সুডোকুর জট খুলবে কী করে
কিশোর আলোতে প্রতি মাসে একটা ধাঁধা দেওয়া হয়, যার নাম সুডোকু। তোমরা অনেকেই হয়তো প্রতি মাসে এটা মেলানোর চেষ্টা করো। অনেকে মেলাতে চেয়েও মেলাতে পারো না। সত্যি বলতে, একবার শিখে নিলে সুডোকুর আনন্দটা তুমি পেয়ে যাবে। তখন প্রতি মাসে নয়, প্রতিদিন সুডোকু মেলাতে ইচ্ছা করবে।
সুডোকু শব্দটি জাপানিজ। ‘সুজি ওয়া দোকুশিন নি কাগিরু’-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। যার অর্থ দাঁড়ায়, অঙ্কগুলো একবার করে বসবে।
সুডোকু তৈরী করেন মাকি কাজি। কোটি কোটি মানুষের প্রিয় এই পাজলের স্রষ্টা গত আগস্ট মাসে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি ৩০ টিরও বেশি দেশে ঘুরেছেন সুডোকু জনপ্রিয় করতে। সুডোকু আসলে বুদ্ধির ব্যায়ামের মতো। করোনার কারণে এক বছর ছুটি কাটিয়ে মস্তিষ্ক নিশ্চয়ই অলস হতে শুরু করেছে। তাই এখনই সুডোকু মেলানোটা শিখে ফেলতে পারো। নিয়মিত বুদ্ধির খেলা খেললে দেখবে মস্তিষ্কটা আবার গা ঝাড়া দিয়ে সতেজ হতে চাইছে।
বুদ্ধির ব্যায়াম হিসেবে অনেকেই প্রতিদিন এই ধাঁধা মিলিয়ে থাকেন। তাঁদের মধ্যে আছেন খুব বিখ্যাত মানুষও। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী প্রতিদিন সুডোকু মেলাতেন। বিশ্বে সুডোকু ধরনের গাণিতিক সমস্যা বা ধাঁধা ২০০–৩০০ বছর ধরে চললেও আধুনিক সুডোকু শুরু হয়েছে ১৯৭৯ সালে। বাংলাদেশে সুডোকুর প্রচলন যায়যায়দিন পত্রিকার মাধ্যমে। আমার মনে পড়ে, ছোটবেলায় আমিও যায়যায়দিন পত্রিকার ম্যাগাজিন থেকে সুডোকু মেলানো শিখেছি। প্রথম আলোতে প্রতিদিন সুডোকু ছাপা হচ্ছে বহু বছর ধরে। একবার শিখে নিয়ে কিশোর আলোতে ছাপা প্রতি মাসের সুডোকু তো মেলাবেই, সঙ্গে প্রথম আলোতে ছাপা সুডোকুও প্রতিদিন মেলানোর অভ্যাস করে নিতে পারো।
নিয়ম
সুডোকু একটি ৯X৯ আকৃতির ছক। এতে ৯টি লম্বালম্বি কলাম ও ৯টি সারি (রো) থাকে। পুরো জিনিসটিকে আবার ৯টি ব্লকে ভাগ করা হয়। প্রতি ব্লকে থাকে ৯টি ঘর। সুডোকুতে কিছু ঘরে অঙ্ক দেওয়া থাকে, সেটা তোমরা নিশ্চয়ই দেখেছ। এবার বাকি ঘরে তোমাকে অঙ্ক বসাতে হবে। এমনভাবে বসাতে হবে, যেন প্রতি কলামে, প্রতি সারিতে এবং প্রতি ব্লকে ১ থেকে ৯ অঙ্কগুলো একবার করে আসে। কোনো অঙ্ক একাধিকবার এক কলাম/সারি/ব্লকে আসতে পারবে না। পুরো সুডোকুর সব ঘরে অঙ্ক বসানোর পরই সুডোকুটি মেলানো হবে। মেলানো হলে একবার সব ব্লক যাচাই করে দেখবে, সব কটি অঙ্ক মাত্র একবার করে এসেছে কি না।
আমরা কলামগুলোকে a, b, c, d, e, f, g, h, i এভাবে ৯টি কলামের নাম দিতে পারি। অন্যদিকে প্রতিটি সারিকে (Row) ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯—এভাবে নাম দিতে পারি। তাহলে দ্বিতীয় কলামের নাম যেহেতু b, আমরা চতুর্থ সারির দ্বিতীয় কলামের ঘরটিকে বলব b4 ঘর। প্রথম সারির প্রথম ঘরটি হবে a1 ঘর। আর ব্লকগুলোর নাম দেওয়া যাক ব্লক-১, ব্লক-২, ব্লক-৩ ইত্যাদি।
