৩৫ টাকা চাঁদা দিয়ে শুরু
১৯৭৮ সালে মাত্র ৩৫ টাকা দিয়ে বই কিনে যাত্রা শুরু হয়েছিল বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের। সভ্য ছিলেন মাত্র ১০ তরুণ। পাঠচক্র থেকে শুরু। সে বছর হেমন্তকালে একদিন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ কয়েকজন তরুণকে বলেছিলেন, ‘তোমরা বিশ্বসাহিত্যের সেরা বইগুলো পড়বে। তোমাদের পড়ার জন্য সেসব বই আমরাই কিনে দেব। প্রতি সপ্তাহে একটি বই পড়া হবে। শুক্রবার কলেজের শিক্ষক প্রশিক্ষণের মিলনায়তনে তরুণেরা সারা সপ্তাহে পড়া বইটি নিয়ে আলাপ করবে।’
আশরাফুজ্জামান খান নামের এক ভদ্রলোক চাঁদা দিয়েছিলেন ৩৫ টাকা। কারণ, একটি ভালো এবং দামে সস্তা বই কেনা হবে। বইয়ের দাম সাড়ে তিন টাকা। ১০টি বইয়ের দাম হয় ৩৫ টাকা। প্রথম যে বই কেনা হয়েছিল, সেটি ছিল জসীমউদ্দীনের নক্সী কাঁথার মাঠ। ৩৫ টাকা দিয়ে নিউমার্কেট থেকে বই কিনে আনা হলো। শুরু হলো বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচি।
তখন পাঠচক্রের সদস্যদের মনে হয়েছিল, একটা বই কিনতেই যদি টাকা ফুরিয়ে যায়, তবে পরের বইগুলো কেনার টাকা কোথায় পাওয়া যাবে? এর উত্তর তাঁরা ভেবে পেতেন না। তখন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ধারণাকে মনে হয়েছিল অসম্ভব কল্পনা। কিন্তু আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ সেই কল্পনাকে বাস্তবে পরিণত করেন। কারণ, তিনি ‘জাদু জানেন’। জাদুবলে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৪৫ বছর পূর্ণ হওয়ার এই সময়ে সারা দেশের স্কুল-কলেজের ৪০ থেকে ৫০ লাখ ছাত্রছাত্রী বইপড়া কর্মসূচিতে বিনা মূল্যে বই পায়। স্কুল থেকে নিয়ে বইগুলো পড়ে। কেন্দ্রে এসে বই নিতে হয় না। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির গাড়িতে করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন পাঠচক্র পর্যন্ত সবার হাতে পৌঁছে যায় বই। জাদুবলেই এই কাজ সম্ভব হয়েছে। সবার হাতে বই পৌঁছে দেওয়া গেছে।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি অনেক লাইব্রেরি গড়ার পক্ষে নন। লাইব্রেরি করলেই পাঠক আসবে না। এর উদাহরণ আমাদের সামনে আছে। দেশের অনেক লাইব্রেরিতেই প্রচুর বই আছে। বলতে গেলে লাখো বই আছে। কিন্তু লাইব্রেরিতে পাঠক হাতে গোনা। আবার অনেক লাইব্রেরিতে বসার জন্য তিল পরিমাণ জায়গা খালি নেই। পুরো লাইব্রেরিতে সবাই চাকরির পড়াশোনা করে। লাইব্রেরি নিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ভাবনা হলো, পাঠককে আকৃষ্ট করতে হলে দরকার হয় ডাক দেওয়ার মতো একজন মানুষ, যিনি বই পড়তে বলবেন। এর উদাহরণ তিনি নিজেই। তাঁর বক্তৃতা শোনার জন্য ছেলেমেয়েরা জড়ো হয়। অডিটরিয়ামে জায়গা দেওয়া যায় না।
কেন লাইব্রেরি তোমার কাছে আসে, তোমাকে লাইব্রেরিতে যেতে হয় না
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ছোটবেলার স্কুলে একজন বিলেতফেরত হেডমাস্টার ছিলেন। তখনকার ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করে এসে দেশের স্কুলের দায়িত্ব নিয়েছেন। গ্রাম থেকে পড়ার জন্য তখনকার দিনে গিয়েছিলেন ইংল্যান্ডে, বড় বিস্ময়ের কথা। তিনি যা দেখে এসেছিলেন, তার কথা ক্লাসে মুখে বললে ছাত্ররা কিছু বুঝবে না। তাই তিনি নিয়েছিলেন আলাদা পদ্ধতি। লাইব্রেরিতে বই পড়া বাধ্যতামূলক ছিল। এই শিক্ষক বুদ্ধি বের করলেন। ছাত্রদের বললেন, ‘তোমরা লাইব্রেরিতে আসবে না, সবাই ক্লাসে থাকবে, আমি একটা করে লাইব্রেরি প্রতিটি ক্লাসে বানিয়ে দেব।’ এক ক্লাসের ৩০ জন ছাত্রের জন্য একটা ছোট্ট বাক্স বানিয়ে দিয়েছিলেন এই শিক্ষক। বাক্সে ছিল ৫০টি বই। প্রতি সপ্তাহে প্রত্যেক ছাত্র একটি বই বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম করা হলো। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বড় হয়ে তিনি বুঝেছেন, কেন এমন করেছিলেন সেই স্যার। যে ছাত্র বই নিল, সে যদি না–ও পড়ে, তার ভাইবোন বইটা পড়বে। তখন এক পরিবারেই অনেক ভাইবোন হতো। কেউ না কেউ বইটা পড়বে। ভাইবোন না পড়লে মা-বাবা পড়বে। বন্ধুরা পড়বে। এভাবে বইটা সবার মধ্যে ছড়িয়ে যাবে। আর বইটা যে নিয়েছে, সে পড়লে তো হলোই। ‘তুমি যখন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র থেকে একটা বই নাও, তুমি বইটা পড়লে তো উদ্দেশ্য সফল। তুমি না পড়লেও সফল। কারণ, কেউ না কেউ বইটা পড়ছে।’
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের হাত ধরে ৪৫ বছর
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের বাবা ছিলেন বাগেরহাটের সরকারি পিসি কলেজের নামকরা অধ্যাপক। তাঁদের বাড়িভর্তি বই ছিল। সেই বইগুলো পড়েই বড় হয়েছেন। ছোটবেলায় গোয়েন্দা গল্পের বই পড়তেন। পিসি কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় সাহিত্য পাঠে মন দেন। শুরুর দিকে পড়েছেন ইংরেজি সাহিত্যের বই। বাবা ইংরেজির অধ্যাপক ছিলেন বলে ইংরেজি বই দিয়ে পড়ার শুরু। এরপর বাংলা সাহিত্যের দিকে যান। ইংরেজি–বাংলা সমানতালে পড়েছেন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ লেখকদের লেখা পড়েছেন সে সময়। কলেজ শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখানে এসে পড়ায় গতি বাড়ে। সকালে ক্লাস করতেন। ক্লাস শেষ হলে যেতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে। রাত পর্যন্ত পড়তেন।
পড়ালেখা, সাহিত্য, দর্শন—এসব নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়জীবন কাটিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার দুই বছর পর্যন্ত এ রকম জীবন কাটিয়েছেন। এরপর ষাটের দশকের দিকে তরুণ লেখকদের সাহিত্য আন্দোলনে নেমে পড়লেন তিনি। বিজ্ঞাপন, লেখক, প্রেস, কাগজ কেনা, প্রুফ দেখার মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগলেন। স্বাধীনতার পর তিনি চিন্তা করলেন, দেশকে গড়তে হবে। বাংলাদেশের এখন নির্মাণের সময়। নির্মাণের জন্য দরকার হবে নির্মাতা। আলোকিত মানুষ বা নির্মাতাদের তৈরি করতে পাঠাভ্যাসের ওপর তিনি গুরুত্ব দেন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বইগুলো পড়বে, শিল্প-সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে কোমল হৃদয়ের সচেতন ও মননশীল মানুষ হয়ে উঠবে।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ ছিলেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক। পরিবেশ নিয়ে আন্দোলন করেছেন। তখন একমাত্র টিভি ছিল বিটিভি। বিটিভির শুরু ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর। বিটিভির শুরু থেকে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আছেন। সে বছর ৩১ ডিসেম্বর তিনি কবি জসীমউদ্দীনের সাক্ষাৎকার নিয়ে টেলিভিশনে যাত্রা শুরু করেন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠচক্রে প্রথম বইটাও ছিল জসীমউদ্দীনের বই। টিভিতে প্রচুর অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করতেন। বিটিভির ব্যতিক্রমী ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘সপ্তবর্ণা’র তিনি পরিকল্পনা ও সঞ্চালনা করেছেন। এই অনুষ্ঠানটি খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। বিটিভিতে ‘আনন্দমেলা’ অনুষ্ঠান করেছেন ১০ বছর। এমন প্রাণপ্রাচুর্যের অনুষ্ঠান দেশের টিভিতে আগে কেউ দেখেনি।
