আজ রাতটা বছরের সবচেয়ে বড় রাত। আজ রাতে চাইলে একটা বই পড়ে ফেলা যাবে। একটা সিনেমা দেখার জন্য একটু বেশি সময় বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব। ঘুমপ্রিয় হলে, আজ রাতে একটু বেশি সময় ঘুমিয়ে নেওয়া যাবে। কারণ অন্যান্য রাতের তুলনায় আজ রাতটা একটু বড়।
উত্তর গোলার্ধে ২১ ডিসেম্বর রাতটা সবচেয়ে দীর্ঘ। এর পেছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ পৃথিবী খানিকটা হেলে আছে। কার তুলনায়?
বিষয়টা বুঝতে প্রথমে সূর্যকে কল্পনার চোখে দেখে নাও। এর চারপাশে পৃথিবী ঘুরছে। এবার কল্পনার চোখে ভাবো, সূর্য আর পৃথিবী- দুটোই একটা কাগজের পাতের ওপরে বসানো। পৃথিবীর ঠিক কেন্দ্র বরাবর একটা লাঠি পুঁতে দিলে, সেটা কাগজের পাতটার ওপর একদম খাড়া থাকার কথা না? ঘটনা এখানেই।
এই লাঠিটাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে অক্ষ। এই লাঠিটা, মানে পৃথিবীর অক্ষটা কাগজের পাতের (বিজ্ঞানের খটোমটো ভাষায় বলে, প্রদক্ষিণ তল) ওপর একদম খাড়া নেই, একটু হেলে আছে, ২৩.৫ ডিগ্রি কোণে।
পৃথিবী তো এক জায়গায় স্থির নেই। নিজের কক্ষপথে সূর্যের চারপাশে ঘুরছে (এ জন্য বছর হয়)। আবার নিজের অক্ষ, মানে মাঝের লাঠিটাকে কেন্দ্র করেও ঘুরছে (এ জন্য দিন-রাত হয়)। তাই সূর্যের সাপেক্ষে বছরের কিছু সময় উত্তর গোলার্ধের অংশটা একটু কাছে চলে আসে, আবার কিছু সময় একটু দূরে থাকে। এর ফলে, যখন কাছে থাকে, তখন গরম পড়ে। আর দূরে থাকলে, সূর্যের আলো কম পড়লে হয় শীতকাল।
২১ ডিসেম্বর উত্তর মেরু সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে, হেলানো অবস্থায়। তুমি যদি সামান্য ছায়া পাওয়ার জন্য কোনো সমুদ্র সৈকতে ছাতা হেলিয়ে ধরো, ঠিক সেরকম।
গ্রীষ্মকালে উত্তর মেরু সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। ফলে আমাদের দিন দীর্ঘ এবং রাত ছোট হয়। আর শীতকালে ঘটে উল্টোটা। ফলে রাত দীর্ঘ হয়। ২১ ডিসেম্বর উত্তর গোলার্ধ সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকে। এ কারণেই আজ আমাদের সবচেয়ে ছোট দিন এবং দীর্ঘতম রাত।
তাহলে দেরি না করে সময়টা কাজে লাগিয়ে ফেলা যাক, কী বলো?