এবার চেহারা কীভাবে আঁকা যায় (পাশ থেকে) তার হাতেখড়ি হোক। আসলে শুধু কার্টুনে নিয়মমাফিক অ্যানাটমির ধার না ধারলেও হবে। তবে অন্তত মুখ আঁকার ক্ষেত্রে ভেতরের কলকবজা কেমন, সেটা দেখে রাখলে ক্ষতি নেই। আমরা আরও সহজ করে পুরো ব্যাপারটা বুঝে নেব, তবে তার আগে চলো এটা দেখে রাখি।
ধরে নিই, প্রথমে আঁকা নীল গোল্লাটা পাশ থেকে মানুষের মাথার খুলি। সেটা কেন্দ্র বরাবর আড়াআড়ি দাগ টেনে চার ভাগে ভাগ করে নিই। এবার ডান দিকের নিচের ভাগটা থেকে একটা চতুর্ভুজাকৃতি (আসলে ট্রাপিজিয়াম) আরেকটা ফর্ম নামাই। এটা আসলে পাশ থেকে আঁঁকা চোয়াল। এটুকু বেশ ভালোমতো বোঝার আছে। কারণ, চেহারা আঁকায় অন্যতম সাধারণ সমস্যা হলো এই চোয়াল অংশটা একেবারেই না আঁকা। এই অংশটা কিন্তু সব সময় চতুর্ভুজই হবে, তা নয়। পাশে তার কিছু উদাহরণও দেওয়া হলো। চোয়ালটুকু বিভিন্নভাবে এঁকে বিভিন্ন চেহারা এনে ফেলা যায় বেশ সহজে।
এবার আমরা আরেকটু ডিটেইলে যাই। মাথার খুলিটা শুধু একটা বৃত্ত না করে তিন ভাগের এক ভাগ নিচের থেকে কমিয়ে দিই। যেটুকু রয়ে গেল সেটুকুর মধ্যেই মানুষে চোখ-নাকের ফুটো আর ওপরের পাটির দাঁত থাকে, সেটা আমরা পরে আরও ভালোভাবে দেখব। আপাতত সেই চতুর্ভুজ চোয়ালটা বসাই। আর সেটার ওপরও অস্ত্রোপচার করে ডান থেকে কিছুটা অংশ সরিয়ে দিই। আসলে এই জায়গাটা পাশ থেকে দেখা মুখগহ্বর। ব্যস, আমাদের মাথা মোটামুটি বোঝা হয়ে গেল।
এবার সেই প্রথম পর্বে দেখা আমাদের চোয়ালের বড় স্ক্রুটা দিয়ে সেটা খুলির সঙ্গে এঁটে দেওয়া যাক। ব্যস, এবার এই স্ক্রুর অবলম্বন থেকে চোয়াল (মানে চাপা) ওপর-নিচ করতে থাকবে। ওপরের দ্বিতীয় ড্রয়িংয়ে খেয়াল করি, মাথার সামনের দিকে সমান করে এঁকে নেওয়া হয়েছে, এই অংশটা আসলে কিছুটা সমানই থাকে। এবার শেষ ড্রয়িংটায় কঙ্কালের গঠনটা একটু হালকা করে ওপরে একটা মাথা এঁকে দেওয়া হলো। এখন কথা হলো, সারা জীবন কি তবে এই রকম বিটকেলে করে একটা কঙ্কাল এঁকে নিয়ে তারপর আঁঁকতে হবে? না, আসলে এটা আমরা বোঝার জন্য টুকে নিলাম। ভেতরের গঠনটা জানা থাকলে পরে যেকোনো রকমের চেহারা আঁকা আমাদের জন্য সহজ হবে, আমরা দেখি এই যেটুুকু শিখেছি সেটুকু দিয়ে কত রকম (পাশ থেকে) চেহারা আঁকা যায়।
আমাদের এবারের প্র্যাকটিসটা হবে এই পাশ থেকে কিছু খুলি আর বিভিন্ন আকারের চাপা আঁঁকা। এর পরের অংশে প্রথম পর্বের সেই ডিম মানুষের ধড়ের সঙ্গে এরপর এই মুণ্ডুটা জুড়ে শুরু হবে মজা। আপাতত এখানেই থামার আগে চোখ-নাক-মুখ কোনটা কোথায় বসানো যায় তার একটা ছোট্ট পরামর্শ।
এর পরেরবার আমরা নানা ভঙ্গিমা আর বিভিন্ন ধরনের চেহারা কীভাবে সহজে আঁকা যায় তা দেখে সেই ডিম মানুষের সঙ্গে বসিয়ে কাজ শুরু করে দেব। আপাতত ততক্ষণ এবারের মুণ্ডুগুলো আয়ত্তে আনি।