সায়েন্স ফিকশন গল্পে অনেক সময় দেখা যায়, রোবট মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে ওঠে। সত্যিই কি রোবট মানুষের ক্ষতি করতে পারে? মানুষের মৃত্যু হতে পারে রোবটের হাতে?
রোবট তৈরি করার মূল কারণ মানুষের কাজকে সহজ করা। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জটিল, ঝুঁকিপূর্ণ ও সূক্ষ্ম কাজ করে রোবট। ব্যক্তিগত ব্যবহারে রোবট ব্যবহার করা হয়। রোবটের পরিচয় মানুষের কাজ সহজ করার কারিগর হিসেবে। যেমন সম্প্রতি এআই নির্মিত হিউম্যানয়েড রোবট পোল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানে সিইও হিসেবে যোগ দিয়েছে, যার নাম মিকা। রোবটটি ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত থাকে কোম্পানির হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। এটি অবশ্যই একটি দারুণ উদ্ভাবন। তবে এমন উদ্ভাবনের আগে থেকেই রোবট প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। নানান গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রোবট কাজ করে।
শিল্পকারখানার পণ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে প্যাকিং হয়ে পরিবহনের কাজটুকুও করে রোবট। আবার বাসায় খাবার পৌঁছে দেওয়া কিংবা রাঁধুনির কাজও করছে রোবট। কালক্রমে রোবট মানুষের কাজ সহজ করে তুলছে, স্বীকার করতে হবে।
কিন্তু সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ায় ঘটেছে অদ্ভুত এক ঘটনা। কাজ সহজ করার কারিগর এক রোবটের হাতেই সম্প্রতি প্রাণ হারিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্মী। এ দেশের সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপের তথ্যমতে, সাউথ গিয়ংসাং প্রদেশের মরিচ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানের গোলমরিচভর্তি বাক্স তুলে কনভেয়ার বেল্টের ওপর রাখা এবং সেগুলোর বহনের কাজে ব্যবহৃত হতো রোবটটি, যা ঘটনার কিছুদিনের মধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার কথা ছিল।
রোবটটির সেন্সর পরীক্ষার দায়িত্বে থাকার সময়ে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কর্মীকে সাধারণ পণ্যের বাক্স ভেবে কনভেয়ার বেল্টের ওপর চেপে ধরে রোবটটি। এতে মুখ ও বুকে গুরুতর আঘাত পান তিনি। আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানায়, ঘটনার প্রেক্ষাপটে মেশিনের সমস্যার চেয়ে মানবত্রুটির দায় হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ রকম ঘটনা পরবর্তী সময়ে যেন না ঘটে—সবার এমনই আশা। রোবটের হাতে মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হওয়ার সময় এখনই।