এডওয়ার্ড স্নোডেন এখন কোথায়

এডওয়ার্ড স্নোডেন
হুইসেলব্লোয়ার। বাংলা করলে দাঁড়ায়, তথ্য ফাঁসকারী। তবে বোঝানো হয় অন্যায় বা অবিচারের তথ্য ফাঁসকারীদের। মার্কিন সিভিক অ্যাকটিভিস্ট র৵ালফ নাদের ১৯৭০–এর দশকে শব্দটার প্রচলন করেন। ‘ইনফরমার’ বা ‘স্নিচ’—এ রকম কিছু শব্দের মাধ্যমে বিশ্বাস ভঙ্গ করে তথ্য ফাঁসকারীদের বোঝানো হতো। হয়তো কোনো প্রতিষ্ঠানের গোপন তথ্য ফাঁস করে দিলেন কেউ, কিংবা জানিয়ে দিলেন প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রতিষ্ঠানের কাউকে। এ রকম মানুষদের বলা হয় ইনফরমার। এসব থেকে আলাদা করতেই এই নতুন শব্দ।

হুইসেলব্লোয়ার এডওয়ার্ড স্নোডেন

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসএ) সাবেক পরামর্শক এডওয়ার্ড স্নোডেন। ২০১৩ সালে তিনি এ সংস্থার হয়ে কাজ শুরু করেন। কর্মসূত্রে জানতে পারেন, এনএসএ যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বজুড়ে গোপনে মানুষের ওপর নজরদারি করে। শুধু এনএসএই নয়, এর সঙ্গে জড়িত ছিল অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য। যুক্তরাষ্ট্রসহ এই পাঁচ দেশের গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে কাজ করে ফাইভ আইজ অ্যালায়েন্স নামে।

এ নজরদারির বিভিন্ন প্রমাণ ও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গোপন নথি তিনি ফাঁস করে দেন। এসব নথি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, গোটা বিশ্বে আলোচিত হয়ে ওঠেন স্নোডেন। নড়েচড়ে ওঠেন বিশ্বের মানুষ। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর নামে এসপিওনাজ, তথা গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মামলা করা হয়।

আরও পড়ুন

ওই সময় পালিয়ে রাশিয়ায় চলে যান স্নোডেন। রাশিয়া তাঁকে আশ্রয় দেয়। ওদিকে তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মোটা বেতনের চাকরি, নিজের প্রেমিকা ও পরিচিত সবাইকে ছেড়ে মস্কোতে শুরু হয় তাঁর নির্বাসিত জীবন। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা তাঁকে বিশ্বাসঘাতক, রাষ্ট্রদ্রোহী, এমনকি চোর বলেও আখ্যায়িত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে স্নোডেনের অভিযোগের পক্ষে এনএসএর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। আদালত এনএসএর এ কার্যক্রমকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন ২০২০ সালে। এ নজরদারির পক্ষে যাঁরা কথা বলেছিলেন প্রকাশ্যে, তাঁদের মিথ্যাবাদী বলে ঘোষণা করেন আদালত। তবে সরকার তাঁকে ক্ষমা করেনি। যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে পারেননি স্নোডেন।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়া তাঁকে নাগরিকত্ব দেয়। বর্তমানে তিনি রাশিয়াতেই জীবন যাপন করছেন।

আরও পড়ুন