শনি গ্রহের নতুন ১২৮টি চাঁদ কোথা থেকে এল

উপগ্রহসহ শনি গ্রহপ্রতীকী ছবি: রয়টার্স

শনি গ্রহের চারপাশে আরও ১২৮টি নতুন চাঁদের সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এই আবিষ্কারের ফলে এখন শনির মোট চাঁদের সংখ্যা ২৭৪। গবেষকদের মতে, ১০০ মিলিয়ন বছর আগে মহাকাশে সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হওয়া ধ্বংসাবশেষের কারণেই এই নতুন চাঁদগুলো শনির কক্ষপথে যুক্ত হয়েছিল। তবে সেগুলোর ব্যাপারে বিস্তারিত জানা ছিল না বলে এতদিন ওগুলো চাঁদ বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে এই ১২৮টি চাঁদকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফলে ২০০-এর বেশি উপগ্রহ নিয়ে সৌরজগতের একমাত্র গ্রহ এখন শনি। আর কোনো গ্রহের ১০০টিও উপগ্রহ নেই।

এই চাঁদগুলো এতই ছোট যে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা কঠিন। তবে ভবিষ্যতে এই চাঁদগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হতে পারে।

বর্তমানে সৌরজগতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গ্রহ বৃহস্পতির। মোট ৯৫টি চাঁদ আছে সৌরজগতের সবচেয়ে বড় এই গ্রহের। ইউরেনাসের চাঁদ ২৮টি, নেপচুনের ১৬টি এবং মঙ্গলের চাঁদ দুটি। বুধ ও শুক্র গ্রহের কোনো চাঁদ নেই।

তাইওয়ানের তাইপেতে অবস্থিত অ্যাকাডেমিয়া সিনিকার জ্যোতির্বিজ্ঞানী এডওয়ার্ড অ্যাশটন ও তাঁর সহকর্মীরা কানাডা-ফ্রান্স-হাওয়াই টেলিস্কোপ ব্যবহার করে শনির চারপাশে এই নতুন চাঁদগুলো শনাক্ত করেছেন। তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে শনি গ্রহের ছবি তুলেছিলেন এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করে নতুন চাঁদগুলো খুঁজে পেয়েছেন।

নতুন পাওয়া চাঁদগুলো বেশি বড় নয়। ২-৪ কিলোমিটার ব্যাসের চাঁদ এগুলো। এই চাঁদগুলো ঘোরে শনি গ্রহের ঘূর্ণনের বিপরীতে। এজন্য এগুলোকে বলা হয় অনিয়মিত চাঁদ। নতুন এই চাঁদগুলোর নামকরণের দায়িত্ব পেয়েছেন গবেষণা দলের প্রধান এডওয়ার্ড অ্যাশটন।

আমি এখন চাঁদের হিসেব করতে করতে ক্লান্ত
গবেষণা দলের প্রধান এডওয়ার্ড অ্যাশটন

গবেষকরা মনে করছেন, শনির চারপাশের ছোট চাঁদগুলোর জন্ম মহাকাশের বিভিন্ন সংঘর্ষের ফলে হয়েছে। কিছু চাঁদ হয়তো সৌরজগতের অন্য কোনো জায়গা থেকে এসে শনির মহাকর্ষ বলে আটকা পড়েছে। আবার কিছু চাঁদ সংঘর্ষের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।

তবে এখানেই শেষ নয়। এখনো শনি গ্রহের আশপাশে এমন আরও অনেক ছোট আকারের বস্তু রয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে ভবিষ্যতে জানতে পারলে হয়তো শনির চাঁদের সংখ্যা আরও বাড়বে।

গবেষণা দলের প্রধান এডওয়ার্ড অ্যাশটন মজার ছলে বলেছেন, ‘আমি এখন চাঁদের হিসেব করতে করতে ক্লান্ত।’

অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি ফর রিসার্চ ইন অ্যাস্ট্রোনমির জ্যোতির্বিজ্ঞানী হেইডি হ্যামেল। তিনি বলেছেন, ‘এই চাঁদগুলো এতই ছোট যে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা কঠিন। তবে ভবিষ্যতে এই চাঁদগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হতে পারে।’

গবেষকদের মতে, শনির চারপাশে এমন চাঁদের সংখ্যা হতে পারে আরও হাজার হাজার। ভবিষ্যতে হয়তো সেগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস

আরও পড়ুন