পা চলবে, কিন্তু হাঁটার কষ্ট নেই। স্কেটিংয়ের মজাই আলাদা। দ্রুতগতিতে পথ চলাই শুধু নয়, স্কেটিং আসলে একধরনের খেলা, যে খেলা শরীর ফিট রাখতেও সাহায্য করে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, খুলনাসহ বিভিন্ন শহরে স্কেটিং খেলা চলছে ক্লাবের মাধ্যমে বা ব্যক্তিগতভাবে। যানজটের রাস্তায় আটকে পড়া গাড়িকে পাশ কাটিয়ে সাঁই করে ছুটে যাওয়া স্কেটম্যানকে সুপারম্যান না ভাবলেও অনেকেই চোখ বড় বড় করে তাকায়। চাকাযুক্ত বিশেষ জুতা পরে গতিময় ছুটে চলার একমাত্র সহজ উপায় হলো স্কেটিং। বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা স্কেটিংয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরির খেলায় বর্তমানে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে। বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আসিফুল হাসান বলেন, ‘বর্তমানে অনেক ছেলেমেয়ে স্কেটিং খেলায় আগ্রহী হচ্ছে। ছোট বয়স থেকেই অনেকে শুরু করছে। তৃণমূল থেকে আমরা সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের স্কেটিং দল আরও ভালো ফল বয়ে আনবে আশা করি।’
বাংলাদেশে স্কেটিং
বাংলাদেশে স্কেটিং খেলা চলছে মোটামুটি ৩৩ বছর হলো। আর্জেন্টাইন কোচ গ্রেগোসহ দুজন বাংলাদেশির হাত ধরে এর যাত্রা। এরপর ১৯৯৪ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং ফেডারেশন। এই ফেডারেশনের অধীনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্কেটিং খেলোয়াড় তৈরির কাজ চলছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতিবছর স্কুলভিত্তিক স্কেটিং প্রতিযোগিতা, জাতীয় স্কেটিং প্রতিযোগিতা, আন্তক্লাব স্কেটিংসহ নানা ধরনের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। দেশের বাইরে নিয়মিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ স্কেটিং দল।
স্কেটিংয়ের নানা প্রকার
স্কেটিংয়ের বিভিন্ন খেলার মধ্যে ফিগার স্কেটিং, হকি স্কেটিং, রোলবল স্কেটিং ও স্পিড স্কেটিং বাংলাদেশে অনেক জনপ্রিয়। শীতপ্রধান দেশে বরফের ওপরে বিশেষ একধরনের স্কেটিং হয়। দুই বছর অন্তর একেকটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে খেলা পরিচালনা করা হয়।
বয়সভিত্তিক ৬-৮, ৮-১০, ১০-১২, ১২-১৪, ১৪-১৬, ১৬-১৮ ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা হয়। এ ছাড়া ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে রয়েছে আরেকটি ক্যাটাগরি।
যেখানে শিখতে পারবে
রাজধানীতে স্কেটিং শেখানো হয় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে উত্তরা ফ্রেন্ডস ক্লাব, ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের ভেতরে, ধানমন্ডি লেকের ভেতর, কানাডিয়ান স্কুল মাঠে, গুলশান ইয়ুথ ক্লাব, উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের রয়েল ক্লাব। এ ছাড়া দ্রুত শুরু হবে বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউয়ের পাশেসহ বিভিন্ন স্কুলের মাঠে। ঢাকার বাইরে দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার পুরাতন হেলিপ্যাড মাঠে নিয়মিত চলছে স্কেটিং প্রশিক্ষণ। এই মাসে চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে স্কেটিং খেলোয়াড় নির্বাচন। এ ছাড়া নিজ অঞ্চলের জেলা ক্রীড়া সংস্থায় যোগাযোগ করে স্কেটিং খেলার খোঁজখবর জানতে পারো।
স্কেটিং শিখতে যা দরকার
স্কেটিং জুতা, সেভ গার্ড, হাতের কনুই ও পায়ের হাঁটুর জন্য বিশেষ সেফটি গার্ড, হেলমেট, হাতের গ্লাভস, জার্সি ও শর্টস।
স্কেটিং শিখতে বিভিন্ন ক্লাব বিভিন্ন রকম টাকা নিয়ে থাকে। বাংলাদেশ রোলার স্কেটিং দলের জাতীয় কোচ আশরাফুল আলম মাসুম জানান, পাঁচ বছর বয়স থেকে স্কেটিং শুরু করা যেতে পারে। এই বয়সে বাচ্চাদের মেধা ও মনোযোগ বেশি থাকে। দুই দিনের মধ্যেই সাধারণত দাঁড়াতে শিখে যায়। এরপর নিজের শক্তি বা সামর্থ্যের ওপর তার গতি বাড়বে।