সুডোকু মেলানোর কৌশল
সুডোকু মেলানোর অনেক রকম কৌশল আছে। একেকজন একেক রকম কৌশল ব্যবহার করে থাকে। একদম মৌলিক কিছু কৌশল শিখে নিলে দেখবে, তুমি নিজেই মেলানোর নানা রকম কৌশল বের করে ফেলতে পারছ। আমি আজ একদম সহজ সুডোকুগুলো মেলানোর জন্য যেসব বুদ্ধি কাজে লাগানো যেতে পারে, সেসবের কথাই বলব। আরও জটিল সব নিয়ম তুমি নিজেই বের করে ফেলবে একসময়। কারণ, সবাই আসলে নিজের মতো করে সুডোকু মেলায়। নিজেই নানা রকম কৌশল বের করে নেয়।
মেলাতে গেলে সাধারণত আমরা সুডোকুটিকে স্লাইসে ভাগ করে নিই। তিনটি করে সারি নিয়ে তিনটি স্লাইস কল্পনা করা যায়। এর মধ্যে তিনটি করে ব্লক চলে আসে। যেমন ব্লক-১, ব্লক-২ ও ব্লক-৩ নিয়ে যদি ওপরের স্লাইস ভাবি, সেখানে ১, ২ ও ৩ নম্বর সারি চলে আসছে। আবার তিনটি করে কলাম নিয়েও তিনটি স্লাইস বানানো যেতে পারে। a, b, c কলাম নিয়ে একটি সারি; d, e, f নিয়ে একটি, এ রকম। একটি ঘরে কোন অঙ্কটি বসতে পারে, সেটি খুঁজতে একবারে একটি করে স্লাইস নিয়ে ভাবা যেতে পারে। তোমরা ওপরের প্রথম চিত্র থেকে কলাম, সারি, ব্লক ও স্লাইস খুব ভালো করে বুঝে নাও। এগুলো মাথায় গেঁথে গেলে এগোতে পারো।
একদিকে খোঁজা
এই পদ্ধতি সহজ সুডোকুর শুরুর দিকে খুব কাজে লাগে। এটাকে বলা যায় সবচেয়ে কম সময়ে একটা ঘরের অঙ্ক খুঁজে বের করার উপায়। সুডোকুটা প্রায় মিলে গেলে শেষের দিকে হুট করে এই পদ্ধতি আবার কাজে লাগতে শুরু করে এবং দ্রুতই মিলে যায় পুরো সুডোকুটি। এখানে আমরা যেটা করি, যেকোনো একটি স্লাইস নিয়ে সেটার অন্তত দুটি সারিতে একই অঙ্ক খুঁজে বের করি। সেটা দিয়ে তৃতীয় সারিতে অঙ্কটি কোথায় বসবে, তা বের করার চেষ্টা করি। কলামের জন্যও একইভাবে কাজ করে।
এই উদাহরণে দেখো, ২ ও ৩ নম্বর সারিতে ৯ অঙ্কটি আছে। কিন্তু ১ নম্বর সারিতে নেই। এবার লক্ষ করো, দ্বিতীয় সারির ৯ আছে ব্লক-৩–এ। অন্যদিকে তৃতীয় সারির ৯ আছে ব্লক-১–এ। সুতরাং প্রথম সারির ৯ নিশ্চিতভাবেই ব্লক-২–এ বসবে। আর দেখাই যাচ্ছে, ব্লক-২–এর প্রথম সারিতে কেবল একটা ঘর ফাঁকা আছে। সেটি হলো e1 ঘরটি। সুতরাং ৯ অঙ্কটি সেখানেই বসছে।
এই উদাহরণ থেকে আরেকটা জিনিস বলে রাখি। সুডোকু মেলানোর সময় আমাদের একটি ঘরে কোন অঙ্ক বসবে, সেটি যেমন মাথায় রাখতে হয়, তেমনি মাথায় রাখতে হয় কোন অঙ্কটি বসবে না। এই উদাহরণে ব্লক-২–এর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সারির যেসব ঘর ফাঁকা আছে, সেগুলোয় কখনোই ৯ বসতে পারবে না। কারণ, ৯ অঙ্কটি এই দুই সারিতে আগে থেকেই আছে।
তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ, এই পদ্ধতি আমরা ব্যবহার করি, যখন একটি স্লাইসে একটি অঙ্ক দুবার উল্লেখ করা আছে, তখন। আমরা এখানে ৯ অঙ্কটি বসানোর জন্য প্রথম সারিতে কেবল একটি ঘর পেয়েছি। তাই সহজেই মেলানো গেছে। কিন্তু যদি দুটি ঘর ফাঁকা থাকত, তাহলে কী হতো?
