তুমি কতটা কে–পপভক্ত

কথায় আছে, গানের কোনো ভাষা নেই। মানে, তুমি বাংলাদেশের মানুষ হয়ে সুদূর বুলগেরিয়ার ফোকগান ভালোবাসতে পারো। এ জন্য তোমাকে সে দেশের ভাষা বুঝতে হবে, এমন কোনো ব্যাপার নেই। ভিনদেশের গানের জগৎ নিয়ে বলতে হলে এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা কোরিয়ান পপুলার মিউজিক বা কে–পপের কথা বলতেই হবে। বাংলাদেশেও রয়েছে কোরিয়ান গানের বিশাল ভক্তকুল। তুমিও কি তাদের একজন? নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দিয়ে জেনে নিতে পারো তোমার কে–পপপ্রীতি কতটুকু।

১. কে–পপ শোনো তা প্রায়…

ক. হবে বহু বছর। একেবারে দিনক্ষণ বলতে পারব না, তবে যখন থেকে ভালো গান বুঝতে শিখেছি, তবে থেকেই শুনছি।
খ. আমার মাথা এখনো খারাপ হয়ে যায়নি যে কে–পপ শুনব।
গ. খুব বেশি দিন নয়, হবে দু–তিন বছর।

২. তোমার খুব প্রিয় কে–পপ দল। দলের সদস্য কমপক্ষে ছয়জন। সব সদস্যের ব্যাপারে তুমি কতটা জানো?

ক. প্রত্যেকের নাম জানি অবশ্যই। এর বেশি কিছু জানি না বা খুব একটা জানার চেষ্টাও করিনি।
খ. কেন? ওদের ব্যাপারে কোনো তথ্য দরকার? তাহলে গুগল ঘাঁটতে হবে না। ওদের ব্যাপারে আমি তো জীবন্ত উইকিপিডিয়া, আমাকে জিজ্ঞেস করলেই হবে। আমার ধারণা, গুগলেও ওদের এত ছবি আর তথ্য নেই, যতটা আমার কাছে আছে।
গ. কে–পপই শুনি না, আবার প্রিয় দল। আবার সেই দলের সদস্য। হেহ!

৩. তোমার প্রতিদিনের ব্যবহার্য জিনিসপত্র, যেমন মুঠোফোনের ব্যাক কভার, ব্যাগ, টি–শার্ট—এসবের ডিজাইন বা নকশায় কে–পপ তারকাদের প্রভাব যেমন থাকে—

ক. মাইনাস ১০০! মানে, কে–পপ তারকাদের নিয়ে করা নকশাসমৃদ্ধ কোনো জিনিস আমি ব্যবহার করছি না ভাই। মানসম্মানের ব্যাপার।
খ. যদি কোনো কিছু খুব পছন্দ হয়, তাহলেই আমি কিনি। সেটা কে–পপ দ্বারা প্রভাবিত নকশা হোক বা অন্য কিছু।
গ. আমার সবকিছুতেই কে–পপের একটা ছাপ আছে। জামা-জুতা-মাস্ক থেকে পানির ফ্লাস্ক পর্যন্ত।

৪. কে–পপ নিয়ে কেউ সমালোচনা করলে তোমার প্রতিক্রিয়া যেমন হয়—

ক. কার এত বড় সাহস, আমার সামনে করুক না একবার, প্রথমে নিজে একহাত দেখে নেব, এরপর আমার বন্ধুদের নিয়ে সাইজ করে দেব তাকে একদম।
খ. যদি সমালোচনা হয়, তবে আপত্তি নেই। কিন্তু আক্রমণাত্মক হয়ে কেউ যদি মন্দ কথা বলে, তবে তার তীব্র প্রতিবাদ করব।
গ. সঙ্গে সঙ্গে একমত হয়ে যাব। যে সমালোচনা করছে, তাকে চা খাওয়ার দাওয়াতও দিয়ে দিতে পারি, ঠিক নেই।

৫. কে–পপ তারকাদের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো তাদের গানের সঙ্গে নাচের পারদর্শিতা। তুমি কি তাদের মতো নাচার চেষ্টা করেছ কখনো?

