শৈশবে আমরা অনেক মজার মজার জিনিস দেখি, যার আসল রহস্য বড় হয়ে জানতে পারি। ঠিক যেমন ছোট্টবেলায় নানুবাড়ি বেড়াতে গিয়ে এক আজব ছাতা দেখেছিলাম। আজব কেন, বলছি। বৃষ্টির সময়ে মানুষ ছাতা ব্যবহার করে জানি। তাই বলে ব্যাঙও বুঝি ছাতা ব্যবহার করে? ভারী আশ্চর্যের বিষয় তো! কল্পনায় ব্যাঙের মাথার ওপর ছোট্ট একটি ছাতা দেখে অনেক মজা পেতাম। পরে জানতে পারলাম, আসলে ‘ব্যাঙের ছাতা’ হলো মাশরুম বা একধরনের ছত্রাক।
অ্যাগারিকাস নামের বহুবর্ষজীবী ছত্রাকটি প্রকৃতির এক অদ্ভুত সৃষ্টি, যা আমরা ব্যাঙের ছাতা বা মাশরুম নামে চিনি। এর ছাতার আকৃতির চওড়া টুপি থাকে, আর সেই টুপির নিচে থাকে শক্ত, লম্বা এক ডাঁটা। যাকে বলে ফ্রুট বডি। তবে এই ছাতার মূল অংশ মাটির নিচে বেশ খানিকটা জায়গাজুড়ে ছড়িয়ে থাকে। এমনকি এই মূল অংশ অন্যান্য ব্যাঙের ছাতার সঙ্গে অন্তর্জালের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। একে অপরের খবর নেয়, যোগাযোগ করে!
ব্যাঙের ছাতা নানা রঙে দেখা যায়। যেমন সাদা, হলুদ, লাল বা বাদামি। রঙের কারণে এগুলো আরও আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
কেন একে ব্যাঙের ছাতা বলা হয়?
মাশরুমকে ব্যাঙের ছাতা বলার কারণ, এটি সাধারণত ভেজা পরিবেশে বা বর্ষাকালে মাটিতে জন্মায়। একই সময় চারপাশে বেশি ব্যাঙ দেখা যায়। আর দেখতে অনেকটা ছোট্ট ছাতার মতো হওয়ায় এর নাম হয়ে গেছে ব্যাঙের ছাতা।
মাশরুমের ব্যবহার ও গুণাবলি
অনেক প্রজাতির মাশরুম আমাদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এতে থাকে অনেক অনেক পুষ্টি উপাদান। খেতে সুস্বাদু। এই খাবার মাংসের মতো আমিষও না, আবার সবজির মতো নিরামিষও না। এর অবস্থান দুটোর মাঝামাঝি; এতে থাকে প্রোটিন, শর্করা, মূল্যবান লবণ ও নানা ভিটামিন। এসব উপাদান থাকায় ও কম ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় ব্যাঙের ছাতা হৃদ্রোগীদের জন্য একটি চমৎকার পথ্য। তবে কিছু মাশরুম খাওয়ার উপযোগী হলেও কিছু আছে এমন বিপজ্জনক, ভুলে খেয়ে ফেললে একবারে অক্কা পাওয়ার দশা হবে।
বাংলাদেশে আছে প্রায় ২০ প্রজাতির মাশরুম। এর মধ্যে পাঁচ-ছয়টি বিষাক্ত। একটি বিষাক্ত মাশরুম প্রাণ কেড়ে নিতে যথেষ্ট। তাই, প্রকৃতির এই মজাদার ‘ছাতা’ চেনার ক্ষেত্রে তোমাকে সতর্ক থাকতেই হবে।