে এই শয়তানের থাবা থেকে বাঁচায়। কিন্তু এক পতঙ্গ ব্যবসায়ী যুদ্ধ ঘোষণা করে জাল নোট ছাপানো শুরু করে আর তাই দিয়ে দ্বীপের মালিক হয়ে যায়। এক কিশোর জাদুঘর আমাদের যে নকশা দেয় তা মেনে আমরা মৃত্যু ঘড়িতে পৌঁছালেও বেঁচে ফিরি। তিন বিঘা জমি নিয়ে ভোরের পিশাচ আমাদের সঙ্গে টক্কর দিতে চাইলে আমাদের দক্ষিণে যাত্রা করতে হয়। সেখানে দিঘির দানো বিষের ভয়ে ভুল নিখোঁজ সংবাদ দিয়ে আমাদের উচ্ছেদ করতে না পেরে ঠকবাজির দায়ে ফেরত পাঠায়। এরপর আমরা অভিশপ্ত লকেট নিয়ে চাঁদের ছায়া অনুসরণ করে জলদস্যুর মোহর খুঁজতে অপারেশন অ্যালিগেটর চালাই। কিন্তু স্কুলের নতুন স্যার এখানেও ঝামেলা শুরু করে। আসলে সে ছিল ডাকাত সর্দার। তবে আমরা তাকে দুর্গম কারাগারে পাঠাতে সক্ষম হই।
এদিকে পিশাচ কন্যা ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সেজে সময় সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে আবার ঝামেলা শুরু করে। তাই প্রত্নসন্ধান করার জন্য নিষিদ্ধ এলাকা জবরদখল করতে হয়। বড়দিনের ছুটিতে বিড়াল উধাও হলে আমরা টাকার খেলা দেখি। এমন সময় একটা উড়ো চিঠি আসে যাতে লেখা ‘আমি রবিন বলছি। আমি উল্কা রহস্য ভেদ করে ফেলেছি।’
চিঠি পড়ে আমরা আনন্দের সঙ্গে নেকড়ের গুহায় নেতা নির্বাচন করি। এমন সময় সি সি সি রবে হারানো জাহাজ শ্বাপদের চোখ দিয়ে আমাদের দেখা দেয়। আমরা আরও জানতে পারি, পোষা ডাইনোসরের মাছির সার্কাস পছন্দ। আমার মঞ্চভীতি থাকায় আমি ডিপ ফ্রিজে লুকালে কবরের প্রহরী তাসের খেলা খেলে খেলনা ভালুক পাঠায়। রাতে প্যাঁচার ডাকে প্রেতাত্মার অভিশাপ আসে যে, রক্তমাখা ছোরা দিয়ে স্পাইডারম্যান আমাকে মারবে। আমি মানুষখেকোর দেশে গেলে মাছেরা সাবধান করে বলে, সীমান্তে সংঘাত চলছে আর মরুভূমি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে। আমি যেন গরমের ছুটিতে স্বর্গদ্বীপ আর চাঁদের পাহাড়ে না গিয়ে বাংলাদেশে (বাংলাদেশে তিন গোয়েন্দা) যাই। সেখানে রহস্যের খোঁজে গেলে টাক রহস্য পাই আর সেটা করতে জয়দেবপুরে (জয়দেবপুরে তিন গোয়েন্দা) গেলে ভয়াল দানব বাঁশির রহস্যময় সুর শুনে মুগ্ধ হই।
এদিকে নিশির ডাক শুনে শুঁটকি বাহিনী মেডেল রহস্যের সমাধান করতে চোরের আস্তানায় চলে যায়। আমরা টাইম ট্রাভেল করে এসে দেখি, শুঁটকি শত্রুরা চাঁদের অসুখে ভুগছে। অন্যদিকে দুখী মানুষ পাগলের গুপ্তধন নিয়ে মায়াপথে বন্দী। তার বিপদের গন্ধ পেয়ে এক ইউএফও (রহস্য) হীরার কার্তুজের বিনিময়ে তাকে আমরা উদ্ধার করে নিজেরাও বেঁচে ফিরে আসি।
তোমার আশা করি সব মনে পরেছে?
ইতি তোমার বন্ধু,
গ্রেট কিশোরিয়োসো