তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থলের এই পৃথিবীতে পানির নাকি বড়ই অভাব! কী, ভ্রু কুঁচকে যাচ্ছে? চার ভাগের তিন ভাগই যদি পানি হয় তাহলে তো অভাব হওয়ার কথা নয়। আসলে অভাবটা হচ্ছে বিশুদ্ধ খাবার পানির। কারণ, পৃথিবীতে বর্তমানে মোট বিশুদ্ধ খাবার পানি ২ দশমিক ৫ শতাংশ। বাকি ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশের সবটাই খাবার অযোগ্য।
পানি পানযোগ্য করতে নানা ধরনের ফিল্টার বা উপকরণ আছে বাজারে। সেটা নিয়ে আপাতত তোমাদের মাথা না ঘামালেও চলবে। বরং যেটুকু বিশুদ্ধ পানি আছে সেটাকেই নিরাপদ রাখতে মাথা ঘামাতে পারো। বাসায় তো পানি খেতে গ্লাস বা জগের ব্যবহার আছেই, চাইলে তোমার পানির পাত্রটি বদলেও নিতে পারো। পানি খেতে ব্যবহার করতে পারো একটি বোতল। বোতল! শুনে হাসি পেলে সেটাকে আটকাও। কারণ, আমি কিন্তু বাজারের মিনারেল ওয়াটার যে বোতলে বিক্রি হয় সেই বোতলের কথা বলছি না। এ বোতল একটু আলাদা, ফ্যাশনেও পারফেক্ট। খাবার টেবিল ছাড়াও পড়ার টেবিল বা স্কুল-কলেজেও সঙ্গী হতে পারে বোতলটি। কোথাও ভ্রমণে গেছ, ঘুরে ঘুরে গলা শুকিয়ে কাঠ? পুরোদস্তুর পর্যটকের মতো পিঠের ব্যাগের পাশে হাত দাও। বোতলটা হাতে নিয়ে টাশ করে ছিপি খুলে ঢক ঢক গিলে ফেলো। ব্যস, ক্লান্তি দূর করে তোমাকে চাঙা করে তুলবে। বারডেম টু জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ মেডিকেল অফিসার ফাহমিদা রহমান বলেন, ‘কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েরা এমনিতেই অনেক বেশি দুরন্ত হয়। সারা দিন পড়াশোনা, দৌড়াদৌড়ি ও খেলাধুলায় তাদের শরীর ঘেমে প্রচুর পরিমাণে পানি বেরিয়ে যায়। যে কারণে তাদের দৈনিক এক থেকে দুই লিটার পানি পান করা দরকার। আর আয়েশ করে পানি খেতে পানির বোতল খুবই কাজের একটা জিনিস। তবে প্লাস্টিকের পানির বোতল হলে সেটা ভালো মানের কি না দেখে নিতে হবে। কারণ, প্লাস্টিক থেকে পানির সঙ্গে ধীরে ধীরে পলি কার্বনেট উইথ বিসফেনোলে নির্গত হয়ে পানিতে মিশে যায়, যা মানব শরীরের জন্য ক্ষতিকর। প্লাস্টিক বোতলে তাই ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টার বেশি পানি না রাখাই ভালো।’
একটা বোতল হবে বোতল?
ছোট-বড় সব বয়সীদের জন্য আছে পানির বোতল। তবে কিশোরদের পানির বোতল সবচেয়ে বেশি নকশাদার। নামে এটি পানির বোতল হলেও এতে কিন্তু বিভিন্ন ফলের জুসও খেতে পারো। বাজারে মোট তিন ধরনের পানির বোতলের দেখা মিলবে। প্লাস্টিক ছাড়াও আছে মেটাল বা মোটা কাচের তৈরি পানির বোতল। আরএফএল প্লাস্টিক লিমিটেডের ব্র্যান্ড ম্যানেজার এফ এম আরাফাতুর রহমান বলেন, ‘ক্রেতাদের চাহিদার কারণে আরএফএল সাতটি নকশার বিভিন্ন রঙের পানির বোতল বাজারে এনেছে। প্লাস্টিকের বোতলের গুণগত মান ঠিক রাখতে আমরা বোতল তৈরির কাঁচামালের ফুড গ্রেড সনদ দেখে আমদানি করে থাকি। বোতলগুলো রং ও নকশায় আধুনিক রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। বোতলের মুখ খুলে যাতে পানি পড়ে না যায়, সে কারণে মুখের ছিপিটা শক্ত করে বসানো হয়।’
সরাসরি মেটালের পানির বোতল ছাড়াও ভেতরে মেটাল ও বাইরের আবরণে প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো বোতলের দেখাও মিলবে। এ ছাড়া মোটা কাচ দিয়ে তৈরি পানির বোতল আছে। বোতলের বিভিন্ন ধরনের আকার আছে। বোতলের গায়ে বিভিন্ন ধরনের লেখা বা ছবি আঁঁকাও থাকে। বোতলের মুখের অংশে অনেকটা চওড়া না হওয়াই ভালো। এতে যাত্রাপথে পানি খেতে গেলে ভিজে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। অনেক বোতলের মুখে স্ট্র যুক্ত থাকে, যার ওপরে আরেকটি ঢাকনা বসানো। ডট প্রিন্ট ও ডোরাকাটা নকশার বাইরে এক রঙের ভেতরে লাল, হলুদ, গোলাপি, সবুজ ও নীল রঙের বোতলই বেশি চলছে বলে জানালেন নিউমার্কেটের নার্সারি গ্রিন স্টোরের দোকানি উজ্জ্বল খান।