দুই দিকে খোঁজা
যখন একটি অঙ্ক বসানোর জন্য দুটি ঘর পাবে, তখন এভাবে চেষ্টা করতে পারো। আবারও সেই প্রথম তিন সারি নিয়ে তৈরি স্লাইস নিয়েই চিন্তা করা যাক।
চিত্রে দেখো, ১ অঙ্কটি প্রথম ও দ্বিতীয় সারিতে আছে। এর মধ্যে প্রথম সারিতে আছে ব্লক-১–এ এবং দ্বিতীয় সারিতে আছে ব্লক-২–এ। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছ, তৃতীয় সারিতে ১ অঙ্কটি কোন ব্লকে বসবে? ঠিক ধরেছ, ব্লক-৩–এ বসতে যাচ্ছে। কিন্তু বিপত্তিটা খেয়াল করে দেখো। ব্লক-৩–এর তৃতীয় সারিতে g3 ফাঁকা আবার i3 ঘরটিও ফাঁকা। তাহলে ১ অঙ্কটি কোন ঘরে বসবে? এখন, তোমাকে শুধু এই তিন সারির স্লাইসে বসে থাকলেই চলবে না। ওপর-নিচে, অর্থাৎ কলামেও চোখ বোলাতে হবে। তবে সব কটিতে নয়। তুমি যেহেতু g3 কিংবা i3 ঘরে ১ অঙ্কটিকে বসাতে চাইছ, তুমি এই দুটি কলামে চোখ বোলাবে। অর্থাৎ g ও i কলাম খুঁজে দেখবে, এখানে কোনো ১ দেওয়া আছে কি না। কী দেখলে? g কলামে একটা ১ আছে। সুতরাং g3–তে ১ অঙ্কটি বসানো যাচ্ছে না। তাহলে কোথায় বসবে? একটি ঘরই বাকি রইল। সেটি হলো i3। ঝটপট সেখানে একটা ১ বসিয়ে দেওয়া যাক।
একটা সহজ সুডোকুর প্রথম দিকে এই দুই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে অনেকখানি মিলিয়ে ফেলা যায়। সুতরাং প্রথমেই সুডোকুটিকে যতভাবে স্লাইস করা যায়, ততভাবে একটা একটা করে স্লাইস নিয়ে তুমি চিন্তা করতে থাকবে। দেখবে, কোন স্লাইসে কোনো একটি অঙ্ক দুবার আছে। যখনই দুবার পাবে, তখন ওই স্লাইসে অঙ্কটি তৃতীয়বার কোথায় বসবে, সেটা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করবে। সব সময় যে এই দুই পদ্ধতি কাজ করবে, সেটা ঠিক নয়। কিন্তু ওপর-নিচে, পাশাপাশি যতভাবে সম্ভব, এই পদ্ধতিতে খুঁজতে থাকবে। যখন তুমি একটা অঙ্ক বসিয়ে ফেললে, তখন দেখবে সেই অঙ্কের ওপর ভিত্তি করে অন্যদিকে আরেকটি অঙ্ক বসানো যাচ্ছে। সুতরাং একটা সুডোকু যত মেলাবে, পরের অঙ্ক সাধারণভাবে খুঁজে পাওয়া তুলনামূলকভাবে ততটা সহজ হওয়ার কথা। কিন্তু সব সময় তেমন হবে না। মাঝেমধ্যে তুমি এমন পরিস্থিতিতে পড়বে, যেখানে একটা ঘরে কোন অঙ্কটি বসবে, সেটা কিছুতেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন আরও যত রকম চেষ্টা করা যায়, করতে হবে। অনেক সময় অনুমানের ওপর নির্ভর করেও এগোতে হয়। সে জন্যও আছে কিছু নিয়ম।
সিঙ্গেল ক্যান্ডিডেট
