আচ্ছা, বিড়াল তোমার কেমন লাগে? মানুষের বন্ধু হিসেবে এ বিড়ালের অবস্থান দ্বিতীয়। পৃথিবীজুড়ে প্রায় সাড়ে ৩৭ কোটি মানুষ বিড়াল পোষে। তুলতুলে এই প্রাণী একদিকে যেমন দেখতে ভীষণ আদুরে, তেমনি অলস। আবার যেমন আবেগপ্রবণ, তেমনি দুষ্টামিতেও পাকা। নানা মুখভঙ্গি তৈরি করতে পারে ওরা। এমনকি মুখের মাংসপেশি এমনভাবে নাড়াতে পারে যে দেখে মনে হয় হাসছে। বিড়ালের মিম বা ভিডিওতে বিষয়টা হরহামেশাই দেখা যায়। প্রশ্ন হলো, আসলেই কি আমাদের মতো ওরা আনন্দে হাসে? বিজ্ঞান বলছে, একদমই না। বিড়ালের হাসি (মানে হাসির মতো মুখের ভঙ্গি) আসলে অন্য ঘটনা।
কিছু গন্ধ, বিশেষ করে মূত্রের মতো ফেরোমোনসমৃদ্ধ ঝাঁজালো গন্ধ পেলে বিড়ালের দেহে ফ্লেহমান রেসপন্স তৈরি হয়। ওদের মুখের ওপরের তালুতে থাকে জ্যাকসন অঙ্গ বা ভোমেরোনাসাল অর্গান। এর কাজ গন্ধ শনাক্ত ও বিশ্লেষণ করা। গন্ধের কারণে এ অংশটি তীব্রভাবে উদ্দীপ্ত হয়। ফলাফল হিসেবে বেঁকে যায় ঠোঁট, চোখ ছোট হয় এবং মাথা হেলে পড়ে। দেখে মনে হয় বিড়াল হাসছে। আবার অনেক সময় আক্রমণাত্মক হলে হাস্যকরভাবে বিড়ালের দাঁত বেরিয়ে পড়ে। দেখে মনে হয় দাঁত বের করে হাসছে। আসলে ঘটনা তো ভিন্ন। বিড়ালের এমন মুখভঙ্গির সঙ্গে হাসি বা আনন্দের কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে কি বিড়াল আনন্দে থাকে না? অবশ্যই থাকে। তবে তখন আমাদের মতো হাসে না। যখন দেখবে, ওরা মৃদু গর গর করছে, কাছে এসে শরীরে মাথা ঘষছে, ধীরে ধীরে চোখের পলক ফেলছে, লেজ নাড়ছে, তখন ধরে নিতে পারো আনন্দে আছে। কোনো কিছু নিয়ে খুশি আছে।
সূত্র: সায়েন্স ফোকাস, ওয়ার্ল্ড অ্যানিমেল ফাউন্ডেশন