এবারে আঁকিবুঁকির একেবারে মূল তিনটা ধাপের কথা বলার চেষ্টা করা হবে। এর মধ্যে প্রথমটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এই তিনটা হলো—
ফর্ম: মানে অবয়ব, যেটা আমরা সবার আগে আঁকি, যেমন ডিম আঁকার আগে আমরা আসলে একটা গোল্লা আঁকি। এই গোল্লাটাই হলো ডিমের ফর্ম।
রং: মানে ডিমটার যে রং আমরা দেব, লালচে বা সাদা বা যা ইচ্ছা তা-ই।
টেক্সচার: এটা হলো ডিমের গায়ে যে ছোট ছোট ফুটকি দাগ থাকে, সেগুলো যদি আমরা আঁকি, প্রথমে শুনতে এটা অত গুরুত্বপূর্ণ মনে না হলেও আসলে এই ছোট্ট ডিটেইলটাই একটা ড্রয়িংয়ে অনেক বড় পার্থক্য যোগ করে।
নিচের কার্টুনটায় কিন্তু কোনো রং নেই। কিন্তু ফর্মের মধ্যে ঠিকই টেক্সচার, মানে কিনা জামার ওপরে স্ট্রাইপ কিছু দাগ আর ছোট ছোট ফুল, কারুকাজ ইত্যাদি জুড়ে দেওয়া হয়ছে। আসলে কার্টুন কিন্তু সব সময় রঙিন হবেই এমন না, রং দেওয়ার সুযোগ না থাকলে এই টেক্সচারজুড়ে দিয়েও এটাকে মোটামুটি দারুণ করে ফেলা সম্ভব।
এবার নিচের তিনটা ড্রয়িং থেকে ব্যাপারটা আরও ভালো বোঝা যায়। প্রথমে আমরা যে ছবিটা আঁকলাম, সেটা আসলে ফর্ম, মানে অবয়ব। এর পরে যেটা সেটা হলো রং। আসলে এইটুকু করে ছেড়ে দিলেই হয়। কিন্তু আমরা যারা ভালো আঁকব বলে পণ করেছি, তাদের জন্য আরেকটু বিস্তারিত যেতে এই ৩ নম্বরটা লাগবে। সেটা হলো টেক্সচার। ভালোমতো খেয়াল করলেই বোঝা যাবে শেষেরটায় কিছু বাড়তি দাগাদাগি করা হয়েছে। আর এতেই একেবারে নিরস নীল রঙের কাপড়টা একেবারে সত্যি কাপড়ের মতো মনে হচ্ছে।
শুধু টেক্সচার দিয়ে যে আসলে আরও অনেক কিছুই বোঝানো যায়, তার উদাহরণ হলো নিচের বাক্সটা। এখানে প্রথমে একটা একেবারে খালি চারকোনা বাক্স আঁকা হয়েছে। সেটার ভেতরে একেকবার একেক রকম টেক্সচার দেওয়ার ফলে একেবারে জিনিসটাই পাল্টে গেছে। প্রথমটা মনে হচ্ছে কাঠ, পরেরটা চকচকে কোনো ধাতব বা কাচের পাত, তার পরেরটা হেভি মেটালিক কিছু, এর পরেরটা খুবই সরল একটি বেড়া! তার মানে ভেতরের এই ছোটখাটো কারিকুরি করেও আসলে কোনটা কী আঁকা হলো, তা বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব।
আমরা এই পর্ব থেকে একটা মজার কাজ শুরু করি। এত দিন যা যা বুঝলাম, তা মিলিয়ে-ঝিলিয়ে কিছু একটা এঁকে পাঠাই। তবে গরম গরম যা শিখলাম, সেটা আগে পাঠানোই ভালো। যেমন এই পর্বে পড়ে আমরা একটা রাক্ষস এঁকে পাঠাই, সেটায় দুটি জিনিস থাকতেই হবে, ফর্ম আর টেক্সচার। আর কালার করলে তো কথাই নেই। তাহলে পরের পর্বে আমরা একগাদা রাক্ষস পাচ্ছি আশা করতে পারি?