মাস্ক ও জাকারবার্গের লড়াইয়ে কে জিতবেন
ইলন মাস্ক ও মার্ক জাকারবার্গের মধ্যে লড়াই হলে কে জিতবেন? এ ধরনের প্রশ্ন নিয়ে ভাবতে বসলে হাতে চায়ের কাপ তুলে নিতে হবে। ধীরেসুস্থে চুমুক দিতে দিতে চলো সামনে এগোই।
জুন মাসের শুরুতে গুঞ্জন উঠেছিল যে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ জিউজিৎসু খেলায় আগ্রহী। প্রতিদ্বন্দ্বী খুঁজছেন তিনি। এই সময় স্পেসএক্স এবং টেসলার প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক টুইট করেন যে তিনি ‘কেজ ফাইট’ বা খাঁচার ভেতর লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। জাকারবার্গ ‘সেন্ড মি লোকেশন’ ক্যাপশন দিয়ে টুইটটির স্ক্রিনশট পোস্ট করেন।‘সেন্ড মি লোকেশন’ কথাটি বিখ্যাত। সাবেক ইউএফসি বা আলটিমেট ফাইটিং চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন খাবিব নুরমাগোমেদভের একটি বিখ্যাত উক্তি কোট করেছেন জাকারবার্গ।
লড়াইটি আপাতত স্থগিত হলেও ভক্তদের মধ্যে আলোচনার কমতি নেই। ইন্টারনেট দুনিয়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই আলাপ চলছে, মাস্ক ও জাকারবার্গের মধ্যে লড়াই হলে কে জিতবেন?
ইলন মাস্কের শারীরিক আকৃতি দেখলে চট করে মনে হতে পারে, মাস্কের সামনে বুঝি জাকারবার্গ দাঁড়াতেই পারবেন না। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দুজনের আকার-আকৃতির তুলনা করা যাক। মাস্ক ছয় ফুট দেড় ইঞ্চি লম্বা। তবে জাকারবার্গও খুব দূরে নন। পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি লম্বা তিনি। ৫২ বছর বয়সী মাস্কের আরেকটি সুবিধা হলো তাঁর ওজন, যা জাকারবার্গের তুলনায় বেশি। মাস্ক এটা নিয়ে গর্ব করেন। তিনি টুইট করেছেন লড়াইয়ে তাঁর নিজস্ব পদ্ধতি নিয়ে। এই পদ্ধতি অনুযায়ী তিনি কেবল প্রতিপক্ষের ওপর শুয়ে থাকেন এবং কিছুই করেন না। তিনি আরও বলেন, ‘আমার বাচ্চাদের তুলে নিয়ে বাতাসে ছুড়ে দেওয়া ছাড়া আমি প্রায় কখনোই ব্যায়াম করি না।’
অন্যদিকে মার্ক জাকারবার্গ একজন অভিজ্ঞ মার্শাল আর্টিস্ট। ৩৯ বছর বয়সী জাকারবার্গ সত্যিকারের একটি প্রতিযোগিতায় জিউজিৎসু লড়েছেন। সিলিকন ভ্যালি টুর্নামেন্টে প্রথম স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক জিতেছেন। এ ছাড়া জাকারবার্গ মেটা প্রকল্পের জন্য ইউএফসি ফেদারওয়েট চ্যাম্পিয়ন আলেকজান্ডার ভলকানভস্কির সঙ্গে লড়াই করেছেন, যাঁকে অনেকেই বিশ্বের সেরা মিশ্র মার্শাল আর্টিস্ট হিসেবে চেনেন।
মাস্ক এ বছরের শুরুতে বলেছিলেন, সকালের নাশতায় তিনি একবাটি আইসক্রিম, বিস্কুট আর একটি ডোনাট খান। এদিকে জাকারবার্গ বলেছেন, তিনি অনেক দৌড়ান। কোভিড মহামারির পর সার্ফিং এবং তারপর মিক্সড মার্শাল আর্টসে (এমএমএ) নেমেছিলেন। ইউএফসি পছন্দ করেন। তাঁর মতে, এমএমএ খুব নিখুঁত খেলা। কারণ, ফাইটার যদি এক সেকেন্ডের জন্যও মনোযোগ দেওয়া বন্ধ করেন, তবে তিনি একদম শেষ হয়ে যাবেন। মানে হেরে যাবেন। আহত হবেন।
মার্শাল আর্টের পাশাপাশি জাকারবার্গ সম্প্রতি মার্ফ চ্যালেঞ্জে অংশ নেন। ২০০৫ সালে নিহত হয়েছিলেন একজন নেভি সিল। তাঁর নাম লেফটেন্যান্ট মাইকেল পি মারফির। তাঁর নামে একটি শারীরিক সক্ষমতার লড়াই হলো মার্ফ চ্যালেঞ্জ। এটি একটি কঠিন ওয়ার্কআউট। ১০০টি পুল আপ, ২০০টি পুশ আপ, ৩০০টি স্কোয়াট এবং একটি ১ মাইল লম্বা দৌড় দিতে হয়। পুরো সময় একটি ২০ পাউন্ড ওজনের ভেস্ট পরে থাকতে হয়। এ বছর মাস্ক এটি ৩৯: ৫৮ মিনিটে সম্পন্ন করেন।
শারীরিক আকৃতি, ওজন এসব দিকে এগিয়ে আছেন ইলন মাস্ক। অন্যদিকে জাকারবার্গের মিশ্র মার্শাল আর্টের সঙ্গে ফিটনেস থাকায় তাঁকে যথেষ্ট দক্ষ মনে হয়। এখন তোমার কী মনে হয়, খাঁচার লড়াইয়ে কে জিতবেন? মাস্ক নাকি জাকারবার্গ?
ইলন মাস্ক এর আগেও এমন লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন। গত বছরের আগস্টে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে স্ক্র্যাপের চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। লিখেছিলেন, ‘আমি এর মাধ্যমে ভ্লাদিমির পুতিনকে লড়াইয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ করছি। পুরস্কার হলো ইউক্রেন।’ পুতিন সাড়া দেননি। তাতে কী? এবারের ডাকে জাকারবার্গ তো সাড়া দিয়েছেন।
তোমার চা এতক্ষণে ঠান্ডা হয়ে এল। চায়ে চুমুক দিয়ে বলো দেখি, কে জিতবেন?