ক. ওদের নাচ দেখলে আমার হাসি পায়। আর সে রকম নাচার ইচ্ছা হওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।
খ. জানি ওদের মতো সেরা হবে না, তবু চেষ্টা করি। আমার বন্ধুরা বলে, ওদের মতোই ভালো নাচি আমি।
গ. আমার দেখতেই ভালো লাগে। কখনো চেষ্টা করিনি।

৬. কে–পপ শুনতে শুনতে কখনো কোরিয়ান ভাষা শেখার ইচ্ছা হয়েছে?

ক. আমি তো কোরিয়ান ভাষা বেশ রপ্ত করে ফেলেছি, কোরিয়ান গান শুনে আর ড্রামা দেখে। নানেন হাঙ্গুগরেল সারাংহেও, মানে আমি কোরিয়ান ভালোবাসি।
খ. ইচ্ছা তো হয়েছেই। কিন্তু শেখার সুযোগ হয়নি। তা ছাড়া বেশ কঠিন মনে হয়।
গ. কোরিয়ান গান তো শুনিই না। তাই সে ভাষা নিয়েও আমার মাথাব্যথা নেই।

৭. কোরিয়ান খাবারের ব্যাপারে তোমার মনোভাব যেমন—

ক. দেখলেই খেতে ইচ্ছা করে। আমার প্রিয় তারকার পছন্দের কোরিয়ান খাবার আমি নিজে রান্না করেও খেয়েছি। তা ছাড়া কোরিয়ান খাবার পাওয়া যায়, এমন রেস্তোরাঁয় আমি প্রায়ই খাই।
খ. খাবার মজার হলেই হয় আমার। সেটা কোরিয়ান কি না, তা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করতে নারাজ আমি।
গ. বৈচিত্র্য আছে, এমন খাবার চেখে দেখার আগ্রহ আমার বরাবরই। আর কোরিয়ান গান শুনি বলে সে দেশের খাবারের ব্যাপারে আগ্রহটা একটু বেশিই।

৮. ধরো, তুমি কে–পপ কনসার্টে যাওয়ার সুযোগ পেলে। কিন্তু যে শিল্পী বা দলের গান শোনার ফ্রি টিকিট পেয়েছ, তাদের গান তোমার প্রিয় নয়। সে ক্ষেত্রে কী করবে?

ক. আমার তো কোরিয়ান কোনো গানই পছন্দ নয়। যদি টিকিটের সঙ্গে পর্যাপ্ত টাকাপয়সা দেয়, তাহলে ভেবে দেখতে পারি। তবে নিশ্চিত নই যে যাব।
খ. পছন্দ না হলেও যাব। কারণ, ভিন্ন একটা অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ হারাতে চাই না।
গ. না যাওয়ার তো কোনো কারণই নেই। কোরিয়ান কোনো শিল্পী বা দল প্রিয় না হলেও অপ্রিয় তো হবে না। কোরিয়ান বলে কথা। যাবই।

৯. কে–পপের সূত্র ধরে কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছে?

ক. এটা আবার জিজ্ঞেস করার কিছু হলো? একগাদা মানুষের সঙ্গে আমার খাতির তো এর বদৌলতেই হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কে–পপ গ্রুপে আমি অনেক অ্যাকটিভ।
খ. গল্প হয়েছে কে–পপ নিয়ে অনেকের সঙ্গেই। তবে এর সূত্র ধরে বন্ধুত্ব হয়ে ওঠেনি।
গ. বন্ধুত্ব? শত্রুতা তৈরি হয়েছে বরং। যারা কে–পপপাগল, তাদের সঙ্গে আবার বন্ধুত্ব চলে নাকি!

