প্রতিবছর ২৯ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী বিশ্ব জাগুয়ার দিবস পালিত হয়। তবে জাগুয়ার দিবস পালনের ইতিহাস কিন্তু খুব বেশি দিনের নয়। ২০১৮ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক জাগুয়ার দিবস পালন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তুমি কি জানো, কীভাবে জাগুয়ার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?
আসলে ১৯৭০-এর দশক থেকে জাগুয়ার হুমকির মুখে আছে। জাগুয়ার শিকার, বন উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন—এসব নানা কারণে জাগুয়ারের পক্ষে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে। সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করলে বিলুপ্ত প্রাণীতে পরিণত হবে বড় বিড়াল-জাতীয় প্রাণীটি। জাগুয়ারকে বাঁচাতে ২০১৮ সালে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নিউইয়র্কে উপস্থিত হন ১৪ দেশের প্রতিনিধিরা। সেখানে তাঁরা জাগুয়ারের ব্যাপারে আলোচনা করে ‘জাগুয়ার ২০৩০’ নামে একটি ফোরাম তৈরি করে। এর পর থেকে আন্তর্জাতিকভাবে পালিত হচ্ছে বিশ্ব জাগুয়ার দিবস।
এই দিবসে তুমি কি করতে পারো, তা বলার আগে জাগুয়ার সম্পর্কে একটু বলা দরকার। জাগুয়ার বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বিড়াল-জাতীয় প্রাণী। বাঘ-জাতীয় মোট চারটি প্রাণীর মধ্যে জাগুয়ার একটি। এরা প্যানথেরা গণের সদস্য। এই গণের বাকি তিন সদস্য হলো বাঘ (টাইগার), সিংহ ও চিতাবাঘ। এদের গায়েও চিতা বাঘের মতো কালো ছোপ ছোপ দাগ আছে। তবে এরা চিতা বাঘের চেয়ে বড় এবং শক্তিশালী। বর্তমানে আমেরিকা মহাদেশে এদের দেখা মেলে। সাধারণত স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ-জাতীয় প্রাণী এদের প্রিয় খাবার। হরিণ, বানর ও কুমিরের মতো প্রাণী ধরে খেয়ে ফেলে নিমেষেই। এদের বৈজ্ঞানিক নাম panthera onca। প্রাপ্তবয়স্ক জাগুয়ার প্রায় ৯৬ কেজি হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক একটি জাগুয়ারের মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৩ থেকে ৬ ফুট।
বাংলাদেশে জাগুয়ার নেই। তবে একই গণের প্রাণী বাঘ আছে। তাই বিশ্ব জাগুয়ার দিবসে সচেতনতা সৃষ্টি করা ছাড়া আমাদের তেমন কিছু করার নেই। কারণ, বর্তমানে সারা বিশ্বে মাত্র ১৫ হাজার জাগুয়ার জীবিত আছে। এখনো আমরা সচেতন না হলে, জাগুয়ার শুধু জাদুঘরেই দেখতে হবে। প্রকৃতিতে জাগুয়ারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যশৃঙ্খল ঠিক রাখতে, এদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
আমরা জাগুয়ার বাঁচাতে সচেতনতামূলক কাজ করতে পারি। কী কী করতে পারি?
এখন মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক অ্যাকটিভ। তাই আমরা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও ইউটিউবের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাগুয়ার বাঁচিয়ে রাখার সচেতনতামূলক পোস্ট দিতে পারি।
জাগুয়ার সম্পর্কে নিজেরা জেনে অন্যকে জানাতে পারি। জাগুয়ার যে প্রায় বিলুপ্তির পথে, এ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে পারি।
আমাদের দেশে বিড়াল প্রজাতির কী কী প্রাণী পাওয়া যায় জানতে পারি।
জাগুয়ার-সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতে পারে। যেমন কুইজ বা সচেতনতামূলক সেমিনার।
বিদেশে অনেকে গবাদিপশু রক্ষা করতে জাগুয়ার শিকার করেন। আমরা এ-সম্পর্কিত ফিচার বা আর্টিকেল লিখে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে পারি।