কোনো একটা ঘরে কোন অঙ্কটি বসবে, সেটি খোঁজার জন্য তো আমরা একটা নিয়ম দেখলাম। কখনো কখনো এমন ঘর খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে কোন অঙ্কগুলো বসবে না, সেটি বের হয়ে যায়। যদি ওই ঘরের সারি, কলাম ও ব্লক মিলিয়ে দেখা যায় যে আটটি অঙ্ক পাওয়া যাচ্ছে, যেগুলো ওই ঘরে বসবে না, তাহলে বোঝা যায় যে ওখানে একটিমাত্র অঙ্কই বসতে পারে। তখন সেই অঙ্ক বসিয়ে দিতে হবে।
এই চিত্রের b4 ঘরটি খেয়াল করো। এর কলাম, অর্থাৎ b কলাম দেখলে দেখা যাচ্ছে, এই সারিতে আগে থেকেই ৯ ও ৫ অঙ্ক দুটি আছে। আবার এই সারিতে ১, ৬, ৭, ৮ অঙ্কগুলো আছে। আর এটি যে ব্লকে আছে, অর্থাৎ ব্লক-৪–এ ৩, ৪, ৭, ৮ অঙ্কগুলো আছে। তার মানে এই ঘরে ১, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ অঙ্কগুলো বসতে পারে না। সুতরাং বাকি রইল ২। তাহলে এই ঘরের সিঙ্গেল ক্যান্ডিডেট ২। তাই আমরা এখানে ২ বসিয়ে দিতে পারি।
কোনটি বসবে না, সেটা খোঁজা
সাধারণ আর সহজ নিয়মগুলো আমি বলে ফেলেছি। কিন্তু এসব নিয়ম দিয়ে বেশির ভাগ সুডোকুই মেলানো যায় না। আরও গভীর চিন্তা করতে হয়। সে রকম একটি নিয়ম হলো একটা সারি, কলাম ও ব্লক থেকে অঙ্ক বাদ দেওয়া। অর্থাৎ কোন অংশে কোন অঙ্কটি বসতে পারবে না, সেটি খুঁজে বের করা।
এখানে দেখা যাচ্ছে, e কলাম পুরোটাতেই কোনো অঙ্ক বসানো নেই। তাই এটা নিয়ে ভাবার কথাই না তোমার। কিন্তু এখানেও কিছু কিছু সংকেত লুকিয়ে আছে। এই কলামের নিচের ব্লকটি (ব্লক-৮) খেয়াল করো। এখানকার ১ কোথায় বসবে? দেখাই যাচ্ছে, ৮ নম্বর সারিতে ১ আগে থেকেই আছে। সুতরাং ৮ নম্বর সারিতে ১ বসতে পারবে না। তাই বোঝাই যাচ্ছে, এই ব্লকের বাকি দুটি ঘর, অর্থাৎ e7 ও e9–এর যেকোনো একটিতে ১ বসবে। কোনটিতে বসবে, আমাদের জানা নেই এখনো। কিন্তু যেটিতেই বসুক, বোঝাই যাচ্ছে, e কলামের ১ অঙ্কটি ব্লক-৮–এই বসতে যাচ্ছে। তার মানে, e কলামের আর কোথাও ১ বসতে পারে না। এবার একদম ওপরের মাঝখানের ব্লক, অর্থাৎ ২ নম্বর ব্লক খেয়াল করো। এখানে ১ অঙ্কটি নেই। আমরা জানি, ১ অঙ্কটি e কলামের ঘরগুলোয় বসতে পারবে না। সুতরাং এই ব্লকে আর একটি ঘরই বাকি রইল, সেটি হলো d2। তাই সেখানেই আমরা ১ বসিয়ে দিতে পারছি।
প্রথম দিকে এই নিয়ম খাটানোটা একটু কঠিন লাগতে পারে। কিন্তু আমি বলব, এটা চেষ্টা করতে থাকো। একসময় গিয়ে দেখবে, তুমি এই নিয়ম কখন খাটাতে পারবে, তার একটা প্যাটার্ন খুঁজে পাচ্ছ। তখন তোমার এমনিতেই চোখে পড়তে শুরু করবে, এই বুদ্ধি খাটানোর মতো ঘরগুলো।
বাকি আছে কোন অঙ্ক, সেটি খোঁজা
