মানুষের মুখভঙ্গি অনুকরণ করতে পারা রোবট ‘ইমো’

ইমো কেবল হাসি, কান্না, রাগ, বিস্ময় এবং ভয়ের মতো প্রাথমিক আবেগই বুঝতে পারে এমন নয়; বরং এটি আরও সূক্ষ্ম আবেগও শনাক্ত করতে পারে।

প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে রোবটের ক্ষমতাও দিন দিন বাড়ছে। প্রযুক্তিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে রোবটগুলো এখন মানুষের আবেগ বুঝতে পারে। সে অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া জানাতেও সক্ষম হচ্ছে রোবট। সম্প্রতি একটি নতুন ধরনের রোবট তৈরি করা হয়েছে, যা মানুষের মুখভঙ্গি অনুকরণ করতে পারে। এই রোবটকে ‘ইমো’ নাম দেওয়া হয়েছে।

২৬টি অ্যাকচুয়েটর ব্যবহার করে ইমো মানুষের মতো মুখের ভাব প্রকাশ করে। ইমোর চেহারা সিলিকনের তৈরি একটি মুখের আকৃতির মুখোশ দিয়ে আবৃত। যা আরও বাস্তবসম্মত চেহারা দিয়েছে ইমোকে। ইমোর চোখে উচ্চ রেজল্যুশন ক্যামেরা রয়েছে।

এই অত্যাধুনিক রোবট তৈরি করেছে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের একটি দল। গবেষকেরা দাবি করেছেন, মানুষের মুখের অভিব্যক্তি অনুকরণ করার মাধ্যমে ইমো রোবট মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিক এবং আবেগপূর্ণ উপায়ে যোগাযোগ করতে সক্ষম। প্রকৌশলীরা আশাবাদী, এই প্রযুক্তি শিক্ষা, চিকিৎসা এবং গ্রাহকদের সেবা দেওয়ার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহারের নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করবে।

আরও পড়ুন

ইমোর বিস্ময়কর ক্ষমতা নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স রোবোটিকস সাময়িকীতে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, ইমো রোবট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং ব্যবহার করে মানুষের মুখের অভিব্যক্তি বিশ্লেষণ করতে পারে। এর ফলে ইমো কেবল হাসি, কান্না, রাগ, বিস্ময় এবং ভয়ের মতো প্রাথমিক আবেগই বুঝতে পারে এমন নয়; বরং এটি আরও সূক্ষ্ম আবেগও শনাক্ত করতে পারে। যেমন বিরক্তি, হতাশা এবং আগ্রহ। এমনকি ব্যক্তির হাসির পূর্বাভাসও দিতে পারে প্রায় ৮৪০ মিলি সেকেন্ড আগে।

ইমোর উন্নতির পরবর্তী ধাপ হবে কথা বলার মাধ্যমটি আরও উন্নত করা।

২৬টি অ্যাকচুয়েটর ব্যবহার করে ইমো মানুষের মতো মুখের ভাব প্রকাশ করে। ইমোর চেহারা সিলিকনের তৈরি একটি মুখের আকৃতির মুখোশ দিয়ে আবৃত। যা আরও বাস্তবসম্মত চেহারা দিয়েছে ইমোকে। ইমোর চোখে উচ্চ রেজল্যুশন ক্যামেরা রয়েছে। এআই মডেল দিয়ে চালিত এ ধরনের রোবটগুলো দ্রুত আরও উন্নত ও জটিল হয়ে উঠছে। ইমোর উন্নতির পরবর্তী ধাপ হবে কথা বলার মাধ্যমটি আরও উন্নত করা। ইমো যেন আরও স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে পারে, এখন প্রকৌশলীদের প্রধান লক্ষ্য।

আরও পড়ুন

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্ভাবনের অধ্যাপক জেমস, লিপসন ও স্যালি স্কাপা ‘ইমো’ নিয়ে তাঁদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন, যদিও এই প্রযুক্তি হোম অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে শুরু করে শিক্ষাগত সহায়তা পর্যন্ত বিভিন্ন ইতিবাচক ক্ষেত্রে ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে ভবিষ্যতে। তবে এর সঙ্গে যুক্ত প্রকৌশলী এবং ব্যবহারকারীদের অবশ্যই বিচক্ষণতা ও নৈতিক বিবেচনা কথা ভেবেই এর ব্যবহার যথাযথ করতে হবে।

সূত্র: টেক টাইমস, টেকনোলজি নেটওয়ার্ক

আরও পড়ুন