আর কত গরম পড়বে
গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ঢাকায় দিনের তাপমাত্রা গ্রামাঞ্চলের তুলনায় ২ দশমিক ৭৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে। একই অবস্থা চট্টগ্রামে। তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ৯২ ডিগ্রি। খুলনায় বেড়েছে ১ দশমিক ২৭, সিলেটে ১ দশমিক ১ এবং রাজশাহীতে তাপমাত্রা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) সতর্ক করেছে, আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বের উষ্ণতা সর্বোচ্চ হতে পারে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কোনো এক বছর তাপমাত্রা সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছাবে। তাপমাত্রা ক্রমে বাড়বে। এল নিনোর অবস্থান এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের পরিমাণ হিসাব করে এ ধারণা করা হয়েছে। এল নিনো মানে প্রশান্ত মহাসাগরে উষ্ণ সমুদ্রস্রোত। এ স্রোতের ফলে উষ্ণ হয়ে ওঠে দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূল, বিশেষ করে পেরুর দিকের পানি। এ সময় দক্ষিণ গোলার্ধের পুবালি বায়ুর প্রবাহ বদলে যায়। এতে কিছু অঞ্চলে বৃষ্টির ধরন বদলে যায়। ফলে তাপমাত্রার পরিবর্তন ঘটে। এখন আবারও এল নিনোর প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
পুবালি বায়ু যখন পুবে না বয়ে পশ্চিমে বয়ে যায়, তখন অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার—এই পুরো অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ কমে যায়। কারণ, বাতাসের প্রবাহ সমুদ্রস্রোতকে বয়ে নিতে থাকে পশ্চিম দিকে। ফলে পশ্চিম দিকে বৃষ্টি বাড়ে। আর বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত—এসব অঞ্চলে দেখা দেয় বৃষ্টির অভাব। বেড়ে যায় তাপমাত্রা। শুকিয়ে যায় মাটি। এমনকি খরাও দেখা দিতে পারে। এল নিনো সাধারণত প্রতি চার থেকে সাত বছরে একবার দেখা যায়। এর স্থায়িত্ব ১২-১৮ মাস। তবে গত কয়েক বছরে কয়েকবার এল নিনো দেখা গেছে এবং এটি বেড়েই চলেছে। জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক সংস্থা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোজিক্যাল অর্গানাইজেশন বলছে, আগামী ৫ বছরে গড় তাপমাত্রার বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রির ওপরে উঠে যেতে পারে।
১৮৮০ সালে তাপমাত্রা সংরক্ষণের আধুনিক পদ্ধতি আবিষ্কারের পর থেকেই প্রতিবছরই কিছু না কিছু মাত্রায় তাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০০ সালের পর থেকে প্রতিবছর তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার চরমভাবে বেড়েছে। এই হারে দেশের বিভিন্ন শহরে তাপমাত্রা বাড়লে ঢাকাসহ পাঁচটি বড় শহর কয়েক বছরের মধ্যে বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠবে। তখন আমরা যাব কোথায়?