ডিম সংরক্ষণের সেরা উপায় কোনটি?
ডিম আমাদের সবারই কমবেশি পছন্দ। আর তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাত কিংবা দিন যেকোনো সময়ের খাবারের প্লেটে একবার হলেও ডিম থাকে। যেহেতু সহজে যেকোনোভাবে রান্নার জন্য তৈরি করা যায় বলে অনেকে বাড়িতে বেশি করে ডিম এনে রাখে। তখন আমরা অনেকে ডিম কিনে বাসায় এনে ডিমের সঙ্গের বক্স ফেলে দিয়ে ডিমগুলো ফ্রিজের একটি নির্দিষ্ট তাকে রাখি। তাকে রাখতে হবে, দরজায় রাখা যাবে না। দরজা হলো ফ্রিজের উষ্ণতম জায়গার মধ্যে একটি। তবে বিশেষজ্ঞরা ডিমগুলো আসল বক্সে সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেন। কারণ, বক্স ডিমগুলোকে রক্ষা করে এবং ডিমের খোলের হাজার হাজার ক্ষুদ্র ছিদ্রের মাধ্যমে ফ্রিজের অন্যান্য খাবারের তীব্র গন্ধ ও স্বাদ শোষণ করতে বাধা দেয়। সঙ্গে ডিমটির মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ আছে কি না, যেকোনো সময় যাচাই করতে পারবে। যেহেতু অনেক জায়গায় ডিমের বক্সসহ অনেকের কেনা হয় না, তখন ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার কম তাপমাত্রায় ফ্রিজের তাকে খাবার থেকে দূরে সংরক্ষণ করা যায়।
ফ্রিজে রাখলে ডিম পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত ভালো থাকবে। এই পাঁচ সপ্তাহ পরে বাতাস ডিমের খোসার মধ্য দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবে। ফলে কুসুম ও ডিমের সাদা অংশ নষ্ট হতে শুরু করবে। কাঁচা ডিমে বাতাস প্রবেশ করেছে কি না, তা জানতে নিচের পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে দেখো।
ডিম সতেজ কি না, এটি কীভাবে বুঝব? এর একটি সহজ পদ্ধতি হলো পানিতে ডুবিয়ে দেখা। ডিমটি পানিতে রাখতে হবে। যদি এটি ডুবে যায় এবং পানির একদম নিচে আড়াআড়ি পড়ে থাকে, তবে এটি তাজা। যদি ডিম সোজা হয়ে দাঁড়ায় বা ভাসমান থাকে, তাহলে এটি নষ্ট। ফেলে দিতে হবে।
এ ছাড়া তুমি চাইলে ডিম সেদ্ধ করে সংরক্ষণ করতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্যমতে, সেদ্ধ করার পর সাধারণত দুই ঘণ্টার মধ্যে ডিম খেয়ে ফেলা উচিত। সেদ্ধ করা ডিম চাইলে ডিপ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যাবে। তবে তা রাখতে হবে খোসাসহ।
শব্দ শুনেও পরীক্ষা করা যায়। ডিম ঝাঁকিয়ে দেখো, এটি ভালো কি না। ডিম ঝাঁকানোর সময় যদি কোনো শব্দ না শুনতে পাও, তাহলে বুঝবে ভালো। আর যদি ঢক ঢক আওয়াজ পাও, তাহলে বুঝবে ডিম পচে গেছে।
আলোর সামনে ধরলেও ডিম ভালো আছে কি না, তা পরীক্ষা করা যায়। যদি ডিমের ভেতর রিংয়ের মতো আকার দেখো, তবে বুঝবে ডিমে পচন ধরা শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া তুমি চাইলে ডিম সেদ্ধ করে সংরক্ষণ করতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্যমতে, সেদ্ধ করার পর সাধারণত দুই ঘণ্টার মধ্যে ডিম খেয়ে ফেলা উচিত। সেদ্ধ করা ডিম চাইলে ডিপ ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করা যাবে। তবে তা রাখতে হবে খোসাসহ। খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখা যাবে না। ফ্রিজে সেদ্ধ ডিম সংরক্ষণ করতে চাইলে এয়ারটাইট পাত্র ব্যবহার করবে। অনেক সময় সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখলে দুর্গন্ধ হতে পারে। কারণ, সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে রাখলে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। তবে এটি ক্ষতিকর না হলেও স্বাদে কিছুটা পরিবর্তন ঘটতে পারে। এভাবে ঠিকভাবে রাখতে পারলে সেদ্ধ ডিম ফ্রিজে সপ্তাহখানেক ভালো থাকে, কিন্তু তারপরই তা নষ্ট হয়ে যেতে থাকে।
সংরক্ষণ করলেও একটা সময় পর ডিমগুলো নষ্ট হবেই। তাই তো বিশেষজ্ঞরা বারবার টাটকা ডিমই খাওয়ার পরামর্শ দেন।