সম্প্রতি জার্মানির প্রত্নতাত্ত্বিকেরা পুরোনো সমাধি থেকে একটি তরবারি আবিষ্কার করেছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা বলছেন, তরবারিটি ব্রোঞ্জ যুগের। এটি প্রায় তিন হাজার বছরের পুরোনো। তরবারিটি এতটাই ভালো অবস্থায় আছে যে এখনো ঝলমল করছে।
জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় নর্ডলিংজেন শহরে একটি সমাধিক্ষেত্রে খননকাজের সময় তরবারিটির সন্ধান পাওয়া যায়। সমাধিতে একজন পুরুষ, নারী ও শিশুর হাড় পাওয়া গেছে। হাড়ের সঙ্গে পাওয়া গেছে আরও কিছু ব্রোঞ্জের সামগ্রী। ১৪ জুন বুধবার বাভারিয়া স্টেট অফিস ফর মনুমেন্ট প্রোটেকশন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মনে হচ্ছে এই তিনজনকে খুব কাছাকাছি সময়ের মধ্যে কবর দেওয়া হয়েছে। তবে তারা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।’
ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি তলোয়ারটি এখনো প্রায় উজ্জ্বল। হাতলটি অষ্টভুজাকার। হাতলের রং এখনো সবুজ। কারণ, ব্রোঞ্জের সঙ্গে মেশানো হয়েছে তামা।
ধারণা করা হচ্ছে, তরবারিটি খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্দশ শতাব্দীর শেষের দিকে তৈরি হয়েছিল। বর্তমান সময়ে এত পুরোনো তরবারি আবিষ্কার এক বিরল ঘটনা। কারণ, হাজার হাজার বছর আগে ব্রোঞ্জ যুগের মাঝামাঝি সময়ের কবরগুলো লুট করা হয়।
এ ধরনের তরবারি তৈরি করা মোটেও সহজ নয়। শুধু দক্ষ কারিগরেরাই এমন অষ্টভুজাকার তরবারি তৈরি করতে পারতেন। এর হাতলে দুটি রিভেটস করা আছে। রিভেটসকে বাংলায় গজাল বা নাচি বলে। তরবারির ওপরও একধরনের কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে। একে বলে ‘ওভারলি কাস্টিং’। তবে তলোয়ারের গায়ে কোনো কাটা চিহ্ন বা দাগ ছিল না, যা দেখে বোঝা যাবে এটার কোনো আনুষ্ঠানিক বা প্রতীকী উদ্দেশ্য ছিল কি না। তরবারিটি সক্রিয় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। কারণ, এর সামনের অংশটি সুচালো; অর্থাৎ শত্রুকে আক্রমণ করার উপযোগী।
তরবারি তৈরির দুটি স্থান সম্পর্কে গবেষকেরা জানেন। একটি দক্ষিণ জার্মানি, অন্যটি উত্তর জার্মানি ও ডেনমার্ক। তবে এই নতুন পাওয়া তরবারিটি কোন অঞ্চলে তৈরি হয়েছিল, তা এখনো জানা যায়নি।
জার্মানির বাভারিয়া স্টেট অফিস ফর মনুমেন্ট প্রোটেকশনের প্রধান ম্যাথিয়াস ফেইল বলেন, ‘তরবারি ও কবরটির আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন আছে। এতে আমাদের প্রত্নতাত্ত্বিকেরা এই খননকে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে পারবেন। তবে এটা এখন বলাই যায় যে এটি একটি ব্যতিক্রমী আবিষ্কার! এ ধরনের আবিষ্কার খুবই বিরল!’