বৃত্ত, ত্রিভুজ আর চতুর্ভুজ শুধু যে চেহারা আঁকার ক্ষেত্রেই লাগে তা নয়, পুরো কার্টুন ফিগার আঁকতেও একই আকৃতি ব্যবহার করা যায়। আজকের পর্বে আমরা দেখব এই তিনটা দিয়ে কী কী করা যায়।
উপরের গোল্লা, ত্রিভুজ আর বর্গ দিয়েই কিন্তু মিলিয়ে-ঝিলিয়ে কার্টুন ফিগারগুলো আঁকা যায়। যেমন: মাঝখানের ত্রিভুজ দিয়ে যেটা আঁকা, সেটা আসলে খালি ত্রিভুজ দিয়েই করা। গোলটার জন্য অবশ্য হাত-পা আঁকতে কাঠি ব্যবহার করা হয়েছে। ওদিকে শেষের কার্টুনটার মূল বডি আসলে একটা বর্গ। কিন্তু তার হাতগুলো আবার কিছুটা বেঁকে আছে। আসলে আঁকার ক্ষেত্রে একেবারে এমন শক্ত ফর্ম দিয়ে কাজ করা যায় না, জায়গায় জায়গায় সেগুলো বাঁকাতেও হয়। আমরা এবার দেখি এই তিনটা ফর্ম যদি বাঁকিয়ে আঁকা হয়, তবে কী দাঁড়ায়।
যেটা দাঁড়ায় সেটা কিছুটা এমন। সেই আগে যেমন আমরা চেহারা আঁকার ক্ষেত্রে ইচ্ছামতো কিছু ফর্ম এঁকেছিলাম, অনেকটা তেমনই। খেয়াল করার আছে যে যত আঁকাবাঁকাই করি না কেন, আসলে গোলটা কিন্তু শেষে গোলই মনে হচ্ছে, আবার ত্রিভুজটা কখনোই চারকোনা হচ্ছে না। মানে তাদের মূল চরিত্রটা আবার হারিয়েও যাচ্ছে না। আসলে কার্টুন ড্রয়িংয়ে এ ধরনের ফর্ম অনেক ব্যবহার করা হয়।
এবার দেখা যাক, এই তিনটা ফর্ম মিলিয়ে কীভাবে একটা পুরো ফিগার করা যায়। পরের পাতার কার্টুন ফিগারে আসলে এই তিনটা ফর্মই বারবার ব্যবহার করা হয়েছে। গোলটা মোটামুটি গোলই আছে, যদিও চারকোনা বা আয়তক্ষেত্রগুলো একটু একটু বাঁকানোর প্রয়োজন হয়েছে। এভাবে যদি একটা কার্টুন ফিগার আঁকা হয়, তবে সেটা বেশ নিয়ন্ত্রণে থাকে। অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারব কোন অংশটা আসলে কেমন হবে।
নিচের সব কটি ফর্মই কিন্তু পুরোটা আঁকা হয়েছে। পরে অপ্রয়োজনীয় অংশ মুছে দেওয়া হয়েছে। চাইলে এটাকে আস্তে আস্তে ডিটেইলের চূড়ান্তে নেওয়া যায়। কিন্তু কার্টুনে অতটা দরকার নেই। এমনকি এখনকার কার্টুন নেটওয়ার্কের দারুণ সব কার্টুন কিন্তু এই রকম সহজ ফর্ম দিয়েই করা হয়। জাপানি ডোরেমন পোকেমন বা গেন্দি তারতাকোভস্কির পাওয়ার পাফ গার্লস, ডেক্সটার্স ল্যাবরেটরি বা সামুরাই জ্যাক কিন্তু এভাবেই করা। সুতরাং, যারা ডিটেইল করতে পারি না ভেবে ভয় পাচ্ছিলাম, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এটুকুই যথেষ্ট কাজ চালানোর জন্য।
ইন্টারনেট থেকে নামানো নিচের ছবিটায় সামুরাই জ্যাকের কিছু চরিত্র দেখা যাচ্ছে, যেটি একেবারে সাধারণ কিছু ফর্মেরই যোগ-বিয়োগ। ভালো কথা, যারা ডিটেইল করতে চাইছ, তাদের জন্য তো আমাদের আরেকটু এগোতে হবে। সুসংবাদ হলো, আমরা আস্তে আস্তে ডিটেইলের দিকে যাচ্ছি। আগামী পর্বে আমরা বহু চেনা ফর্মের সঙ্গে রং আর টেংচার মিলিয়ে ডিটেইল কীভাবে কাজ করে, সেটা বোঝার চেষ্টা করব। আপাতত গোল, ত্রিভুজ ও চতুর্ভুজই চলুক।