মাথায় কত প্রশ্ন আসে
কংক্রিট আসলে কী
পৃথিবীজুড়ে ভবন তৈরির অন্যতম জনপ্রিয় উপাদান কংক্রিট বা ঢালাই। আগুনরোধী এ জিনিসটা বাতাসের আর্দ্রতা শুষে দাঁড়িয়ে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও শক্ত হয়। ফলে প্রচুর ব্যবহার করা হয় রাস্তা, সেতু এবং টানেল তৈরিতে। কিন্তু এই কংক্রিট আসলে কী?
কংক্রিট তৈরির জন্য প্রয়োজন, বাতাস, পানি, সিমেন্ট, বালি ও ইট-পাথর কুচি। এসব উপাদান নির্দিষ্ট অনুপাতে একসঙ্গে মেশালে তৈরি হয় কংক্রিট। একে পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল (ভবন তৈরির উপাদান) হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এখন কংক্রিট বলতে আমরা যা বুঝি, তার যাত্রা বেশি দিন আগে নয়। মাত্র ২০০ বছর। সে সময় প্রথমবারের মতো পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট তৈরি শুরু হয়। আমরা নির্মাণকাজে যে সিমেন্ট ব্যবহার করি, সেটাই পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট। এর আগেও মানুষ কংক্রিট ব্যবহার করত। তাতে যোগ করত কাদামাটি বা সিমেন্টের মতো অন্যান্য রাসায়নিক।
কংক্রিট ব্যবহারের সবচেয়ে প্রাচীন প্রমাণ মেলে সিরিয়া ও জর্ডানে, খ্রিষ্টপূর্ব ৬৫০০ বিসিই এর পরের দিকে। খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০ সালের কাছাকাছি সময় চীন ও মিসরের মানুষ নির্মাণকাজে কংক্রিট ব্যবহার করত। প্রাচীন রোমানরা খ্রিষ্টপূর্ব প্রায় ৬০০ সাল থেকেই কংক্রিট ব্যবহার করে আসছে।
এখন প্রশ্ন আসে, কংক্রিট কেন এত জনপ্রিয়? এর একটা বড় কারণ হলো, কংক্রিট শক্তিশালী। প্রতি বর্গ ইঞ্চি কংক্রিট তিন হাজার পাউন্ড পর্যন্ত চাপ সহ্য করতে পারে। অর্থাৎ প্রায় ১৩৬ কেজির মতো চাপ। ব্রিজ, টানেল বা ভবন তৈরির জন্য এই একটা কারণই যথেষ্ট। বেশির ভাগ সময় দেখা যায়, নির্মাণের পর থেকে দিন দিন আরও শক্তি হয়ে ওঠে কংক্রিট। কংক্রিট শুকালে পানি ও সিমেন্টের বন্ধন আরও শক্ত হয়।
শক্তির দিক বিবেচনা করলে কংক্রিটকে দামে বেশ সস্তা বলা যায়। কাঠ, লোহা, পাথর বা টাইলস দিয়ে একই পরিমাণ জায়গা একই রকম শক্ত করে তৈরি করতে খরচ হয় কয়েক গুণ। সব মিলিয়ে কংক্রিটের ব্যবহার, দাম ও উপযোগিতা সারা পৃথিবীতে একে জনপ্রিয় করে তুলেছে। কংক্রিটের হাত ধরে বিশ্বে আজ নির্মিত হচ্ছে আকাশচুম্বী ভবন বা মাইলের পর মাইল রাস্তা।