ডিম একটি প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। উচ্চ ফাইবার থাকে ডিমে। ডিম খায় না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। সারা বিশ্বে বিচিত্র রেসিপিতে ডিম খাওয়া হয়। আমরা সাধারণত ডিম বাজার থেকে কিনে এনেই ফ্রিজে রেখে দিই। ফ্রিজ আছে অথচ ফ্রিজে ডিম রাখে না, এমন পরিবারও বুঝি খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণটা সহজ। ডিম বেশি দিন বাইরে রাখলে সেটা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকে আমরা সবাই ডিম ফ্রিজে রাখি।
তবে আসলেই কি ডিম ফ্রিজে রাখা জরুরি? আমাদের দেশে এখন গরম পড়েছে। ডিম বাইরে রাখলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমরা ডিম ফ্রিজে রাখাই স্বাভাবিক মনে করি। কিন্তু এই প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্র আর ইউরোপে আছে ভিন্ন মতামত। ইউরোপে সুপারশপে ডিম ফ্রিজে রাখে না? কারণ, তাদের উৎপাদন ও সংরক্ষণের ধরন আলাদা।
প্রতিবছর ১.৩৫ মিলিয়ন আমেরিকান এবং ৯১ হাজারের বেশি ইউরোপবাসী ডিমের মধ্যে থাকা সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। এই জন্য খাদ্যনিরাপত্তাবিশেষজ্ঞরা ইউরোপে ডিমের সুরক্ষার ক্ষেত্রে ভিন্ন মতামত দেন। তাঁদের মতে, ডিমগুলো না ধুয়ে রাখা ভালো। ধুয়ে ফেললে ডিমের খোসা পাতলা হয়ে যায়। তাই না ধুয়ে রাখা সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া ডিমে প্রবেশ করতে পারে না। এভাবে ফ্রিজে না রেখে ঘরের তাপমাত্রায় ডিম সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।
তবে ইউরোপে ডিম খাওয়ার আগে সঠিকভাবে ধুয়ে প্রক্রিয়াজাত করে খাওয়া হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রে ডিম বিক্রির আগে ধুয়ে ফেলা হয়। তাই ব্যাকটেরিয়া যেন খোসা ভেদ করে ডিমে প্রবেশ করতে না পারে, তাই সেখানে ডিম ফ্রিজে রাখা হয়। সর্বনিম্ন ৪৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ডিম ফ্রিজে রাখা উচিত। ইউরোপে ডিম উৎপাদনের ২৮ দিন পর্যন্ত খাওয়ার উপযোগী মনে করা হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিকভাবে প্রক্রিয়াজাত ডিম প্যাকেট করার ৩০ দিন পর্যন্ত বিক্রি করা হয় বা মেয়াদ থাকে।
তবে ইউরোপ হোক আর অন্য কোথাও হোক, ডিম যদি দোকানে রেফ্রিজারেট না করা হয়, তবে অবশ্যই সেগুলো বাড়িতে এনে ফ্রিজে রাখা উচিত। কারণ, ফ্রিজ থেকে বের করা হলে ডিমের ওপর ঘনীভবন প্রক্রিয়ায় বিন্দু বিন্দু পানি জমে। ফলে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে গিয়ে অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়তে পারে। আর যদি নতুন ডিম হয়, ডিমের খোসা অক্ষত থাকে, তবে ফ্রিজে রাখার দরকার নেই। এমনিতেই ডিম বেশ কয়েক দিন ভালো থাকবে।
তাই যদিও প্রক্রিয়াজাত করার পদ্ধতি ভিন্ন, উভয়ই কার্যকর।