এই পদ্ধতি কাজে লাগে যখন সুডোকুটা প্রায় মেলানো হয়ে গেছে। একটা কলাম, সারি কিংবা ব্লকে ৬-৭টি অঙ্ক বসানো হয়ে গেলে তখন এভাবে ভাবতে পারো। দেখো ওই কলাম/সারি/ব্লকে কোন অঙ্কগুলো বসানো হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই বের হয়ে গেল কোন অঙ্কটি/অঙ্কগুলো বসানো বাকি রয়ে গেছে। তাহলে সেটাই বসিয়ে ফেলো। এ সময় তোমারই চোখে পড়বে, ওই অঙ্ক ওই খালি ২-৩টি ঘরের মধ্যে কোনটিতে বসবে।
৬ নম্বর সারিতে লক্ষ করো। ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৮ ও ৯ অঙ্কগুলো এই সারিতে দেওয়া আছে। তাহলে নেই ৬ ও ৭। ফাঁকা আছে b6 ও h6 ঘর দুটি। যেহেতু তুমি একটি সারি নিয়ে কাজ করছ, তাই এই ফাঁকা ঘর দুটি যে কলাম বা ব্লকে আছে, সেগুলো দেখো। সেখানে কি ৬ বা ৭ আগে থেকেই আছে? দেখা যাচ্ছে, ব্লক দুটিতে (ব্লক-৪ ও ব্লক-৫) এই অঙ্ক দুটি নেই। কিন্তু কলাম খেয়াল করলেই সমাধান হয়ে যাচ্ছে। h কলামে আগে থেকেই ৬ আছে। তার মানে h6 ঘরে ৬ বসবে না। তাহলে এই সারির ৬ বসিয়ে দেওয়া যাক b6 ঘরে। এখন এই সারিতে আর একটিমাত্র ঘর ফাঁকা রইল। নিশ্চয়ই ফাঁকা ঘরটিতে কত বসবে বুঝতে পারছ?
যখন এভাবে একটি সারিতে কোন অঙ্কগুলো বসানো আছে, সেটি দেখতে চাইছ, তখন একটা বুদ্ধি হতে পারে ধারাবাহিকভাবে ১ থেকে ৯ অঙ্কগুলো আছে কি না, সেটি দেখা। মানে তুমি ১ আছে কি না, দেখলে। এরপর পুরো সারিতে আবারও চোখ বুলিয়ে ২ আছে কি না, দেখলে। এভাবে দেখতে থাকলে। যে অঙ্কগুলো নেই, সেগুলো মুখে একবার উচ্চারণ করলে। দেখবে, তুমি যখন ৯–এ পৌঁছালে, তখন যেগুলো নেই, সেগুলো মাথায় গেঁথে গেছে। তুমি যে কটি অঙ্ক নেই বলে সিদ্ধান্তে এলে, সেই কটি ঘর ফাঁকা আছে কি না, দেখো। যদি কম বা বেশি ঘর ফাঁকা থাকে, তাহলেই বুঝবে, তোমার কিছু একটা ভুল হয়েছে। আবার চোখ বোলাও সারিটিতে। নিয়মটা জটিল মনে হলেও দেখবে কয়েকটা সুডোকু মেলানোর পর থেকে খুবই দ্রুত এবং ভুল ছাড়াই সহজে এভাবে কোন সারি, কলাম বা ব্লকে কোন কোন অঙ্ক বাকি আছে, তা বের করা যাচ্ছে।
এসব নিয়ম নিয়েই লেগে পড়ো সুডোকু মেলাতে। পুরোনো কিশোর আলোর সুডোকুগুলো মেলাতে পারো। অনলাইন থেকে নামিয়ে নিতে পারো সুডোকুর কোনো খেলা। সেসব খেলায় নানা রকম সংকেত দেওয়া থাকে। সেসব দিয়েও খুব দ্রুত শিখে ফেলতে পারবে সুডোকু।
কখনো দেখবে, আমার লেখা কৌশলগুলোর কোনোটিই কোনো ঘরে খাটছে না। লেগে থাকো, দেখবে একসময় খুব সহজ কিছুই চোখে পড়ছে। ওপর-নিচে, ডানে-বাঁয়ে বারবার চোখ বোলাও। অঙ্কগুলো বিড়বিড় করে পড়তে থাকো। দেখবে, হুট করে নানা বুদ্ধি ম্যাজিকের মতো তোমার মাথায় এসে পড়ছে। এভাবে চেষ্টা করতে থাকো, তুমিও হয়ে যাবে সুডোকুর চ্যাম্পিয়ন।