১০. কে–পপ নিয়ে সারা বিশ্বেরই একটা আগ্রহ তৈরি হয়েছে। ব্যাপক এই জনপ্রিয়তাকে তুমি যে দৃষ্টিতে দেখো—

ক. এসব মাতামাতি দেখলে আমার গা জ্বলে। যত্তসব ঢং! কই, নিজের দেশের গান নিয়ে তো এমন মাতামাতি করতে দেখি না।
খ. আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। সংস্কৃতির বৈচিত্র্যকে বাহবা দিচ্ছে মানুষ, তাই খারাপ লাগার কোনো কারণ দেখছি না।
গ. এটা তো হওয়ারই ছিল। ভালো জিনিসের কদর দেরিতে হলেও মানুষ বুঝতে পেরেছে।

নম্বর

১. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
২. ক. ৫ খ. ১০ গ. ০
৩. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৪. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৫. ক. ০ খ. ১০ গ. ৫
৬. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
৭. ক. ১০ খ. ০ গ. ৫
৮. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০
৯. ক. ১০ খ. ৫ গ. ০
১০. ক. ০ খ. ৫ গ. ১০

তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে

০–৪০: ঘৃণার সবচেয়ে বাজে দিক কী বলো তো? তুমি যদি কোনো কিছু বা কাউকে ঘৃণা করো, তবে সেটা তোমার ওপরই একধরনের মানসিক অশান্তি আর চাপ তৈরি করে। তোমার যেকোনো কারণেই হোক, কোরিয়ান গানের প্রতি একরকম ঘৃণা বা বিদ্বেষ কাজ করে। অনেক সময় গান না শুনেই তুমি সেটার সমালোচনা করো এবং কোরিয়ান গান বা ড্রামা নিয়ে একটা আক্রমণাত্মক আচরণ দেখাও। কেউ কে–পপ শুনছে জানলেই তাকে কারণ ছাড়াই বিচার করে ফেলো। গান সংস্কৃতির অংশ। কোনো সংস্কৃতিকে অসম্মান দেখানো একেবারেই অনুচিত। তাই ভালো না লাগলে সেটা না শোনো, কিন্তু এর প্রতি অহেতুক বিদ্বেষ রেখো না।

৪৫–৭০: তুমি ভালো গানের ভক্ত। সেটা বাংলায় নাকি অন্য ভাষায়, সেটা নিয়ে বেশি চিন্তিত নও। তুমি মনে করো, যেকোনো পরিস্থিতিতে মন ভালো করে দেবে কিংবা পরিস্থিতি তোমার জন্য সহজ করে দেবে, এটাই গান শোনার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। আর অন্য দেশের সংস্কৃতির প্রতিও তোমার আগ্রহ রয়েছে। বলছি না, তুমি কোরিয়ান গানের বিশাল ভক্ত, তবে তুমি বেশ ভালোই পছন্দ করো কে–পপ।

৭৫-১০০: কোরিয়ার মানুষও তোমার মতো করে সম্ভবত কে–পপ ভালোবাসতে পারবে না। তুমি অন্ধভক্ত! অন্য দেশের গান ও সংস্কৃতিকে জানার প্রতি তোমার এই আগ্রহ সত্যিই চমৎকার। তবে কে–পপের প্রতি এই গভীর ভালোবাসা তোমার বিচার–বিবেচনায় প্রভাব ফেলে অনেক সময়। অনেক সময় তুমি কে–পপের নামে ‘টুঁ’ শব্দটিও শুনতে পারো না। আবার তোমার মতের সঙ্গে না মিললেই তুমি আক্রমণাত্মক হয়ে যাও। কারও ভালো না লাগলে সে সমালোচনা করতেই পারে, সেটা ব্যক্তিগতভাবে নেওয়ার কিছু নেই। আবার কেউ তোমার পছন্দের কিছু নিয়ে মন্দ কথা বললে, প্রতিবাদ জানাতেই পারো। তবে একটা যুদ্ধ বাধিয়ে ফেলতে হবে, এমন মনোভাব রাখাও যুক্তিযুক্ত নয়। কে–পপ শুনতে শুনতেই ভেবে দেখো, অতিরিক্ত কে–পপপ্রীতি তোমার মধ্যে বিরূপ কোনো প্রভাব ফেলছে কি না। উত্তর ‘না’ হয়ে থাকলে তোমাকে বাহবা জানাই!