আনাচকানাচে আলো ছড়িয়ে গেছে
শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র গড়ার কাজে মনোযোগ দেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। বাংলামোটরের কাছে গাছে ঢাকা লাল ইটের সুন্দর ভবনে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা হয়। এই কেন্দ্রের সীমানায় ঝোপঝাড়ের মধ্যে একটি গাছ ছিল। একদিন কেন্দ্রে এসে তিনি দেখেন, গাছ নেই। কে গাছ কাটল? যে কেটেছিল, তার চাকরি চলে গেল। তিনি কারও চাকরি চলে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন না। কিন্তু এই গাছ কাটাকে তিনি মেনে নিতে পারেননি। বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন করেছেন। ঢাকায় যখন প্রথম ডেঙ্গু আক্রমণ হলো, সেবার তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন ডেঙ্গু প্রতিরোধে।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের হাত ধরে আলো আসা শুরু হয়। গত ৪৫ বছরে কেন্দ্রের কার্যক্রমে হাজারো ছেলেমেয়ে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায়, আনাচকানাচে ছড়িয়ে গেছে কেন্দ্রের ছোঁয়া পাওয়া মানুষেরা। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত থাকা কয়েক প্রজন্মের মানুষ পুরো দুনিয়ায় ছড়িয়ে গেছে। দীর্ঘ সময় লন্ডনে থেকেও কেউ পরিচয় দিতে পছন্দ করেন, ‘আমি কেন্দ্রের সদস্য।’ স্কুলে স্কুলে কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকেরা বইপড়া কার্যক্রম পরিচালনা করেন। স্কুলে থাকে একটা লকার। যেখানে কেন্দ্রের বই রাখা থাকে। এই লকার থেকে বই দেওয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের। এখন যেমন সুসজ্জিত ৭৮টি গাড়িতে সাজানো বই সব জেলার পাড়ায় পাড়ায়, এলাকায় এলাকায় ঘুরে বেড়ায়, স্লোগান লেখা থাকে, ‘আলোকিত মানুষ চাই’, সব সময় তেমন ছিল না। যেমন যশোরে কেন্দ্রের কার্যক্রমে ভ্যানগাড়িতে চাপিয়ে বই নিয়ে যাওয়া হতো। এটাই মোবাইল লাইব্রেরির ধারণা। এভাবেই আলো আনাচকানাচে পৌঁছে গেছে।
দেশজুড়ে যত কার্যক্রম
প্রথম ৫ বছরে পাঠচক্রে ১০ জন থেকে ধীরে ধীরে সদস্য হয়েছে ২৫ জন। পাঠচক্রটি চলেছে পাঁচ বছর। পরে কেন্দ্রের জন্য বাড়ি জোগাড় করা, বই পড়া, লাইব্রেরি বানানো, সংগীতের আর্কাইভ ও সংগীত কক্ষ তৈরি, ফিল্ম বিভাগ বানানো—এগুলো করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে।
বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পাঠাগারে এখন আছে আড়াই লাখের বেশি বই। ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারে আছে সাড়ে ছয় লাখের বেশি বই। ‘আলোর স্কুল’ কর্মসূচির বইসহ কেন্দ্রের বইয়ের সংখ্যা এখন প্রায় ১০ লাখের মতো। আছে মিলনায়তন, আর্ট গ্যালারি, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সংগীত ও চলচ্চিত্রের আর্কাইভ, দলবেঁধে আড্ডা দেওয়ার উপযোগী ক্যাফেটেরিয়া, বই বিপণনকেন্দ্র। এখান থেকেই সারা দেশের স্কুলে বইপড়া কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দেশভিত্তিক উৎকর্ষ কার্যক্রম, পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি, ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি, কেন্দ্র লাইব্রেরি, আলোর ইশকুল, প্রকাশনা, বই বিক্রয়কেন্দ্র, শ্রবণ-দর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোর পাঠশালা, প্রাথমিক শিক্ষকদের বইপড়া কর্মসূচি।
জেলায় জেলায়, স্কুলে স্কুলে এখন বইপড়া প্রতিযোগিতা হয়। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট বই পড়ে। এর মধ্য থেকে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের নিয়ে ঢাকায় ২ দিনের অনুষ্ঠানে ১০-১২ হাজার ছেলেমেয়েকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয় আরও কতগুলো বই। অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যাবেলা প্রত্যেকের হাতে দেওয়া হয় মোমবাতি। একসঙ্গে জ্বলে ওঠে হাজার হাজার মোমবাতি।
৪৫ বছর পূর্তি উৎসব
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছর পূর্ণ করেছে গত বছর ডিসেম্বরে। এ উপলক্ষে ৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী বর্ষপূর্তি উত্সব। দেশবরেণ্য ব্যক্তিত্ব, কেন্দ্রের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন কর্মসূচির শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র প্রাঙ্গণ।
সকালে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভ্যরা গাইতে গাইতে, নাচতে নাচতে শাহবাগ থেকে যাত্রা শুরু করেন। দল বেঁধে নারী-পুরুষ আর শিশুরা যায় বাংলামোটরের দিকে। শোভাযাত্রা সামনের সারিতে দেখা গেছে সবার প্রিয় শিক্ষক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে। ছিলেন শিশুসাহিত্যিক ফরিদুর রেজা সাগর। লেখক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালও ছিলেন। শোভাযাত্রাটি সাজানো হয়েছিল লোকশিল্প ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে। অতিথিদের পেছনে দেখা গেছে কিছু বিখ্যাত চরিত্র। ছিল সবার প্রিয় মীনা, পিটার প্যান, আলিবাবা, সিন্ডারেলাসহ অনেকেই। আমাদের জাতীয় পাখি দোয়েলের প্রতিকৃতিও ছিল। একদল ছেলেমেয়ে সেজেছে বরযাত্রী। জেলে ভাইদের পোশাক পরা কয়েকজনকে দেখা গেছে। একদল সাপুড়ে বক্স নিয়ে হাঁটছিল। না জানি কী বিষধর সাপ তাদের ঝোলায়। একদলকে দেখা গিয়েছে পতাকা হাতে। কেউ সেজেছে মুক্তিযোদ্ধা। কেউ বাঘ। কারও হাতে লাঠি। জানা গেল, তারা সেজেছে লাঠিয়াল। মণিপুরি, ভরতনাট্যমের নাচের দলের সদস্যদের দেখা গেছে। ওই দিন কেন্দ্র সাজানো হয়েছিল ঝালর ও আলপনা দিয়ে। যেখানে সারা দিন ছিল গানের অনুষ্ঠান, আলোচনা, খাওয়াদাওয়া, আর আনন্দ–আয়োজন।
অনুষ্ঠানে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, ‘বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ৪৫ বছরে বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। স্রোতের বিপরীতে গিয়েও যে কিছু একটা করা যায়, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এর উত্কৃষ্ট উদাহরণ। রাস্তায় রাস্তায় বইয়ের লাইব্রেরি ছুটে বেড়ানোর বিষয়টি একসময় অকল্পনীয় ছিল। আমার ধারণা, আরও ৪০ বছর পর সমগ্র বাংলাদেশেই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আলো ছড়িয়ে পড়বে।’