আজ খুব সহজ আবার খুবই কাজের একটা জিনিস দেখা যাক। নিচে একটা হলুদ আর একটা গোলাপি নিরেট বল আঁকা আছে। একটা যদি আরেকটার সামনে রাখা হয়, তবে ব্যাপারটা দাঁড়াবে নিচের ডান দিকের মতো। বল দুটি যদি কাচের হয়, তবে একটার ভেতর দিয়ে আরেকটা দেখা যাবে। কিন্তু যদি তা না হয়, তবে একটার পেছনে আরেকটা কিছুটা ঢাকা পড়ে যাবে। এটাই আমরা ভালোমতো শিখব আজ। কিআর পাঠকেরা হাসাহাসি শুরু করেছে, তা শুনতে পাচ্ছি। মানে এটা তো একেবারে নাদান বাচ্চারাও জানে, তাই না? হ্যাঁ, কিন্তু এটা থেকেই আমরা মানুষের মাসল আঁকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস শিখব। কোন অংশ সামনে আর কোন অংশ পেছনে, সেটা কীভাবে সহজে এঁকে বোঝানো যাবে-সেটা।
এটা বোঝানো একেবারেই সহজ। নিচে দেখি, যেটাকে পেছনে বোঝাতে চাইছি, সেটার যে অংশটা দেখা যাচ্ছিল, মানে সামনেরটার মধ্য দিয়ে দেখা যাচ্ছিল অপরের কাচের বলের মতো, সেটা মুছে ফেলি। যেমন নিচে একই ছবিতে যেই হলুদ বলের অংশটা মুছে ফেললাম, সঙ্গে সঙ্গে গোলাপিটা সামনে চলে এল। একইভাবে যে–ই গোলাপিটা মুছে নিলাম, সামনে চলে এল হলুদ বল। এটা যদি শুনতে পানিভাত বা ওয়াটার-রাইস মনে হয়, তবে বুদ্ধিমানদের জন্য আছে পরের কাজটা।
একটা পেনসিল নিয়ে ইচ্ছেমতো একটার ওপর আরেকটা গোল্লা আঁকা হলো। এখানে তিনটা আঁকা হয়েছে। এবার একটা ইরেজার নিয়ে যেটাকে ইচ্ছা মুছে মুছে পেছনে পাঠাতে থাকি। এটা যখন খুব ভালোভাবে পারব, তখনই আমরা পরের ধাপে চলে যাব।
ব্যস! এক ধাক্কায় চলে এল হাতের মাসল। আসলে মানুষের মাংসপেশি বা মাসল কিছু নরম টাইপের গোল্লা ছাড়া আর কিছুই না এবং ত্রিমাত্রিকভাবে আঁকতে গেলে এগুলো আগের পৃষ্ঠার গোল্লাগুলোর মতন কোনটা সামনে, কোনটা পেছনে এটা বোঝানো খুবই জরুরি। যেমন, নিচের ছবির প্রথমে আমরা কাঠির মতন হাতটা আঁকলাম, যেটা আমরা এই লেখাপড়ার আগে থেকেই পারি। এরপর একটা খেয়াল করার বিষয় আছে, হাতের দুই ভাগের, মানে কাঁধ থেকে কনুই আর কনুই থেকে কবজি। এদের মধ্যে মাসলের অংশ দুই রকম। বাহু থেকে কনুইয়ের মধ্যে বড় বড় দুইটা মাসল গ্রুপ আছে। আর কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত আছে একটা বড় মাসল গ্রুপ। যতই নিচের দিকে নামা হবে, মাসলগুলোও ততই লম্বাটে হবে। যেমন প্রথম লাল বৃত্তটা একেবারেই গোল, পরেরটা আরেকটু লম্বা, পরেরটা একেবারেই লম্বা। তো এইটুকু বুঝে নিয়ে নাহয় একেবারে পাশ থেকে একটা হাত এঁকে ফেললাম। কিন্তু এরপর? যদি হাতটা একটু সামনের দিকে বা পেছনের দিকে বোঝাতে চাই, তবে? তাহলে আমাদের আগের ধাপে শিখে আসা সেই সামনে-পেছনে বল টেকনিকটা কাজে লাগানো যাবে। নিচে দেখানো হলো—
খেয়াল করো, একটা গোল্লা আরেকটার ওপরে এসেছে, পরে যেটাকে পেছনে পাঠাতে চাই, সেটার যেই অংশ সামনে থেকে দেখা যাচ্ছিল, তা মুছে ফেলা হলো। এবার সেই অনুযায়ী হাতটা আঁকা হলো।
যারা আরেকটু রংটং ইত্যাদি করতে পারো, তারা আলো–ছায়া মেনে নিয়ে একটা রঙিন হাতও এঁকে নিতে পারো এভাবে—
এই টেকনিকটা শুনতে একেবারে সহজ মনে হলেও মজা হলো এটা খুব বড় বড় আঁকিয়ে দুর্দান্ত সব জটিল ড্রয়িংয়ে ব্যবহার করেন, যেমন মার্ভেল কমিকসের কিংবদন্তিতুল্য আর্টিস্ট ‘জন বুশেমা’ ফ্যান্টাস্টিক ফোরের ‘দ্য থিং’কে নিচে এভাবে এঁকে দেখিয়েছেন—
আমাদের আজকের শেখা সামনে-পেছনে গোল্লা টেকনিকটা এখানে কীভাবে তিনি ব্যবহার করেছিলেন, তা আশা করি সহজেই বুঝতে পারছ? যদি পেরে থাকো, তবে এভাবে তোমার একটা মাসলম্যান টাইপের হিরো বা ভিলেন এঁকে পাঠিয়ে দাও কিআর ঠিকানায়। দেখি, কদ্দুর শিখলে আদৌ!