‘দ্বিচক্রযান’ মানে দুই চাকাবিশিষ্ট বাহন। আর দুই চাকার কোনো বাহনের কথা বললে সবার আগে মনে পড়ে সাইকেলের কথা।
আমাদের জীবনে সাইকেলের ব্যবহার বহুমাত্রিক। সাইকেল ব্যবহারের আগে তা চালানো শেখা গুরুত্বপূর্ণ। সাইকেল চালানো শেখার ন্যূনতম যোগ্যতা হলো আছাড় খাওয়া। স্মরণকালের ইতিহাসে আছাড় না খেয়ে কেউ সাইকেল চালানো শিখেছে কি না তা নিয়ে একটা গবেষণা হতে পারে। সবাই কমবেশি আছাড় খেয়েছে, খায় এবং খাবে। তবে অনেকেই ‘চালাই সাইকেল, না খেয়ে আছাড়’ এই প্রবাদের সার্থকতা উদ্ধারের জন্য সাইকেলে অতিরিক্ত দুই চাকা লাগিয়ে নেয়। এরাও যে আছাড়ের কবল থেকে রেহাই পায় তাও হলফ করে বলা কঠিন।
আগেই বলেছি, সাইকেলের ব্যবহার বহুমাত্রিক। বাহন হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও এর আরও ব্যবহার রয়েছে।
যেমন আমার স্কুলের এক বন্ধু ছিল যে প্রায়ই ক্লাসে দেরি করে আসত। তাকে দেরির কারণ জিজ্ঞেস করলে বলত, ‘স্যার, সাইকেলের চাকার হাওয়া ছিল না। চেইন পড়ে গেছিল...’। এভাবে সাইকেলের দোহাই দিয়ে প্রায় প্রতিবারই বেঁচে যেত সে। অনেকেই বলতে পারে, ‘ভাই, সাইকেল চালানো তো অনেক কষ্ট। সাইকেল চালাব কেন?’ ধরো, তুমি সাইকেলের বদলে বাসে চড়ে স্কুল বা কলেজে গেলে। ফলে বাসে একজন যাত্রী বাড়ল। এভাবে অনেকেই বাসে যাবে। ফলে বাসের চাহিদা বাড়ল, ফলে বাসও বাড়ল। বাসের ইঞ্জিন থেকে নির্গত হয় তাপ। ফলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বাড়বে। তাপমাত্রা বাড়লে সবাই এসি আর ফ্যান কিনবে। এসি থেকে সিএফসি গ্যাস নির্গত হয়। সেটা আবার গ্রিনহাউস গ্যাস সিএফসি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রাও বাড়বে। ফলে মানুষ আরও এসি আর ফ্যান কিনবে। চায়নিজ এসির দাম কম হওয়ায় আমদানিকারকেরা বিপুলসংখ্যক এসি আর ফ্যান আমদানি করবে। এ কারণে চীনের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে। এই দেখে হিংসায় গা জ্বলে যাবে আমেরিকার। তারা নানা ছলেবলে চীনের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হবে। এই দেখে চীনের পক্ষ নেবে রাশিয়া। সমগ্র ইউরোপ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাবে। আর সবশেষে অরাজকতা গড়াবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার জম্মু-কাশ্মীর সীমান্ত সংঘাতে। শুরু হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ!
তাহলে দেখো, তোমার এই সাইকেল না চালানোর জন্য শুরু হয়ে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। তাই বিশ্বশান্তি রক্ষার্থে সাইকেল চালাও, অন্যকেও চালাতে উৎসাহিত করো।