বাংলাদেশে পুলিশে জরুরি সেবা পেতে আমরা কল করি ৯৯৯ নম্বরে। নিউজিল্যান্ডের জরুরি সেবার নম্বর হলো ১১১। নিউজিল্যান্ডের সেই কল সেন্টার প্রতিদিনের মতো ব্যতিব্যস্ত। বরাবরের মতো একটি কল এল কল সেন্টারে। কলটি রিসিভ করে সেখানকার নারী ডিসপ্যাচার নিজের পরিচয় দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার কি কোনো জরুরি সাহায্য প্রয়োজন?’
ওপাশ থেকে ‘হাই’ বলে সম্বোধন করল নিতান্তই একটি শিশু। এবার নারী ডিসপ্যাচার খুবই আন্তরিক সুরে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী খবর?’ শিশুটি কাঁচুমাচু হয়ে বলল, ‘আমি কি তোমাকে কিছু বলতে পারি?’
নারী ডিসপ্যাচারের সম্মতি পেয়ে শিশুটি বলল, ‘তোমার জন্য কিছু খেলনা আছে। সেগুলো কেমন, এসে দেখে যাও একবার।’
ওপাশ থেকে বুঝতে আর বাকি রইল না যে ভুল করে ছোট শিশুটি জরুরি সেবা নম্বরে কল করেছে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড পুলিশের কাছে তাদের জরুরি নম্বরে আসা প্রতিটি কলই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কল রিসিভ করা সেই নারী ডিসপ্যাচার অন্যান্য জরুরি বার্তার মতোই শিশুটির ঠিকানাসহ বার্তা পাঠিয়ে দিল ওই এলাকার পুলিশের কাছে—‘একটি চার বছর বয়সী শিশু তার খেলনাগুলো পুলিশকে দেখানোর জন্য অপেক্ষা করছে।’
সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দিলেন সেই এলাকার দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল কার্ট। শিশুটির খেলনা পরিদর্শন শেষে কার্ট নিয়মমতো সুন্দর একটি রিপোর্টও জমা দিলেন থানায়। ‘শিশুটির কাছে আসলেই চমৎকার খেলনার সমাহার ছিল। ভাগ্যবান শিশুটি পুলিশের টহল গাড়িটি ভেতর থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছে, তার জন্য একবার গাড়ির লাইটও চালু করে দেওয়া হয়েছিল।’
পুরো ঘটনা ঘটেছিল নিউজিল্যান্ডে ইনভারগিলের সাউথ আইল্যান্ড সিটিতে। কিছুদিন আগে পুলিশ তাদের টহল গাড়ির ওপর পুলিশের টুপি পরে হাসিমুখে বসা সেই শিশুর ছবির সঙ্গে সেই ফোনকলের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করে। পুলিশ জানায়, যদিও তারা অযথা জরুরি সেবা নম্বরে কল দেওয়াকে উৎসাহিত করছে না, তবু পুরো ব্যাপারটি এত সুন্দর, সরল যে তারা খবরটি প্রকাশ না করেও পারল না।
চার বছরের ছোট্ট শিশুর খেলনা পরিদর্শনে গিয়ে কনস্টেবল কার্ট আন্তরিকতার সঙ্গে শিশুটিকে ১১১ জরুরি সেবা নম্বরের প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে দিতেও কিন্তু ভোলেননি।