বিশ্বকাপের বাকি আর মাত্র দেড় বছর। নির্দিষ্ট করে বললে আর মাত্র এক বছর তিন মাস। সময়ের হিসাবে দুই বিশ্বকাপের মধ্যে সবচেয়ে কম সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে দর্শকদের। কাতার বিশ্বকাপ শীতকালে হওয়ায়, মাত্র সাড়ে তিন বছর বিরতি দিয়েই মাঠে গড়াতে চলেছে ফিফা বিশ্বকাপ। ১৫ মাস বাকি থাকলে কী হবে, এর মধ্যেই বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলেছে ছয়টি দল। কীভাবে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করল ছয় দল, তা নিয়েই আজকের লেখা:
সম্পূর্ণ নতুন ফরম্যাটে নতুন নিয়মে মাঠে গড়াতে চলেছে বিশ্বকাপের ২৩তম আসর। ১৯৯৪ সালের পর আবারও পরিবর্তনের দেখা মিলছে বিশ্বকাপের দল সংখ্যায়। টানা ৭ আসর ৩২ দল নিয়ে খেলার পর, পরবর্তী আসর বসতে চলেছে ৪৮ দল নিয়ে। ১২ গ্রুপে ভাগ হয়ে দলগুলো মুখোমুখি হবে স্বর্ণালি ট্রফি নিজেদের করে নেওয়ার লড়াইয়ে। সে লড়াইয়ের ছয়টি জায়গা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে এখনই। দলগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কানাডা, আর্জেন্টিনা, জাপান, ইরান ও নিউজিল্যান্ড।
যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, কানাডা
স্বাগতিক দল
প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে স্বাগতিক দল। এবারের বিশ্বকাপেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে সংখ্যাটা বেড়েছে। প্রথমবারের মতো স্বাগতিক হিসেবে তিনটি দল সরাসরি সুযোগ পাচ্ছে বিশ্বকাপে। ২০০২ সালের পর আবারও যৌথভাবে বিশ্বকাপে আয়োজনের দিকে ঝুঁকেছে ফিফা। সেবার জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া মিলে আয়োজন করেছিল বিশ্বকাপের ১৭তম আসর। তবে এবার স্বাগতিকের দিক থেকে আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে ফিফা। উত্তর আমেরিকার বড় একটা অংশজুড়ে এবার গড়াচ্ছে বিশ্বকাপের আসর। আর সবচেয়ে বড় তিন দেশ সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বকাপের মঞ্চে। স্বাগতিক হওয়ার সুবাদে ৪০ বছর পর বিশ্বকাপে সুযোগ পাচ্ছে কানাডা। আর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ খেলছে আট বছর পর।
জাপান
এশিয়া অঞ্চল
কাগজে-কলমের কথা তো গেল। এবার হিসাবের খেরোখাতায় ফেরা যাক। স্বাগতিক ছাড়া প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা দলটির নাম জাপান। এবারের আন্তর্জাতিক বিরতিতে ২৩তম বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে ‘ব্লু সামুরাই’রা। বিশ্বকাপে দলের পাশাপাশি বেড়েছে বিভিন্ন কনফেডারেশন থেকে স্লটও। এশিয়া থেকে এবার সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে ৮টি দল। আর একটি দল সুযোগ পাবে প্লে-অফে। ২০ মার্চ নিজেদের মাটিতে বাহরাইনকে হারিয়ে বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করেছে জাপান।
নিউজিল্যান্ড
ওশেনিয়া অঞ্চল
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দল নিশ্চিত হয়েছে তার ঠিক চার দিন পর। ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ওশেনিয়া অঞ্চলের কোয়ালিফায়ার ফাইনাল। ফাইনালে নিউ ক্যালেডোনিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করে নিউজিল্যান্ড। অন্যদিকে নিউ ক্যালেডোনিয়া পৌঁছে যায় ইন্টার-কনফেডারেশন প্লে-অফে। আগে ওশেনিয়া অঞ্চল থেকে জয়ী দলকে লড়তে হতো প্লে-অফ টুর্নামেন্টে। বিশ্বকাপে দল বৃদ্ধি পাওয়ায় সরাসরি খেলার সুযোগ পাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। ১৬ বছর পর আবারও বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা যাবে অল হোয়াইটসদের।
ইরান
এশিয়া অঞ্চল
জাপানের ঠিক চার দিন পর বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছে ইরান। ইরানকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে অবশ্য জিততে হয়নি, ড্রই যথেষ্ট ছিল। নিজেদের মাটিতে ২-২ গোলের ড্র তাদের পৌঁছে দিয়েছে বিশ্বকাপের মঞ্চে। দুই গোলের দুটিই এসেছে ইন্টার মিলানের ফরোয়ার্ড মেহদি তারেমির পা থেকে। ৮৩ মিনিটে তাঁর গোলের পর উল্লাসে ফেটে পড়ে ইরান। ইরান যুক্তরাষ্ট্রের টিকিট নিশ্চিত করল এমন একটা সময়, যখন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কটা বেশ শীতল। দেখা যাক বিশ্বকাপ আর কত রোমাঞ্চ লুকিয়ে রেখেছে নিজেদের কাছে।
আর্জেন্টিনা
কনমেবল অঞ্চল
একটা সময় ছিল যখন বিশ্বকাপ জিতলেই নিশ্চিত হয়ে যেত পরের বিশ্বকাপের টিকিট। সে নিয়ম থেকে অনেক বছর আগেই সরে এসেছে ফিফা। যে কারণে ৩৬ বছর পর আক্ষেপ মেটানোর পরও বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাইং রাউন্ড খেলতে হচ্ছে আকাশি-নীলদের। তাতে অবশ্য তাদের থোড়াই কেয়ার। কনমেবল অঞ্চল থেকে প্রথম দল হিসেবে বিশ্বকাপের টিকিট কেটেছে লিওনেল মেসির দল। সেটাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে। নিজেদের মাটিতে ব্রাজিলকে ৪-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা।