ইন্টারনেট হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে

হঠাৎ ইন্টারনেট চলে গেলে আমরা অস্থির হয়ে পড়ি। কিন্তু যদি এমন হয়, হঠাৎ ইন্টারনেট চলে গেল। আর এল না। ইন্টারনেট বলে আর কিছু থাকল না। তখন কী হবে? চলো, ভাবার চেষ্টা করি।

এক দিন পর

প্রথম দিনেই ফেসবুক ও গুগলের বিজ্ঞাপন থেকে আয় বাবদ ৩০ কোটি পাউন্ডের বেশি লোকসান হবে। ব্যাংকিং, টেলিফোন ও মুঠোফোন নেটওয়ার্ক সচল রাখার জন্য ইন্টারনেটের ওপর নির্ভর করা হয়। ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে এগুলোসহ বেশির ভাগ ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে।

এক সপ্তাহ পর

বিদ্যুত

আধুনিক পাওয়ার গ্রিড বা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুতের সাবস্টেশনগুলো সমন্বয় করতে ইন্টারনেট ব্যবহার হয়। ইন্টারনেট ছাড়া প্রতিটি দেশের জাতীয় গ্রিড সমন্বয়হীন হয়ে পড়বে। স্থানীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে এবং বিশ্বের বেশির ভাগ অঞ্চল ব্ল্যাকআউট হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় গ্যাসের পাইপলাইন বন্ধ হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন

এক মাস পর

বিধ্বস্ত একটি তেলের পাম্প। ছবি: এএফপি

পেট্রল স্টেশনগুলো জ্বালানি পাম্প করতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। ট্যাংকে জমা রাখা জ্বালানিস্তর পর্যবেক্ষণ করতে, তেল বেচাকেনার লেনদেন করতে ও নতুন সরবরাহের আদেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন হয়। এই জ্বালানি ছাড়া বাজার ও দোকান পর্যন্ত খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। ফলে খাবারের অভাব দেখা দেবে এবং বড় বড় গোডাউন, যেখানে খাবার জমা করা হয়, তার চারপাশে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়বে। পুলিশ বা সেনাবাহিনীকে ডাকলেও তারা আসতে পারবে না। কারণ, তাদের চলতেও জ্বালানি ও সরবরাহ প্রয়োজন হয়।

এক বছর পর

খাবারের অভাব, ঠান্ডা ও অস্থিরতায় বিশ্বব্যাপী মারা যাবে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ।
ছবি: রয়টার্স

উন্নত বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ ল্যান্ডলাইন (তারের মাধ্যমে) টেলিফোন নেটওয়ার্ক পুনরায় তৈরি করবে। সমাজ পুনর্নির্মাণ শুরু হবে। উন্নত বিশ্বে বাইরের সব জায়গা প্রাচীন কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে ফিরে যাবে। অনুমান করা হয়, খাবারের অভাব, ঠান্ডা ও অস্থিরতায় বিশ্বব্যাপী মারা যাবে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ। মানে পৃথিবীর আট বিলিয়ন মানুষের আট ভাগের এক ভাগ মানুষ মারা যাবে। বিশ্ব অর্থনীতি ১৯৩০-এর দশকে যেমন ছিল, সে সময়ে ফিরে যাবে।

সূত্র: বিবিসি সায়েন্স ফোকাস

আরও পড়ুন