মরিচ খেলে ঝাল লাগে কেন

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের হিসেবে ৬ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে মরিচগুলো খেয়েছে মাইক জ্যাকছবি: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস

বাঙালির রান্নাঘরে মরিচের অনুপস্থিতি কল্পনা করা যায় না। ঝাল খাবার খেতে অনেকে পছন্দ করেন, আবার কেউ একেবারেই পছন্দ করেন না। পছন্দ করি কিংবা না করি, মরিচ খেয়ে ঝাল লাগেনি এমন খুব কম লোক খুঁজে পাওয়া যাবে। অনেক সময় ঝালে চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ে। প্রচণ্ড ঝাল খেয়ে কেউ কেউ কানে শন শন শব্দ শুনতে পান। আগুন নেভাতে যেমন ব্যবহার করা হয় পানি, তেমনি ঝাল কমাতে পানি পান করি আমরা। ঝাল কমুক বা নাই কুমুক, মরিচ খেলে কেন ঝাল লাগে, এই রহস্য চলো জেনে নিই।

মরিচ কতটুকু ঝাল এটি পরিমাপের জন্য একটি একক রয়েছে। এই একক এর নাম স্কোভিল হিট ইউনিট (এসএইচইউ)। এই একক যত বেশি, মরিচ তত বেশি ঝাল। বিজ্ঞানীরা ল্যাবরেটরিতে ‘এইচপিএলসি’ নামক যন্ত্র ব্যবহার করে মরিচের ঝাল পরিমাপ করেন।

এই রহস্যের উত্তর লুকিয়ে আছে মরিচের ভেতরে এবং মানবদেহের পলিমোডাল স্নায়ুতন্ত্রের মিথস্ক্রিয়ায়। মরিচে ‘ক্যাপসাইসিন’ নামক এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ থাকে। যখন আমরা ঝাল খাই, তখন মুখের ভেতরের পলিমোডাল স্নায়ু ‘ক্যাপসাইসিন’ দিয়ে উত্তেজিত হয়। এই স্নায়ুগুলো ব্যথা, তাপমাত্রা ও জ্বালাপোড়া অনুভব করার জন্য দায়ী। পলিমোডাল স্নায়ু উত্তেজিত হয়ে মস্তিষ্কের সংকেত পাঠায়। মস্তিষ্ক তখন সেটাকে ‘ঝাল’ অনুভূতি হিসেবে চিহ্নিত করে।

মস্তিষ্ক এই বার্নিং সেনসেশনকে কামতে অ্যান্ডরফিন হরমোন নিঃসৃত করে। সঙ্গে লালাগ্রন্থি থেকে মুখের ভেতর কিছুটা লালারস জমা হয়। অ্যান্ডরফিন ও লালারস জ্বালাপোড়া ভাব কমিয়ে দেয়। যা কিছুটা ঝাল কমাতে সাহায্য করে।

মরিচ খেয়ে ঝাল লাগেনি এমন খুব কম লোক খুঁজে পাওয়া যাবে

মরিচ কতটুকু ঝাল এটি পরিমাপের জন্য একটি একক রয়েছে। এই একক এর নাম স্কোভিল হিট ইউনিট (এসএইচইউ)। এই একক যত বেশি, মরিচ তত বেশি ঝাল। বিজ্ঞানীরা ল্যাবরেটরিতে ‘এইচপিএলসি’ নামক যন্ত্র ব্যবহার করে মরিচের ঝাল পরিমাপ করেন। এই যন্ত্র মরিচে থাকা ‘ক্যাপসাইসিনয়েড’ নামক রাসায়নিক যৌগের পরিমাণ নির্ধারণ করে। ঝালের তীব্রতা বোঝানোর জন্য ট্যাবাস্কো রেড পেপার সস একটি সাধারণ মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়। কারণ, এটির ঝালের মাত্রা এসএইচইউ ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার। আর দৈনন্দিন যে মরিচ খাই, এর ঝালের মাত্রা ৫০ থেকে ২ হাজারের মধ্যে হয়ে থাকে।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃত বিশ্বের সবচেয়ে ঝাল মরিচ ক্যারোলিনা রিপার। এই মরিচের ঝালের প্রায় ২ মিলিয়ন এসএইচইউ। যে যত ঝালপ্রিয় হোক, এই মরিচ খাওয়ার সাহস খুব কম মানুষেরই আছে। এর মধ্যে একজন কানাডার মাইক জ্যাক। সে এক দুইটা নয় একবারে ৫০টা ক্যারোলিনা রিপার খেয়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছে। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের হিসেবে ৬ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে মরিচগুলা খেয়েছে।

সূত্র: জোয়ি, দ্য গার্ডিয়ান

আরও পড়ুন