জিন প্রতিস্থাপন করে কি কোনো মানুষের চরিত্র বদলানো সম্ভব? একজন খারাপ মানুষের জিনে একজন ভালো মানুষের জিন প্রতিস্থাপন করলে খারাপ মানুষটি কি ভালো হয়ে যাবে?
জিন বদলিয়ে একজন অপরাধীকে ভালো মানুষ বানানো সম্ভব হলে কী মজাই না হতো! দেশে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই ম্যাজিকের মতো উধাও করে দেওয়া যেত। কিন্তু সেই সুদিন কি আসবে? আসলে কোনো মানুষের ভালো-খারাপ কি জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে হয়, নাকি পারিবারিক ও সামাজিক পরিবেশের জন্য হয়, এ নিয়ে বিরাট বিতর্ক রয়েছে। মনোবিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করেছেন। যমজ সন্তান, একই পরিবারে জন্ম নিয়ে ভিন্ন পরিবেশে বড় হয়েছে এমন দুই সন্তান, দত্তক নেওয়া সন্তান—এ ধরনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। দেখা গেছে, ত্রুটিপূর্ণ জিনের কারণে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে কারও কারও স্নায়ুর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়, যা সহিংসতার জন্ম দেয়। এসব নিয়ে গবেষণা এখনো চলছে। আপাতত গবেষকদের অনেকে এ সিদ্ধান্তে এসেছেন যেকোনো ব্যক্তির অপরাধপ্রবণতার ওপর জিন ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, দুয়েরই প্রভাব রয়েছে। জিনের কারণে যাঁর খারাপ মানুষ হওয়ার কথা, তিনি হয়তো শুধু সুন্দর পরিবেশের প্রভাবে সমাজে ভালো মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছেন। আবার জিনগত বৈশিষ্ট্য ভালো হওয়া সত্ত্বেও খারাপ পরিবেশের কারণে কাউকে নষ্ট হয়ে যেতে দেখা গেছে। তাই শুধু ভালো জিন প্রতিস্থাপন করে একজন খারাপ মানুষকে ভালো করার নিশ্চয়তা পাওয়া কঠিন। আর তা ছাড়া জিনপ্রযুক্তির ব্যবহার এখনো মূলত উদ্ভিদ ও পরীক্ষাগারে ইঁদুরের ওপরই সীমিত। মানুষের ওপর জিন প্রকৌশলবিদ্যার প্রয়োগ বেশ সময়সাপেক্ষ। মানুষের চরিত্র বদলানোর জন্য জিনচিকিত্সার সাফল্য সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু বলার সময় এখনো আসেনি।